
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেছেন, “চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতাল কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পত্তি নয়, এটি হাজারো রোগীর জীবন রক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা কারও ষড়যন্ত্রে এই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস হতে দেব না।”
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নগরীর জামালখান সিনিয়র্স ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে সমিতির আজীবন সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সাংবাদিক ও বিভিন্ন ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী অভিযোগ করেন, ২০২৪-২০২৮ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত বৈধ কমিটি বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে। এই অবস্থায় একটি কুচক্রী মহল ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে অবৈধ অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে, যা কোনোভাবেই আইনসঙ্গত নয়। তিনি বলেন, “এই কমিটি কোনো সাধারণ সভা আহ্বান করার ক্ষমতা রাখে না। অথচ তারা আগামী ২০ আগস্ট সভা ডাকছে। আমরা এই সভাকে বেআইনি ঘোষণা করছি এবং বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
নিজেকে ঘিরে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে হাসপাতালের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর। আমি কখনো এই প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ গ্রহণ করিনি। বরং হাসপাতালের উন্নয়নে ব্যয় করেছি এবং সবসময় রোগীদের কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়েছি।” তিনি অভিযোগ করেন, কিছু বেতনভুক্ত কর্মকর্তা ও একজন দুর্নীতিগ্রস্ত নারী ব্যক্তিগত স্বার্থে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী সরকারের কাছে তিন দফা দাবি জানান—
১. অবিলম্বে অবৈধ অ্যাডহক কমিটি বাতিল করতে হবে।
২. নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত বৈধ কমিটির হাতে দায়িত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।
৩. হাসপাতালবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কলম ও প্রচারের মাধ্যমে সত্যকে জনগণের সামনে তুলে ধরুন। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালকে রক্ষা করা মানে হাজারো রোগীর জীবন রক্ষা করা।”
সংবাদ সম্মেলনে কার্যনির্বাহী কমিটির সহসভাপতি শাহাজাদা এনায়েত উল্লাহ মো. আলী খান, সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. জাবেদ আবছার চৌধুরী, সহসভাপতি ডা. মো. সানাউল্লাহ, যুগ্ম সম্পাদক ডা. পারভেজ ইকবাল শরীফ, সদস্য শহীদুল আলম শহীদুল্লাহ, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, এডভোকেট কানিজ কাউসার লিমা, জীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক মঈনউদ্দীন কাদেরী শওকতসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সহসভাপতি শাহাজাদা এনায়েত উল্লাহ মো. আলী খান বলেন, “সাংবাদিকরাই সমাজের দর্পণ। সত্য প্রকাশের মাধ্যমে সংকট নিরসনের পথ সুগম হবে।”
ডা. সানাউল্লাহ অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “ডায়াবেটিক হাসপাতাল কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি হাজারো রোগীর আশ্রয়স্থল। অপপ্রচার বা ষড়যন্ত্রে আমরা এটিকে ধ্বংস হতে দেব না।”
ইঞ্জি. মো. জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন, “হাসপাতালকে আগের মতো রোগীবান্ধব ও সেবামুখী রাখতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”