মাহমুদুল হক আনসারী
দেশে লাখ লাখ শিক্ষিত মেধাবী বেকার। উচ্চশিক্ষিত এই মেধাবি সন্তান জাতির অহংকার। তারা সফলভাবে শিক্ষার সবগুলো স্তর পার করে সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি অর্জন করে বেকার জীবনযাপন করছে। তাদের পেছনে পরিবার , সমাজ , রাষ্ট্র প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে । অসংখ্য পরিবার আছে যারা সন্তানকে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষ করতে গিয়ে সামান্যতম সন্চয় জমি জমা পর্যন্ত বিক্রি করেছে ।
গাঁ গ্রামের অসংখ্য পরিবার যারা সন্তানের পেছনে শিক্ষার জন্য সবকিছু উজাড় করে খরচ করেছে । সেটিকে তারা বিনিয়োগ হিসেবে দেখেছে । সন্তান পড়ালেখা শিখে বড় হবে , চাকরি করবে, রোজগার করবে , নিজে এবং পরিবারের পাশে দাড়াবে। সমাজ রাষ্ট্রকে সেবা দিবে । সাবলম্বি করবে পরিবার সমাজকে। বর্তমানে লেখা পড়ার খরচ প্রচুর । অর্থ যার কাছে আছে পড়ালেখা তার জন্য । লাখ লাখ টাকা খরচ করে সন্তানের পেছনে অভিভাবক তাকিয়ে থাকে ছেলে কখন একটি চাকরি পাবে। অনেক আশা নিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন দেখতে চায়।
দূর্ভাগ্যজনক হল্ওে সত্য , বাংলাদেশে একটি সরকারি চাকরি প্ওায়া সোনার হরিণ। একটি চাকরি প্ওায়ার জন্য কয়েক হাজার জনের আবেদন জমা পড়ে। সেখানে মামা ভাগিনার সম্পর্ক , মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন , রাজনৈতিক পরিচয় , দলীয় পদ পদবির নানা মূখী প্রেসারে হতভাগা দরিদ্র মধ্যবিত্ত পরিবারের মেধাবি যুবকরা দাড়াতে পারে না। অর্থ আর রাজনৈতিক পরিচয়ে স্বাধিন বাংলাদেশে এই পর্যন্ত সরকারি চাকরির নিয়োগ বাণিজ্য এভাবেই দেখতে হয়েছে। এই সব ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে কথা বলার পরিবেশ ছিল না ।
ঘুষের টাকায় চাকরি । অযোগ্য দূর্বল রাজনৈতিক দলীয় বিবেচনায় চাকরি পেয়েছে লাখ লাখ দলীয় লোকজন । অন্তত পক্ষে বর্তমান অন্তর্বর্তিকালীন নিরপেক্ষ সরকারকে বলবো এই সময়ে হল্ওে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে খালি পদগুলো নিরপেক্ষ মেধাবি শিক্ষিত যুবকদের নিয়োগ দিন্। খালি পদ গুলো বিশেষ বিবেচনায় পূরন করুন । আইন শৃঙ্খলা বাহিনি , সেনা, নৌ, বিমান , বিড়িআর সহ রাষ্ট্রিয় সমস্ত খালি পদ গুলো মেধার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সমস্ত এলাকা থেকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হোক । রেল সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অসংখ্য পদ খালি পড়ে আছে । এই সমস্ত খালি পদ গুলোর তথ্য সংগ্রহ করে আন্ত মন্ত্রণালয়ের বৈঠক করে এক যুগে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করুন । পদ গুলো খালি থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তর কাজের ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে ।
অনেক গুলো সরকারি দপ্তর জেলা উপজেলায় কাজ করছে লোক বল সংকটে । এই সময়ে পরিচ্ছন্ন পদ্ধতিতে আপনাদের মাধ্যমে নিয়োগের ব্যবস্থা নিলে নানা ভাবে মেধাবি শিক্ষিত যুব সমাজ কর্ম সংস্থান পাবে। সন্তান, পরিবার, সমাজে সাবলম্বি ফিরে আসবে। হতাশা , মাদক, অস্থির পরিবেশ থেকে মুক্তি পাবে। দেশ ্ও জাতি উপকৃত হবে ।
বিশেষ ভাবে কোনো গোষ্টিকে কোনো প্রকারের চল চাতুরির সুযোগ দেয়া থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কোনো সড়যন্ত্রের কাছে পা ফেলা যাবে না। খুব পরিচ্ছন্ন সতর্কতা তিকèতার মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে চলতে হবে। বিগত সময়ের অবহেলিত বিভিন্ন সেক্টরে যারা দির্ঘদিন পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা দিচ্ছে তাদের ব্যাপার্ওে আপনাদের একটি মানবিক স্বিদ্ধান্ত আসা উচিত। কারণ আমার জানা মতে তার্ওা সরকারি নিয়ম নিতি মেনে পরিক্ষা দিয়ে সেই জায়গাতে নিয়োগ পেয়েছে। এখন তাদের চাকরি রিগুলার এবং নিয়ম মোতাবেক বেতন ভাতা বাস্তবায়ন হবে না , সেট্ওি তাদের উপর এক প্রকার অত্যাচার এবং বৈষম্য।
জাতি বৈষম্যহীন সমাজ চায়। রাষ্ট্রের সবগুলো সেক্টরে বৈষম্যহীন ভোগান্তি হীন দূর্নিতি ঘুষ দলীয় করণ বন্ধ করে পরিচ্ছন্ন একটি আদর্শ সমাজ দেখতে চায় এই প্রজন্ম। অনিয়ম দূর্নিতি সমস্ত অপরাধ প্রশাসন থেকে পরিষ্কার করতে হবে। দূর্নিতির সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের একে বারে বর্ডারে পাঠিয়ে শাস্তি দিতে হবে। যাদের বয়স অবসরে যাওয়ার কাছাকাছি পর্যায়ে পৌছেছে তাদেরকে অবসরে দিয়ে সেই জায়গায় মেধাবি কর্মঠ যুবকদের নিয়োগ দিন ।
দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনিতে দেশ প্রেমিক যুবকদের নিয়োগ দেয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারেন। দীর্ঘ সময় ধরে কতিপয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনিকে নিজস্ব চিন্তা ও কর্মকান্ডে ব্যবহার করেছে। সময় হয়েছে এখন সেই জায়গায় পরিচ্ছন্ন অভিযান চালিয়ে একটি দেশ প্রেমিক বাহিনি তৈরি করা । বর্তমান সময় দেশ জাতি এবং এই সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ন একটি সময় । এই সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে ভূল করলে অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।
তাই আসুন সময়কে কাজে লাগিয়ে অপচয় না করে সঠিক সময়ে বাস্তব সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে খালি থাকা পদ গুলো মেধা যোগ্যতা ওবৈষম্যহীন নিয়োগ প্রত্যাশা করছে জাতি। লেখক মাহমুুদুল হক আনসারীসংগঠক,গবেষক,কলামিষ্ট