নিষিদ্ধকালে আখতারুজ্জামান বাবুর অবদান স্বরণীয় হয়ে থাকবে
                    
					
					
				 	
					
					
					 
                        
                            
                            
                                
                                    
										
										
																			
								পূর্ব বাংলা ডেস্ক								
																
								
								
                                    
                                    
                                        
                                            -    
											প্রকাশিত সময়ঃ 
																						মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪											
												
																																			
 
											
												
												
												
							
											-  
											 
																																			৩২৬																				   
																						বার পড়া হয়েছে  
											
 
												
												 
										 									
				
                                        
                                                                      
                                 
                             
                         
                     
					
					
						
					
					
                    
                         
						
							
							 
                     
                    
                         ছাবের আহমদ চৌধুরী
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর বিয়োগান্ত ঘটনার পর জাতির পিতা সর্ম্পকে কথা বলা নিষিদ্ধ ছিল। ওই সময় তার নাম উচ্চারণ যেন ছিল এক ভয়ঙ্কর অপরাধ। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর চট্টগ্রামের সাহসী যুবনেতা মৌলভী সৈয়দ আহমদ চৌধুরী ও বগুড়ার যুবনেতা আবদুল খালেক খসরু জীবন বাজি রেখে প্রতিবাদ করেছিল বিধায় তাদেরকে জিয়া সরকার প্রকাশ্যে হত্যা করে লাশগুলি গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সেই নিষিদ্ধ সময়ে ১৯৭৮সালের ৭ই মার্চ চট্টগ্রামে আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাবুর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ মাইক দিয়ে প্রচার করা হয়, তখন থাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্থুত হয়। কিন্তু আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু তার সহকর্মীদের নিয়ে জেল জুলুম ও গ্রেফতারকে পরোয়া না করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পুরোটা প্রচার করতে সক্ষম হন। যা চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা দৈনিক আজাদীতে ১৯৭৮ সালে ৮ই মার্চে প্রকাশিত হয়।যা লেখক সৈয়দ বোরহান কবীরের ২০ মার্চ ২০২১সালে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা হতে সংগ্রহ করা হয়।
১৯৭৫সালের পরে মুজিব হত্যার প্রতিবাদে লিফলেট বিলি করতে গিয়ে গহিরার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউছুপ, শিলাইগাড়ার সাংবাদিক জামাল উদ্দীন ও আনোয়ারার প্রণব চক্রবর্তী কলেজের পুকুরের পশ্চিমপাড় হতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বৈরাগের আবুল মনছুর চৌধুরী, পরৈকোড়ার শ্যামল সেন, মাহাতার ইদ্রিস অনেকে গ্রেফতার হন।
১৯৭৯ সালে আমি যখন দশম শ্রেণীর ছাত্র থাকা কালীন আমার বাবার সাথে ওষখাইন থেকে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছত্তার হাটে নির্বাচনী প্রচারনায় এসেছিলাম। আমাদের সাথে তখন মামুর খাইনের আলী মিয়া, তোরাব উদ্দীন, তাতুয়ার আবুল খায়ের মেম্বার, শিলালিয়ার অজিত সিকদার, ওষখাইনের আহমদ মাষ্টার, মোতাহের মিয়া, বজল আহমদ, আব্দুল আলিম মাষ্টার, কাজী জহির আহমদ, ছাত্রনেতা জালাম উদ্দীন চৌধুরী ও কাজী আবদুল্লাহ্ সহ অনেকে। ওখানে এসে দেখি আখতারুজ্জামান বাবুকে বিএনপি কর্মীরা ইট পাটকেল মারছে ।সেই মুহুর্তে ভিংরুলের রাজা মিয়া, দুধুমিয়া, ইসহাক মিয়া, আবুল হাসেম, নুরুল হক সওদাগর, দেওতলার আবদুল ছত্তার, পাটনীকোঠার সুধীর ভট্টাচার্য, মাহাতার কাশেম মেম্বার, চেনামতির বনবিহারী বডুয়া, তালশরার ছালে আহমদ, কৈইখাইনের মো: ইউসুফ, তাহের মিয়া, ছাত্রনেতা মফজল আহমদ, মানবঢাল তৈয়ার করে আখতারুজ্জামান বাবুকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দিয়েছিলেন ।সে কথা আজকে কেউ জানে বলে আমার মনে হয় না। আমি যখন কলেজে পড়াকালীন সময়ে পরৈকোড়া হাই স্কুল ও মাহাতা পাটনীকোঠা হাই স্কুলে ছাত্রলীগের দুইটি কমিটি করে দিই। তখন থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল কাজী মোজ্জাম্মেল হক সাধারণ সম্পাদক ছিল কল্যাণ ভট্টাচার্য্য ।আমি ওই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলাম। তখনকার ওই ছাত্রলীগের কমিটির কর্মীদের কারণে ১৯৮৬সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাবু ভাই একছত্র ভোট পাওয়ার সুযোগ হয়। ১৯৭৯ সালের আমাদের ওষখাইন সেন্টারে ১৫০ ভোট পেয়েছিল, ১৯৮১সালে ড. কামাল হোসেনের রাষ্টপতি ভোট এর সময় ভোট কেন্দ্রে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের বেশি মারামারি হয়ে ভোট কেন্দ্রে দখল করে নেয় বিএনপি । তখন আমরা নৌকা প্রতীকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভোট পায়নি।
১৯৮৯সালে আনোয়ারা কলেজ ছাত্রলীগের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (দিদার-ফরিদ-নাজিম) পরিষদের পক্ষে পরৈকোড়া, পূর্ব কন্যারা, বাথুয়া পাড়া ও চেনামতি থেকে বাস ও জীপ যোগে ভোটার নিয়ে আনোয়ারা যাওয়ার সময় ছত্তার হাট বোর্ডের উত্তর পাশে মাহাতা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আখতার উদ্দীন কালুর মোটরবাইকে ছিলাম আমি। তখন ওখানে গুজরার সরফরাজ খান ও পটিয়ার শামশুল আলম মাষ্টারের নেতৃত্বে স্বশস্ত্র বাহিনী দা, কিরিছ, লোহার রড দিয়ে প্রথমে কালু ভাইকে আঘাত করে এবং আমাকে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে জাতীয় পার্টি ও ছাত্রদলের ১০/১৫ জনের মত লোক দা, কিরিছ, লোহার রড ও বন্দুক দিয়ে গুলি করে রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে ফেলে যায়। যখন আমাকে আঘাত করছিল সে সময় ভিংরোল গ্রামের ২জন ছাত্রলীগের কর্মী ছালাম ও রহিম উপস্থিত ছিল ওরা কান্নাকাটি করছে কিন্তু সাহস করে প্রতিবাদ করতে পারেনি। আমাকে মুমুর্ষ অবস্থায় মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানতে পারি আবুল কালাম চৌধুরীকে বিএনপির কর্মীরা হামলা করে পুকুরে ফেলে দেয় ।আবুল মনছুর চৌধুরীকে বিএনপির কর্মীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ছত্তার হাটের দক্ষিণ মাথায় তাড়া করে নিয়ে যায় কিন্তু সেই দিন হাসেম মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া ছাড়া আওয়ামীলীগের কোনো বাড়ি ছিল না। সেই দিন আনোয়ারা সদরে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির কর্মীরা শামশু উদ্দীন আহমদ চৌধুরীকে মেরে ২টা হাত ভেঙ্গে দেয়। শামশু ভাই তিন মাস ভাঙ্গা হাত নিয়ে কষ্ট পেয়েছিল। সেই দুর্দিনে বাবু ভাই অনেক চেষ্টা করেও প্রশাসন কন্ট্রোল করতে পারেনি । তখন ছাত্রলীগের ছাত্র সংসদে আমরা পরাজিত হই।
১৯৯১সালে সংসদ নির্বাচনের সময় বাবু ভাই নির্বাচনী প্রচারণা করে ওষখাইন থেকে চলে আসার সময় মামুরখাইন পুকুরের উত্তর পাশে বিএনপির কর্মীরা বাবু ভাইকে অনেকক্ষণ গাড়ী আটকিয়ে রাখে পরে খবর পেয়ে আমার ওষখাইন থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা দৌঁড়ে গিয়ে দাওয়া করি। আটকানোর কথাটা জানতে চাইলে বাবু ভাই বলে ১৯৮৬ সালে নির্বাচনের সময় আমি মামুরখাইন রাস্তাটা করে দেওয়ার জন্য ওয়াদা দিয়েছিলাম কিন্তু কেন করি না সেই জন্য তারা আমাকে দাড়ঁ করিয়ে প্রতিবাদ করছে। কিন্তু দু:খের বিষয় দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকার পরও মামুরখাইন রাস্তায় আজ পর্যন্ত একটা ইটও মাটি পড়েনি কিন্তু সেটা আমাদের এলাকার জন্য অন্ত্যন্ত লজ্জাজনক বিষয়।
আওয়ামীলীগের দুর্দিনে যারা আওয়ামীলীগকে নির্যাতন করছে সেই সব ব্যক্তিরা ১৯৯৬ সালের পর থেকে বিভিন্ন কলাকৌশলে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে কিন্তু বর্তমানে ওই সকল ব্যক্তিরা সংগঠনের মূল নেতা হিসেবে স্বীকৃত প্রাপ্ত হয়। বাবু ভাই জীবিত থাকা কালীন সময়ে কোন দুর্নীতি বাজ, ও চাটুকারেরা আওয়ামী লীগে স্থান পায়নি । গত পরৈকোড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে জোরালো ভাবে প্রচার প্রচারানা চালায় যা পত্রপত্রিকায়ও প্রচার হয়েছিল।ওই সময় আমাদের ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের লোকজন তেমন নৌকার পক্ষে কাজ করতে দেখিনি। নির্বাচনে জয় লাভ করার পর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল আমাকে বলে যে আমরা মন্ত্রী মহোদয়কে ফুল দেওয়ার জন্য যাবো। আমি যেতে চাইনি  ওরা যখন বলছে আমি তাদের সাথে গিয়ে ফুল দিলাম কিন্তু দুঃখের বিষয় মন্ত্রী মহোদয়কে সালাম দেওয়ার পরও একবারও কথা বললো না। কেনো বললো না আমার আজও বোধগম্য হচ্ছে না। কারণ আখতারুজ্জমান চৌধুরী বাবু নির্ষিদ্ধ দিনে যেভাবে জীবন বাজি রেখে সংগঠনের জন্য ঝুকিঁ নিয়ে আনোয়ারা আওয়ামীলীগের তৃনমূল রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তা আজকের প্রজম্মের কয়জনেও বা জানে। আমি ১৯৮৭ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে চাতরী হাইস্কুল মাঠে আনোয়ারা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই। যা ‘৮৭সালের ১লা মার্চ বহুল আলোচিত দৈনিক আজাদী পত্রিকায় ছাপানো হয়। আমরা ১৯৮৮ সালে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে বাসে করে সমাবেশে যাওয়ার সময় কুমিল্লায় আমাদের বাসের সাথে ট্রাকের সংঘর্ষে বরুমছড়ার এয়ার মোহাম্মদ নামে একজন যুবলীগ কর্মী নিহত হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই পরিবারের খবর কেউ রাখছে বলে আমার মনে হয় না। আমি ২০০৩সালে থেকে ২০১২সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ (নানক-আজম) কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ছিলাম। বর্তমান প্রজন্মকে বাবু ভাইয়ের নিষিদ্ধ দিনের কর্মকান্ডগুলো চর্চা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। লেখকঃ সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক দেশের কথা, চট্টগ্রাম।
                     
					
					
						 					
					
					
					 
			 				   				   
				   	
				
					   					 
			 				
				
					
									
                    
                       এই বিভাগের আরও খবর