
আমজাদ হোসেন আনোয়ারা থেকে
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করতে এগিয়ে এসেছে সুন্নিপন্থি সুফিবাদী রাজনৈতিক দল ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ। আগামী ২ অক্টোবর আনোয়ারায় কর্মী সমাবেশের মাধ্যমে দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবে। সমমনা আরও তিনটি দলকে সঙ্গে নিয়ে জোটবদ্ধভাবে লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
দলের স্থানীয় রাজনীতিতে অবস্থান নতুন নয়। গত চার দশক ধরে তারা সাংগঠনিকভাবে শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। দুই উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ১৪৪টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন এবং মাজার, খানকা ও দরগাহ কেন্দ্রিক জনসমর্থন দলটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। নেতারা বলছেন, সুন্নিপন্থি সুফিবাদী দর্শনের প্রতি সাধারণ মানুষের ভালোবাসাই তাদের মূল শক্তি।
এবারের নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট এককভাবে নয়, জোট গড়েছে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং মাইজভান্ডারের পীর সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদের সুপ্রিম পার্টির সঙ্গে। একই আদর্শের অনুসারী অরাজনৈতিক সংগঠন আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতও তাদের কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঐক্যবদ্ধ শক্তি স্থানীয় নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
দলটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এস এম শাহজাহান বলেন, “সুন্নিপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি ঐক্যবদ্ধ। প্রার্থী কে হবেন সেটা বড় বিষয় নয়, বরং ঐক্য ধরে বিজয় ছিনিয়ে আনা আমাদের মূল লক্ষ্য।”
১৯৯১ সাল থেকে ইসলামী ফ্রন্ট এই আসনে ছয়বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। যদিও এখন পর্যন্ত জয় অধরা, তবে প্রতিবারই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পেয়েছে। এবার জোটগত ঐক্যের কারণে ফলাফল আরও ভালো হওয়ার প্রত্যাশা করছে নেতাকর্মীরা।
চট্টগ্রাম-১৩ আসনের প্রচলিত দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে সুফিবাদী জনসমর্থন ও দরগাহকেন্দ্রিক প্রভাব ইসলামী ফ্রন্টকে ‘কিংমেকার’ হওয়ার সুযোগ দিতে পারে। ২ অক্টোবরের কর্মী সমাবেশকে কেন্দ্র করে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী এলাকায় ইতোমধ্যেই ব্যানার, পোস্টার ও প্রচারণা সামগ্রী দেখা যাচ্ছে।
দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক শক্তি, সুফিবাদী জনসমর্থন ও জোটগত ঐক্যের ওপর ভর করে ইসলামী ফ্রন্ট এবার নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে প্রচলিত দুই দলের জন্য। ফলাফল যাই হোক না কেন, এ আসনের নির্বাচনী রাজনীতিতে ইসলামী ফ্রন্টের প্রভাব অপরিসীম।