1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. jashad1989@gmail.com : Web Editor : Web Editor
  3. admin@purbobangla.net : purbabangla :
দেশের রাজনীতিতে গুমোট ভাব আসলে কী হচ্ছে, কার লাভ? - পূর্ব বাংলা
রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

দেশের রাজনীতিতে গুমোট ভাব আসলে কী হচ্ছে, কার লাভ?

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

দেশের রাজনীতিতে একটা গুমোট ভাব বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন হবে। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলছেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, যারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিল, তারাই আবার নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এরপর সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায় না জামায়াত ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তারা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যার বিচারসহ কিছু দাবিতে রাজধানী, জেলা ও উপজেলা তিন ধাপের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

এই আন্দোলনে থাকার কথা ছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ ও এবি পার্টির। তবে যুগপৎ আন্দোলন থেকে আপাতত নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে তারা।

ইসলামী দলগুলোর এই আন্দোলনকেও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের তরফে দেখা হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে। হেফাজতের আমির আশঙ্কা করেছেন, জামায়াত ক্ষমতা পেলে কওমী, সুন্নাত ও দেওবন্দ ঘরানার ইসলামী শিক্ষা বন্ধ করে দিতে পারে।

হঠাৎ করে কেন আবার নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের গন্ধ? কারা করছে সেই ষড়যন্ত্র? নির্বাচনের বিকল্প নেই- এমন কথা আসছে কেন? কোনো পক্ষ কি তাহলে নির্বাচনের বিকল্প কিছু ভাবছে?

এই ভাবনা আরো উস্কে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি, প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক সাক্ষাৎ।

যদি নির্বাচনের বিকল্প কারো ভাবনায় থেকেও থাকে, তাহলে কী হতে পারে সেই বিকল্প? রাজনীতিবিদদের একান্তে প্রশ্ন করলে তাদের কাছে এর সরাসরি কোনো জবাব মেলে না।

এই মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে ইসলামী দলগুলোর আন্দোলন। একে ভিন্ন রকম বিশ্লেষণ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিল বিএনপি। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত- এমন কথা বলেছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচারের আগে নির্বাচনে রাজি ছিল না জামায়াতে ইসলামী। সংবিধানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়- এমন বলেছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

শেষ পর্যন্ত লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পরই ঘোষণা হয়েছে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন।

তবে জামায়াতে ইসলামীর দাবি, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন দিতে হবে। এই প্রয়োজনীয় সংস্কারের ধরন নিয়ে কখনো সুস্পষ্ট কিছু বলেনি দলটি।

মাঠের রাজনীতিতে বিএনপির শক্তির কাছে জামায়াতে ইসলামী ছোট দল। একা এই দলটির নির্বাচন ঠেকিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই এবার সমমনা আরো কয়েকটি দলকে তারা সাথে নিয়েছে। তাদের যুগপৎ আন্দোলনে হয়তো দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। আর তাতে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনিশ্চিত হওয়ার আশঙ্কা।

এরই মধ্যে নিজেদের শক্তি সম্পর্কে খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে বিএনপি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদলের চরম ভরাডুবি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রায় একই রকম ফলাফল হতে চলেছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাট ধাক্কা খাওয়ার পর যখন হতচকিত বিএনপি, ঠিক এই সময়ে সমমনাদের নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর যুগপৎ আন্দোলনের উদ্দেশ্য কী? বিএনপিকে চাপে রাখা? নাকি নিজেদের দাবি মেনে নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকে বাধ্য করা? নাকি পুরো নির্বাচনই পিছিয়ে দেয়া?

এদিকে জাতীয় সংসদের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে বাগেরহাট, ফরিদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্দোলন চলছে।

নানা রকম আন্দোলনে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে নির্বাচন পেছানো ছাড়া উপায় থাকবে না সরকারের। এমনটাই বলছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

নির্বাচন পেছালে কার লাভ? জামায়াতে ইসলামীর কথা আসছে সবার আগে। কারণ নির্বাচন পেছালে এই সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচারের রায় হওয়ার সম্ভাবনা। আবার নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকায় ভোট বাড়াতে আরও বেশি সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে।

আর অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে যদি ভিন্ন রকম কোনো সরকার আসে, তাহলে আওয়ামী লীগের মতোই মাঠ থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে বিএনপি। সেই সমীকরণেও এগিয়ে থাকবে জামায়াতে ইসলামী।

শেয়ার করুন-
এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2021 purbobangla