রানা সাত্তার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং আহত প্রায় চার শতাধিক মানুষ।এটাই চট্টগ্রামের ইতিহাসে ভীতি ও ক্ষতিকর ভয়াবহ দুর্ঘটনা।নিহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন ৯ জন, আহত ১৫জন। তবে নিহত সবার পরিচয় জানা যায়নি। দগ্ধ ও আহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। অনেকের এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।নিখোঁজ রয়েছে অহরহ।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগে।গত ২৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন। সেখানে একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরিত হচ্ছিলো দাউ দাউ করে জ্বলছিলো আগুনের লেলিহান শিখা। রোববার সকাল ১০টায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে দেখা গেছে, আগুন নেভানোর কাজ করছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর মোট ২৫টি ইউনিটের কর্মীরা।রিপোর্টটি লিখাব্দি আগুন জ্বলছিল।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, কনটেইনারে রাসায়নিকের পরিচয় এখনো অজানা, নেভানো যাচ্ছে না আগুন। অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষ কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা এক ফায়ার ফাইটার বলেন, শনিবার রাত থেকে টানা কাজ করছি। কোনোভাবেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে পাইপ নিয়ে কনটেইনারের কাছে গিয়ে আমরা পানি ছিটানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে কাছ থেকে পানি দিতে গেলে বিস্ফোরণে ফায়ার ফাইটাররাও হতাহত হয়েছেন। আমাদের কয়েকজন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ডিপোর মালিকপক্ষকে পাওয়া যাচ্ছে না। জানা যাচ্ছে না কোন কনটেইনারে কী রাসায়নিক আছে।যথাযথ তথ্য পেলে আমাদের কাজ করতে সহজ হতো।
আহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নগরীর অন্যান্য হাসপাতাল এবং কম্বাইন্ড মিলিটারি হাসপাতালেও (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জরুরি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ সময় বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোয় কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ডিপোতে এ সময় প্রায় ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল। সেখানে থাকা দাহ্য পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। শনিবার দিবাগত রাতে বাতাসের কারণে আগুন বাড়তে থাকে। ডিপো এলাকায় রয়েছে পানি স্বল্পতা।