1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির জন্য ইস্তাহার নামাজ আদায় শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যে ভোটের যুদ্ধ সন্দ্বীপে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার  চট্টগ্রামে র‌্যাবের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৪ চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধ গাড়ির অরাজকতা বন্ধ করতে আবারো বিআরটিএ’র অভিযান আমি আজ কথা দিচ্ছি  আপনাদের একা রেখে পালিয়ে যাব না, সুখে দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব, আমি আপনাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই- ওয়াসিকা

চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ আনোয়ারাবাসীর কাছে স্বরণীয় হয়ে থাকবে

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে


চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ এর ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ২৬ শে মার্চ।  আনোয়ারার লোক এখনো তাকে স্মরণ করে।নিত্যপ্রিয় দাশ একজন সহজ,সরল মানুষ ছিলেন, যে কেউ কোন কাজে সহযোগিতা চাইলে তিনি সহযোগিতা করতেন । তাঁর লোভলালসা কিছুই ছিল না। চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ এর জন্ম ১৯৩৪ সালে আনোয়ারা থানার বোঁয়ালগাঁও গ্রামে। তাঁর মৃত্যু হয় ২৬শে মার্চ ২০০০সালে কলিকাতার একটি হাসপাতালে ৬৬ বছর বয়সে।

নিত্য চেয়ারম্যান এর বাবার নাম ছিল গৌড়চন্দ্র দাশ ও মাতার নাম ছিল সাবিত্রী রাণী দাশ। গৌড়চন্দ্র দাশের ৪ সন্তান। যথাক্রমে, মুক্তিযোদ্ধা সুরঞ্জন দাশ, নিরঞ্জন দাশ, কিরঞ্জন দাশ, নিত্যপ্রিয় দাশ।

চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ ছিল সবার ছোট, তাই মা-বাবা তাকে বেশি স্নেহ করত। সাদাসিধে নির অহংকার প্রকৃতির লোকটি মানুষের মঙ্গলার্থে কিছু করার জন্য ছিল নিবেদিত প্রাণ। জনকল্যাণমূলক যে কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তিনি ছিলেন নাছোড়বান্দা।আনোয়ারা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হলেও উপজেলা পরিষদের সভায় অন্যন্যা ইউনিয়নের সমস্যা সমাধানেও তিনি ছিলেন সোচ্চার। ক্ষুদ্র এ মানব জীবনে আপনজনকে হারানোর বেদনায় সকলে ব্যথাতূর হয়ে উঠে। কলকাতা থেকে যেদিন তাঁর মরদেহ আনোয়ারায় আনা হল, সেদিন সেখানে মনে হল যেন শোকার্ত মানুষের বন্যা ডেকেছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের প্রাণের চেয়েও আপনজনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়, তাদের অশ্রুসিক্ত ভালোবাসায় তাঁকে অভিষিক্ত করে। ১৯৬৯ সালে সারাদেশ আয়ুববিরোধী আন্দোলনে উত্তাল। সেই সময়ে ছাত্র লীগের নেতাদের পাঠিয়ে বিভিন্ন স্কুলে সভা সমাবেশ করার জন্য সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় সিংহরা স্কুলের মাঠে এক নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। উপমহাদেশখ্যাত নারীনেত্রী কুন্দপ্রভা সেনগুপ্তা সেই জনসভার প্রধান অতিথি ছিলেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতাউর রহমান খান কায়সার ও আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ওই জনসভায় বক্তৃতা করেছিলেন। সেই অনুষ্ঠান পরিচালনা করে ছিলেন চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ।

এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক। ১৯৯৭ সালের ৭ই মার্চ আনোয়ারা থানা সদরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দিবস উৎযাপন অনুষ্ঠান চলছিল। ঐ ভাষণ দিবস অনুষ্ঠানে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে সভা পন্ড করে দেয়। সেই দিন সাহসী ভূমিকা নিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছিলেন চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ । উনি ঐদিন সাহস নিয়ে এগিয়ে না এলে, অনেক ছাত্রলীগ যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের কর্মী হতাহত হত। তার সেই সাহসী ভূমিকার কথা আমরা কোনদিন ভূলতে পারব না। জাতীয় জীবনে ১৫ই আগষ্টের কলংকজনক অধ্যায়ের পর তিনি নানাভাবে নির্যাতিত ও লাঞ্চিত হয়েছেন, সাহস ও ধৈর্যের সাথে সেই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। ২০০০ সালের ২৬শে মার্চ নিত্যপ্রিয় চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি ফিরিঙ্গিবাজার বাসায় যায়। ঐখানে গিয়ে দেখি আমাদের বর্ষিয়ান নেতা এম. ইদ্রিস বি.এম সাহেব, শামশুদ্দিন আহমদ চৌধুরী, আবুল মনসুর চৌধুরী, সাংবাদিক জামাল উদ্দিন, এডভোকেট হরিপদ চক্রবর্তী, তাপস হোড় সহ অনেকে বসে আছেন সেখানে । আমি যখন বললাম নিত্য বাবুর মরদেহ কলকাতা থেকে কখন নিয়ে আসবে, সেই মুহুর্তে একজন ছেলে আমাকে বলছে টেলিফোন করে কলকাতায় যোগাযোগ করতে হবে। আমি আপনাকে তো চিনলাম না। তখন সে বলল আমি নিত্য চেয়ারম্যানের বড় ভাই সুরঞ্জন দাশের ছেলে সন্তোষ দাশ। বর্তমানে আমার চাচা নিরঞ্জন দাশের ছেলে যীশু দাশ মরদেহ নিয়ে আমার চাচী শিল্পী রানী দাশ সহ কলকাতায় অবস্থান করছে। তখন আমি বললাম টেলিফোন করার ব্যবস্থা আছে আমার সাথে কেউ একজন আসেন।তখন এডভোকেট হরিপদ চক্রবর্তী বলল,তুমি সন্তোশ দাশ সাথে নিয়ে যাও। তখন আমি শিল্পপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আযুব সাহেবের এ বি গ্রুপ অব ইন্ড্রাট্রিজের খাতুনগঞ্জ অফিসে যায়। তখন আয়ুব সাহেবকে বললাম নিত্য চেয়ারম্যান কলিকাতায় মৃত্যুবরণ করেছে আপনার অফিস থেকে টেলিফোন করে যোগাযোগ করতে হবে। তখন আয়ুব সাহেব বলল টেলিফোন নাম্বার দাও, ঐখান থেকে টেলিফোন করে কলিকাতায় যীশু দাশের সাথে আমি কথা বলি। তখন যীশু বলল, টাকার জন্য আমরা মরদেহ বাংলাদেশে আনতে পারছি না, আরেকটি সমস্যা নিত্য বাবুর স্ত্রী বাইরোডে আসছে, যদি আমরা বিমানে যায় তাহলে ওকে নেওয়া তো কষ্ট হয়ে যাবে। তখন আয়ুব সাহেব যীশু দাশের সাথে কথা বলল। আয়ুব সাহেব সাথে সাথে ইন্ডিয়ান এক ব্যবসায়ীকে টেলিফোন করে যীশু দাশের হাতে ১০,০০০/- (দশ হাজার) রুপি পোঁছিয়ে দেয়। তারপর যীশু বলল, আমাদের ইন্ডিয়ান দুতাবাসের সহযোগিতা লাগবে, না হলে আমরা মরদেহ নিয়ে বাংলাদেশে যেতে পারব না।আমি সাথে সাথে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সর্বজন শ্রদ্ধেয় আতাউর রাহমান খান কায়সার ভাইকে আয়ুব সাহেবের অফিস থেকে টেলিফোন করি। উনাকে চেয়ারম্যান নিত্যপ্রিয় দাশ এর মৃত্যুর খবর জানাই। সাথে সাথে কায়সার ভাই রাশিয়া থেকে ইন্ডিয়ার ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব হুমায়ন কবিরকে টেলিফোন করে বলে যে, আমার আনোয়ারার নিত্য চেয়ারম্যান কলিকাতায় মৃত্যুবরণ করেছে আপনি তাকে উনার ভাতিজা যীশু দাশের সাথে যোগাযোগ করে মরদেহটি বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। আপনাকে এই ব্যাপারে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করলাম। তখন যীশু দাশকে ইন্ডিয়ান হাই কমিশনার হুমায়ন কবিরের সাথে কায়সার ভাইয়ের কথা বলে দেখা করতে বললাম। সাথে সাথে যীশু দাশ হাই কমিশনার হুমায়ন কবিরের সাথে দেখা করল, তখন হুমায়ন কবির সাহেব জানতে চাইল, রাশিয়ার রাষ্টদূত আতাউর রহমান খান কায়সার সাহেব তোমার কি হয়। তখন যীশু বলল কায়সার চাচা আমাদের আত্মীয়। হুমায়ন কবির সাহেব বলল তোমরা তো হিন্দু কায়সার ভাই তো মুসলিম তোমাদের কেমনে আত্মীয় হয়। তখন যীশু দাশ বলল আমার চাচা আনোয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে পারিবারিক সর্ম্পক খুব গভীর বিধায় আমরা হিন্দু সম্পাদায় হলেও আত্মীয়ের চেয়েও বেশি পারিবারিক বন্ধন আছে, সে কারণে আমরা আত্মীয় বলছি। নিত্য চেয়ারম্যান এর ১ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে ২০০০সালের ২৬শে মার্চ ইহত্যাগ করে। ছেলে নাম রুবেল দাশ, ৪মেয়ে যথাক্রমে বাপ্পী দাশ, পম্পী দাশ, লাভলী দাশ, চুমকি দাশ ও স্ত্রী শিল্পী রানী দাশকে রেখে মৃত্যুবরন করেন। দীর্ঘ ২ যুগেরও বেশি সময় আনোয়ারা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৬৪ সালে ৩০বছর বয়সে নিত্যপ্রিয় দাশ প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। ১৯৯৭সালে বৃদ্ধ বয়সে পূনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, আনোয়ারা থানা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি, আনোয়ারা থানা কেন্ত্রীয় পূজা উদ্যাপন পরিষদের প্রতিষ্টাতা সভাপতি, আনোয়ারা শ্রী রামকৃষ্ণ সারদা সেবাশ্রম এর আজীবন সদস্য ছিলেন। ইন্ডিয়ান ডেপুটি হাই কমিশনার জনাব হুমায়ন করিব সাহেব পরে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন সফল কূটনিতিকবিদ ছিলেন। নিত্যপ্রিয় দাশ আনোয়ারার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে পদাধিকারবলে সদর জামে মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তিনি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী হলেও সদর মসজিদের উন্নয়ন মূলক কাজে ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিটি সভায় আগ্রহভরে উপস্থিত থাকতেন।
আমি তার আত্মার সৎগতি কামনা করি।
ছাবের আহমদ চৌধুরী
কর্মাশিয়াল ম্যানেজার
দি ডেইলি পিপলস্ ভিউ, চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla