1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে বন্দর দিবস উদযাপন তৎক্ষালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মরার কথা ছিলো, তত মানুষ মরে নাই স্মরণ সভায় ওয়াসিকা আবারও আসছে তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির জন্য ইস্তাহার নামাজ আদায় শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যে ভোটের যুদ্ধ

নিউজ করলে মামলার হুমকি ! পতেঙ্গায় সব অপরাধের আশ্রয় দাতা এসআই কাদের

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ২২১ বার পড়া হয়েছে

শাহিন আহমেদ ও শেখ শফি

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ঘিরে গড়ে উঠেছে স্থানীয় চাঁদাবাজদের একটি বিশাল চক্র । সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করেন এস আই কাদের । সৈকত এলাকায় পাঁচ শতাধিক দোকান বসিয়ে পুরো এলাকা দখল করে নিয়েছে ওরা ।এই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে লোকাল প্রশাসনের মাসিক মাশোয়ারা ২০ লাখ টাকার উপরে । প্রতিমাসে টুরিস্ট পুলিশের পকেটও হচ্ছে ভারী । এছাড়া এসব অবৈধ দোকান ঘিরে চলছে মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিনিয়ত চলে জাহাজ থেকে চোরাই তেলের রমরমা কারবার  শব্দবিহীন স্পিড বোট ব্যবহার করে ঢুকে পড়ছে মাদকের
বড় বড় চালান ।

সৈকতে হাটা চলার পথ দখল করে  ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি, বীচ বাইক, নাগর দোলা, সাম্পান ও চরকি বসিয়ে পর্যটদের চলা ফেরায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে এখানে । আবার এইগুলো থেকে বিপুল অংকের টাকা ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে চাঁদাবাজ, পতেঙ্গা থানার কতিপয় পুলিশ সদস্য ও টুরিস্ট পুলিশের মাঝে এমন অভিযোগ রয়েছে ।

সূত্রমতে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের খাত থেকে প্রতিমাসে পতেঙ্গা থানার এসআই কাদের ৪০ হাজার টাকা মাশোয়ারা নেন ।৮ টা বীচ বাইক থেকে প্রতিনিয়ত মাশোয়ারা সংগ্রহ করেন পতেঙ্গা ল্যাব মালিক সমিতির সেক্রেটারি ইকবাল । ইকবাল এর তত্ত্বাবধানে চলছে ৩ টা ঘোড়া গাড়ি ও ১৫ টা ঘোড়া। মাসে এই মাশোহারা থেকে বীচ বাইক প্রতি ৫ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা যায় এস আই কাদেরের পকেটে। পর্যটকদের বিনোদন দেওয়া এই বাহন ও ঘোড়া থেকে প্রতিনিয়ত পকেট ভারী হচ্ছে ইকবাল ও আরো বেশ কয়েকজনের ।

দেখা গেছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম বন্দরের কোলঘেঁষে গড়ে উঠায় শ’শ’  জাহাজের জাতায়াত ও অবস্থানকে পুঁজি হরে তেল চোরাকারবারী ও মাদক কারবারিদের বড় সিন্ডিকেট । যার নেতৃত্বে সোর্স মুছা, ওয়াহিদ চৌধুরী, নিজাম, হাসান, বাবুলসহ আরো কয়েকজন। গভীর রাতে ও দিনের বিভিন্ন সময়ে এই পথে চোরাই তেল নামলেও নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ।

অভিযোগ আছে পতেঙ্গা থানার এসআই কাদের মধ্যমে এখান থেকে প্রতিমাসে ৯০ হাজার টাকা থানায় যায়। চোরাই তেল ছাড়াও মাদক কারবারিরা নিরাপদ রুট এই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে ব্যবহার করে। সূত্র আরো বলছে, সোর্স মুছা, ওয়াহিদ চৌধুরী, নিজাম, হাসান, সোলাইমান বাবুলসহ আরো কয়েকজনের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন বিদেশি নামীদামী ব্রান্ডের হুইস্কি, ভিয়ারসহ মদের ৪ থেকে ৫ বক্স নামে সমুদ্র সৈকতের স্পিট বোর্ড ঘাঁট দিয়ে । একই সাথে ১৮ থেকে ২০ কার্টুন বিদেশি সিকেরেট আসে একই পথে । ইদানিং বড় বড় ইয়াবা কারবারিরা এই রুট ব্যবহার করছে। সম্প্রতি ৬ ফেব্রুয়ারী ২ লাখ পিস ইয়াবার একটি চালানও আটক করে ধন সৈকত এলাকা থেকে । অভিযোগ আছে টহল পুলিশের নাকের ডগায় এই চালানটি পাচার হলেও নিরব ভূমিকা ছিল পতেঙ্গা থানা পুলিশের । এছাড়াও পতেঙ্গার ফুলছড়ি পাড়া এখন মাদক পাড়া নামে খুব সুপরিচিত ।

সূত্রে আরো জানা যায়, মাদক, সিকেরেট ও ইয়াবা চালান থেকে মোটা অংকের মাসোহারা যায় পতেঙ্গা থানায়। পতেঙ্গা থানার এসআই কাদেরের হাত দিয়ে মদের ২৪ পিচের এক একটা বক্স থেকে প্রতিদিন ৩ হাজার করে ও সিকেরেরেটের কার্টুন প্রতি ৮০০০ টাকা করে, লক্ষাধিক টাকার উপরে যায় থানায় ।

সরেজমিনে দেখা যায়, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত জুড়ে পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনার যার করণে পর্যটকদের পা রাখার ঠাঁই নেই পতেঙ্গা সৈকতে । এসব অবৈধ স্থাপনা বসানোর নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী দু-গ্রুপ ।মাসে এখান থেকে চাঁদা ওঠে ২৫ লাখের উপরে। যার ভাগ যায় স্থানীয় প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় কথিত নেতাদের পকেটে। অভিযোগ আছে, থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের ছত্রছায়ায় পতেঙ্গা সৈকতে এসব অবৈধ স্থাপনা বসিয়েছে এলাকার প্রভাবশালীরা। এখান থেকে চাঁদা তোলার নেতৃত্বে রয়েছেন ‘পতেঙ্গা সৈকত দোকান মালিক সমিতি’র নামে সোর্স মুছা, মামুন, সোলেমান হাসান সিন্ডিকেটের ওয়াহিদুল আলম ওরফে ওয়াহিদ মাস্টার এবং পতেঙ্গা সৈকত হকার্স, ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবি সমবায় সমিতি’র নামে টাকা তোলেন নুর মোহাম্মদ ও শাহাব উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে নুর মোহাম্মদের ছেলে সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক বাবার পরিবর্তে অঘোষিত সভাপতি মাসুদ করিম প্রকাশ মাসুদ, মনির, রুবেল সহ আরো কয়েকজন ।

জানা গেছে, পতেঙ্গা সৈকতে গড়ে ওঠা পাঁচ শতাধিক স্থাপনার মধ্যে পতেঙ্গা সৈকত দোকান মালিক সমিতি’র নামে মুছা মামুন সিন্ডিকেটের ওয়াহিদুল আলম ওরফে ওয়াহিদ মাস্টারের তত্ত্বাবধানে চলে সাড়ে ৩ শতাধিক দোকান আর পতেঙ্গা সৈকত হকার্স, ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবি সমবায় সমিতি’র নামে টাকা তোলেন নুর মোহাম্মদ ও শাহাব উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে নুর মোহাম্মদের ছেলে মাসুদ করিমের নেতৃত্বে চলে ১শত ৩০টি দোকান। যেগুলো থেকে তার প্রতিদিন ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা উত্তোলন করে। এই টাকা দুগ্রুপের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারাহয়। আবার এর বড় একটি অংশ সোর্স মুছা সিন্ডিকেট থেকে মাসে ৩ লাখ ও মাসুদ করিম এর সাইট থেকে প্রতিমাসে এসআই কাদের হাত দিয়ে যায় ২ লাখ টাকা পতেঙ্গা থানায়, পতেঙ্গা সৈকত ট্যুরিস্ট পুলিশসহ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পকেটে। সোর্স মুস একসময় কাঁদে গামছা পেঁচিয়ে বাদাম বিক্রেতা থেকে বর্তমানে অবৈধ পথে রোজগার করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানিরা জানান, এখানে দুটি সমিতির নাম ব্যবহার করা হলেও মূলত প্রশাসনসহ গুটিকয়েক জন মানুষের পকেটে যায় চাঁদাবাজির টাকা। ওয়াহিদ মাস্টার, মাইনুল ইসলাম, তাজু, নুর মোহাম্মদ, শাহাব উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় চাঁদাবাজ জড়িত এই চাঁদাবাজিতেও মাদক চোরাকারবারিতে ।

সূত্র আরো বলছে, মাসুদ, তাজু, মনির, রুবেলের নেতৃতে সৈকতের নানা অংশে বসেছে সাম্পান, নাগরদোলা ও চরকি। ১০ জায়গায় বসা সাম্পান, নাগরদোলা ও চরকি সপ্তাহে মোটা অংকের মাসোহারা নেন তারা। আবার এইখানে বৈদ্যুতিক লাইন সরবরাহ করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা । জানা যায় প্রতি সপ্তাহে এসআই কাদের হাত দিয়ে প্রতিটি থেকে ৩ হাজার ৫শত টাকা করে মোট ৩৫ হাজার টাকা পতেঙ্গা থানায় মাশোহারা যায়। এছাড়াও অনুসন্ধান জানা যায়, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় গড়া ওঠা চারটি আবাসিক হোটেল ব্রীজ পয়েন্ট, সী কুইন, পতেঙ্গা টুডে ও বরিশাল হোটেলে পতিতাবৃত্তি ও দেহ ব্যবসা ওপেন সিক্রেট । অভিযোগ আছে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে চলে আবাসিক হোটেলের আড়ালে এইসব ব্যবসা । সূত্র বলছে এসআই কাদেরের হাত দিয়ে এই চার আবাসিক হোটেল থেকে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকা করে চার লক্ষ টাকা মাশোয়ারা যায় পতেঙ্গা থানায়। আবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের দক্ষিণ পাশে গরুর বাজার নামক এলাকায় ওয়াহিদ মাস্টার ৫০ থেকে ৬০ জন ভাসমান পতিতাদের দিয়ে থানা পুলিশ ম্যানেজ করে চালান ভাসমান পতিতালয় । ভাসমান এই পতিতালয় থেকে দৈনিক ৬ হাজার টাকা করে এসআই কাদেরের হাত দিয়ে মাশোহারা যায় থানায়। সূত্র আরো বলছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এলাকায় চলাচলরত ১৩০ টি স্পীড বোট থেকে প্রতিমাসে ৩ লক্ষ টাকা মাশোয়ারা যায় পতেঙ্গা থানায়। এই বিষয়ে স্পীড বোট এর নেতৃত্বে থাকা হাজী জয়লানকে বারবার কল দেওয়া হলেও তিনি প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি। সূত্র আরো বলছে, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় সিএমপি নাম ভাঙ্গিয়ে ভ্যালেন্স ফুড কর্ণার এর পিছনে গাছ কেটে হাসান নামের জনৈক ব্যক্তি ৭০ ফুট জায়গায় দখল করে চালু করেছেন মাটির দোকান, কুলিং কর্ণার ও খাবার দোকান। এছাড়াও এবাদত খানার পূর্ব পাশে ৪০ ফুড জায়গায় সাজ্জাদ ও মামুন গড়ে তুলেছেন টুরিস্ট ক্যান্টিন । যার থেকে ৫৫ হাজার টাকা উঠে তা যায় টুরিস্ট পুলিশের হাতে । যদিও টুরিস্ট এটা অস্বীকার করেন । এটাতে তাদের কোন যোগসাজশ নেই বলে জানান ।

এই বিষয়ে মুঠোফোনে এই  প্রতিবেদক এস আই কাদেরকে  কল করলে তিনি তথ্য নেবার জন্য থানায় যেতে বলেন। অবশেষে তথ্য নেবার জন্য এই প্রতিবেদক থানায় গেলে তিনি সব বিষয় অস্বীকার করেন । এর আগে এসআই হারুন ও এসআই ফরিদ এইকাজে জড়িত ছিলেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, আমি বদলি হবার জন্য আবেদন করেছি । কেউ আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করলে আমি মামলা করব।

এ বিষয়ে পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ কবিরুল ইসলাম  বলেন, এই ধরনের কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি । আমি এই ধরনের টাকা পয়সা নেয় না এটা প্রকাশ্য সবাইকে বলে দেওয়া আছে । পতেঙ্গা থানা পুলিশ এই ধরনের কোন টাকা পয়সা নেবেনা বলেও বলেন ওসি কবির হোসেন । তিনি আরও বলেন যেকোনো ব্যক্তিগত লেনদেন থাকেতে পারে সেটা আলাদা বিষয় বাট যদি আমার নাম করে কেউ টাকা নেয়, আমাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলে আমি অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেব ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করবো।তথ্যসূত্র জাতীয় দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন, দৈনিক একাত্তর সংবাদ ও স্হানীয় ভোক্তভুগী

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla