অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন
বাঁশ বেতের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে টিকে আছে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড, শুকলালহাট, ফকিরহাট, সীতাকুণ্ড সদর, বহরপুর, ছোট দারোগার হাট, টেরিয়াইল, বড় দারোগার হাট, কুমাদান পাড়া, মহালঙ্কা ও ফেদাইনগর এলাকায় প্রায় ৩শত পরিবার। বাঁশ বেতের তৈরি স্থানীয় ভাষায় লাই, খাঁচি, বাঁশের খাঁচা, হাতা, কুলা, মাছের আন্তা, ডুলা, বাঁশের দরজা, বেড়া, মাটি কাটার উড়া ইত্যাদি হস্তশিল্প তৈরি করে বাড়বকুণ্ড, সীতাকুণ্ড ও বড় দারোগার হাট বাজারে প্রতি হাট বারে বিক্রয় করছে সংশ্লিষ্ট কুটির শিল্প পেশার পরিবারগুলো। বড় দারোগারহাট বিশ্বনাথ বস্ত্র বিতান এর স্বত্বাধিকারী নিমাই চন্দ্র দে ও পৌরসদরস্থ দক্ষিণ মহাদেবপুরের বাসিন্দা সহকারি শিক্ষক লক্ষণ চন্দ্র দে. জানান এক সময় বাঁশ-বেতের তৈরি পরিবেশবান্ধব এসব হস্থশিল্পের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সে দিন আর নেই। পরিবেশবান্ধব হস্থশিল্পের পরিবর্তে প্লাস্টিক পণ্যের বিপুল ব্যবহারে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। উপজেলার বহরপুর গ্রামের বাঁশ বেতের সাথে সংশ্লিষ্ট হস্তশিল্পী মাঈন উদ্দিন জানান, বাল্য বয়সে বাবা হারিয়ে ভিটে বাড়ি ছাড়া কোন চাষের জমি না থাকায় পিতার পেশাকেই বেচে নিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। পারিবারিক ভাবে প্রায় ২৭ বছর যাবৎ এ ব্যবসার সাথে জড়িত মাঈন উদ্দিন আরো জানান, এক সময় আমাদের তৈরি নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের প্রচুর বাজার চাহিদা ছিল। বর্তমানে বিভিন্ন আকৃতির প্লাষ্টিক সামগ্রীর পণ্য বাজারজাত হওয়ায় আমাদের তৈরি সামগ্রীর চাহিদা দিন দিন কমছে। তাতে পেশাগত ভাবে আমরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ। একই সুরে কথা বলেছেন সীতাকুণ্ড থানা সংলগ্ন মল্লিক বাড়ির প্রতিবন্ধী হস্তশিল্পী প্রদীপ দাশ। তিনি বলেন, বাজারে চাহিদা কমতে থাকায় আগের মত নানা ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করা ছেড়ে দিয়েছি। বাজারে ক্রেতার পণ্যের চাহিদা দেখেই তৈরির কাজে হাত দিই। বর্তমানে লাই, খাছি, কুলা ও মাটি কাটার উড়ার প্রতি ক্রেতার আগ্রহ বেশি।