1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে বন্দর দিবস উদযাপন তৎক্ষালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মরার কথা ছিলো, তত মানুষ মরে নাই স্মরণ সভায় ওয়াসিকা আবারও আসছে তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির জন্য ইস্তাহার নামাজ আদায় শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যে ভোটের যুদ্ধ

ধর্ম সংষ্কৃতি ঐতিহ্য

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

মাহমুদুল হক আনসারী

জাতি হিসেবে সবার একটি ধর্ম থাকে। সংস্কৃতিও থাকে। থাকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য। সব মানুষের একটা ধর্ম থাকে। সে যে ধর্মেই অনুসরণ , অনুকরণ করে সেটা তার ধর্ম। সব গোত্র শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে ধর্ম তার একটা ঈমান ও বিশ। সে বিশ্বাস থেকে তিনি ধর্ম পালন করেন। অনুসরণ করেন। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন। একটা দেশে বহু ধর্মের মানুষ ও অনুসারীদের বসবাস। সেট সব দেশেই। পৃথিবীর যতগুলো দেশ ও রাষ্ট্র রয়েছে সবদেশেই কমবেশি বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের অবস্থান থাকে। এক ধর্মের লোক অন্য ধর্মের অনুসারীদের ওপর উত্তেজনা সৃষ্টি করার হামলা ও অত্যাচার নির্যাতন করা মোটেও কোনো ধর্মের বাণীর মধ্যে পড়ে না। ধর্ম মানুষকে আলোকিত করে সুশৃংখল মননশীল জীবন যাপনে সহায়তা করে। ধর্মের কারণে সমাজ আলোকিত হয় । দেশ ও রাষ্ট্র উপকৃত হয়। সব ধর্মের বাণীর মধ্যে মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ শৃংখলা আনুগত্য ও সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার কথা পাওয়া যায়।

মানুষ যার যার ধর্ম সে পালন করবে। সুশৃংখলভাবে তার ধর্ম তিনি পালন করবেন। অন্য কোনো ধর্মের অনুসারীর ওপর আঘাত হামলা অত্যাচার বাধা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেননা সেটিই মূলত ধর্মের আহবান। তবে এখন আমরা ধীরে ধীরে ধর্মের মূল আদর্শ এবং অনুসরণ হতে সরে আসছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কমবেশি হলেও ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেখা যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে। ধর্মে ধর্মে আঘাত হানাহানি মারামারি প্রতিবন্ধকতা মূলক কর্মসূচী দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। এখানেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মের নামে অধার্মিক অনৈতিক কার্যকলাপ গড়তে দেখা যায়। এক ধর্মের অনুসারী অন্য ধর্মের অনুষ্ঠানের ওপর হামলা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা দেখা যায়। এক পক্ষ অন্য ধর্মের অপর পক্ষের ওপর হামলা করতে দেখছি। এক পীরের মুরিদ অন্য পীরের মুরিদের ওপর হামলা করছে। ধমীয় হানাহানির মধ্যে সুন্নী ওহাবী, খারেজী, রাফেজী, নানা ধরনের ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় হানাহানির মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে সহ্য করতে পারেনা।

সকল পক্ষই ধর্মের দোহাই দিয়ে কোরআন ও হাদীসের উদ্বৃতি দিয়ে বয়ান বক্তব্যের মাধ্যমে সামাজিক শৃংখলা নষ্ট করছি। সমাজে উশৃংখল পরিস্থিতি তৈরি করছে। মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ নষ্ট করছে। পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় এলাকায় এলাকায় মুসলিম সমাজের মধ্যে এক ধরনের বিভাজন সৃষ্টি করছে। কতিপয় ওয়েজিন বক্তা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে অহরহ ফ্যাসাদ ও শৃংখলা ভঙ্গ করছে সমাজে। ঐক্যবদ্ধ মুসলিম সমাজের চিন্তা চেতনা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য বিভাজন বাড়ছে। পরিবার সমাজে নানা মতের সদস্য তৈরি হচ্ছে। ফলে সমাজের নানা সেক্টরের মুসলিম অনুসারীদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রæপ তৈরি হচ্ছে। ইসলাম যেখানে ঐক্য ভ্রাতৃত্ব আন্তরিকতা ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছে সেখানে বর্তমান সমাজে আজ আমরা দেখছি কতিপয় ওলামাদের মাধ্যমে মুসলিম ঐক্য ভ্রাতৃত্ব নষ্ট হচ্ছে। ফলে মুসলিম শক্তি দুর্বল হচ্ছে। প্রজন্মের মধ্যে আনুগত্য শৃংখলা ভ্রাতৃত্ব বিলুপ্ত হচ্ছে।

ধর্ম পালনের জন্য শৃংখলা থাকতে হবে। সকল ধর্মের মধ্যেই একটি সংস্কৃতি থাকে। সে সংস্কৃতির সাথে ধর্মের যুগসূত্র পাওয়া যায়। ধর্ম এবং সংস্কৃতির আচার অনুষ্ঠান প্রায়ই কাছাকাছি। মুসলমানরা যে ধর্ম পালন করে সে ধর্মে কিছু নিয়মনীতির মধ্যে সংস্কৃতি থাকে। সে সংস্কৃতির মধ্যে ইসলামিক আচার অনুষ্ঠান লালন ও পালন হয়ে থাকে। মুসলমানরা তাদের সংস্কৃতির মধ্যে মাথায় টুপি পরিধান করে। নামাজের সময় টুপি পাগড়ী এগুলো ব্যবহার করে। সেটা ধর্মের মধ্যেই একটি সংস্কৃতি। সালামের আদান-প্রদান সেটাও ইসলামী সংস্কৃতি। ইসলামী তাহযিব তমদ্দুন নিয়ে গান তৈরি এবং পরিবেশন সেটাও ইসলামী সংস্কৃতি। খাওয়া দাওয়ার মধ্যে ইসলামী নিয়মনীতি পালন ইসলামী সংস্কৃতি। পারিবারিক সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে ইসলামের আদর্শ অনসুরণ সেটাও ইসলামী সংস্কৃতি। বাজার মার্কেটে যাওয়া আসা রাস্তায় চলাচলের মধ্যে নিয়ম মেনে চলার নাম ইসলামী সংস্কৃতি। বলতে গেলে মুসলমানরা যে ধর্মের অনুসারী , ইসলামী নিয়মনীতির মধ্যেই ইসলামী সংস্কৃতি নিহীত রয়েছে। অনুসরণের মধ্যেই ইসলামী সংস্কৃতি পাওয়া যায়। ইসলামী সংস্কৃতির সাথে অন্যকোন ধর্মের আচার অনুষ্ঠানের মিল পাওয়া যায়না। কেউ মিলালে সেটা সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। ইসলামী সংস্কৃতির সাথে ভিন্ন ধর্মের সংস্কৃতির মিলন সেটা ইসলাম ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বলা যায়। মুসলমানের সৃষ্টি , আদিপিতা , কিভাবে পৃথিবীর বুকে মুসলমানরা আবির্ভূত হয়েছেন তার একটা কমপ্লিট পরিচিতি ও দর্শন ইসলামের ইতিহাসের মধ্যে পাওয়া যায়। সেটিই হচ্ছে মূলত মানুষ সৃষ্টির ইতিহাস তথা মুসলিম সৃষ্টির ইতিহাস। কোনো মুসলিম বানর হতে সৃষ্টি হতে পারেনা। মুসলিম হল নূরের তৈরি মাটির সংমিশ্রণে মানুষ। এ মানুষকে আধুনিক চিন্তা চেতনা দিয়ে কোনোভাবে বানরের তৈরি হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করা যায়না।  এটা সম্পূর্ণভাবে ভুল এবং একটি ভ্রান্ত প্রচেষ্টা।

মুসলিমরা কোনোভাবেই এসব সংস্কৃতি বক্তব্য ইতিহাস গ্রহণ করবেনা। শুধু মুসলিম কেন যেকোন ধর্মের মানুষও আমার বিশ^াস মতে বানর হতে মানুষ সৃষ্টির কল্পকাহিনীর সাথে একমত হবেনা। সংস্কৃতির নামে ইতিহাসের নামে মুসলিম সমাজে এ ধরনের শিক্ষা মুসলিম দেশ তথা বাংলাদেশের মুসলমানরা আশা করেনা। শিক্ষা সিলেবাস থেকে এ ধরনের চিন্তা চেতনা ও গল্পকাহিনী বাদ দেয়া দরকার। সময় থাকতে এসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে সঠিক ইসলামী আদর্শ তাহযিব তমদ্দুন ও সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে শিক্ষা সিলেবাস উপস্থাপন করা দরকার। আজকের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের যেভাবে ইসলামের নামে এ ধরনের সংস্কৃতি শেখানো হচ্ছে সে কারণে একদিন বাস্তবে মুসলিম এ জাতি ইসলামী মূল আদর্শ হতে দূরে সরে যাবে। বাস্তব ইসলামী আদর্শ ও চরিত্র তারা ভুলে যাবে। এগুলো কোনোভাবেই ইসলামী সংস্কৃতির মধ্যে পরে না। বাস্তবে এসব শিক্ষার মাধ্যমে বাস্তব ইসলামী কালচার হতে মুসলিম সমাজ দূরে সরে যাবে। সে কারণে বর্তমানে ইসলামী শিক্ষা সিলেবাসে যে ধরনের তথাকথিত পাঠ্য সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে, তা নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা সমালোচনা চলছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সরকারকে সমালোচনার এসব বিষয় খতিয়ে দেখা দরকার। সিলেবাসের মধ্যে ইসলাম এবং মুসলমান নিয়ে কোন কোন জায়গায় সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটা চিহ্নিত করতে হবে। এবং তা সংশোধন করতে হবে। মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে উত্তেজনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ইসলামের একটা নিয়মনীতি দিক নির্দেশনা আবেদন রয়েছে। এর বাইরে ইচ্ছে করে কেউই বিকৃত আদর্শ ও চরিত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনা। ইসলামী সিলেবাস তৈরীর জন্য আদর্শিক ইসলামিক দার্শনিক বুদ্ধিজীবির উপস্থিতি থাকা চায়। যে কাউকে দিয়ে ইসলামিক সিলেবাস পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা যায়না। যে বিতর্ক এখন অব্যাহতভাবে সারা দেশে চলছে সেটি হচ্ছে ইসলামী সিলেবাসের মধ্যে ব্যাপকভাবে ভুল ভ্রান্তি নিয়ে। এসব বিষয় কোনোভাবেই ছোট করে দেখার নয়। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে যথাসময়ে এসব বিষয় সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইসলামের ঐতিহ্য ইতিহাস সমুন্নত রাখতে হবে। অপরাপর ইতিহাসের মত ইসলামের ইতিহাস নিয়ে কোনো ধরনের ফ্যাসাদ ও বিতর্ক সরকারের পক্ষ থেকে আসুক জনগণ চায় না। ইসলামের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং ধর্মকে যথাযথভাবে নিজস্থানে রেখে পাঠ্য সিলেবাস ও প্রণয়ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এর বাইরে মনগড়া কোনো বক্তব্য ইতিহাস তৈরি করলে সেটার সাথে মুসলিম সমাজ কোনোভাবেই সমর্থন জানাবে না।ধর্ম সংষ্কৃতি ঐতিহ্য

 

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla