রায়হান হোসাইন
ভিন্ন এক আয়োজনে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হলো অভিভাবকহীন তিন রাজকন্যার। ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে ১৩ অক্টোম্বর বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের অফিসার্স ক্লাবে এই বিয়ের আয়োজন করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। এদের কেউ পড়েছিল পথের ধারে, কেউ হাসপাতালে আবার কেউ ছিল রাস্তায়। এই তিন কন্যার জন্ম থেকে বেড়ে উঠা, সাবলম্বী হওয়া সবই অনাথ আশ্রমে আর এর পরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহায়তায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে চাকুরী মর্জিয়া, মুক্তা ও তানিয়ার। এই তিন কন্যার বিয়ে হলো মহাধুমধামে, ৬শ বরযাত্রী, ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, দামী দামী সব উপহার সামগ্রী এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকেও এসেছিল সোনার আংটি, আর তাই কমতি ছিলোনা কোন আয়োজনে। আমন্ত্রণ ছিল সব বিশিষ্টজনদের, মন্ত্রী, এমপি, মেয়র, পুলিশ কমিশনার, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় সব শিল্পপতিরা। আর তাই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করে আশীর্বাদও করেছিলেন তারা।
অনাথ কন্যা মার্জিয়া জানান, আমি কখনও ভাবতেও পারিনি, এমন আয়োজন হবে। আমার বাবা মা বেঁচে থাকলেও মনে হয় এমন আয়োজন করতে পারতেন না। আমরা সবাই এমন আয়োজনে অনেক খুশি। বিয়েতে আমন্ত্রণ ছিল প্রধানমন্ত্রীর অবশ্য বিয়েতে অংশগ্রহন করতে না পারলেও পাঠিয়েছেন দামী দামী সব উপহার সামগ্রী। এই তিন রাজকন্যার বিয়ে হচ্ছে নিজেদের পছন্দের পাত্রের সাথে। কর্মস্থলে তাদের পরিচয়, এরপর প্রেম—এই যেমন কারো সম্পর্কটা ২ বছর, কারো ১ বছর কারও বা আবার মাস ছয়েক হলো। তাদের এই সম্পর্কের কথা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে জানানো হলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহাধুমধামে জমকালো আয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করা হয়৷
কুড়িয়ে পাওয়া এই এতিম তিন কন্যার এমন বিয়ের আয়োজন করে রীতিমতো প্রশংসায় ভাসছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান। ভিন্নধর্মী বিয়ের এই আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা আমার মেয়ের মতো আর তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যতদুর সম্ভব চেষ্টা করেছি। যাতে করে তারা তাদের পিতা মাতার অভাব বুঝতে না পারে। এমন উদ্যোগের একটাই উদ্দেশ্যে একটাই সমাজের বিত্তশালী যেন এতে উৎসাহিত হয়ে অনাথ এসব মেয়েগুলোর পাশে দাঁড়ায়। পছন্দের পাত্রদের পেয়ে খুশি রাজকন্যারা। বরেরাও জীবনের সবটুকুও সময় একে অপরের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।