1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির জন্য ইস্তাহার নামাজ আদায় শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যে ভোটের যুদ্ধ সন্দ্বীপে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার  চট্টগ্রামে র‌্যাবের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৪ চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধ গাড়ির অরাজকতা বন্ধ করতে আবারো বিআরটিএ’র অভিযান আমি আজ কথা দিচ্ছি  আপনাদের একা রেখে পালিয়ে যাব না, সুখে দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব, আমি আপনাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই- ওয়াসিকা চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিআরটিএ’র সাঁড়াশি অভিযান, জরিমানা অর্ধলাখ মে মাসেও থাকবে তীব্র গরম, তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৪৪ ডিগ্রি সব স্কুল-কলেজ ৭ দিন বন্ধ

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত হবেন

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২
  • ১৮৫ বার পড়া হয়েছে

‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি…’। মাতৃভাষার জন্য বাঙালির রক্তদানের স্মৃতি জড়ানো একুশের গানের রচয়িতা, প্রবীণ সাংবাদিক, কলাম লেখক আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীকে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে চিরশায়িত হবেন।

মরহুমের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, আমরা ওনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর অন্তিম ইচ্ছা ছিল, তাকে যেন স্ত্রীর কবরের পাশে দাফন করা হয়। পরিবারের সদস্যরা চাইছেন, ওনার শেষ ইচ্ছেটা পূরণ হোক। আমরাও সেভাবে ব্যবস্থা করছি।

তিনি বলেন, আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর প্রথম জানাজা শুক্রবার বাদজুমা পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেন জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মরদেহ লন্ডনের আলতাব আলী পার্ক শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে রাখা হবে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নিয়ে দেশে ফিরবেন।
শোক প্রকাশ করে হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম বলেন, আমরা বরেণ্য একজন মানুষকে হারালাম। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৪৯ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
গাফ্‌ফার চৌধুরী ডায়াবেটিস, কিডনি রোগসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এক বছর ধরে প্রায়ই তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হতো। তবে গত প্রায় তিন মাস তিনি বার্নেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গাফ্‌ফার চৌধুরী লন্ডন থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে দীর্ঘ বছর নিয়মিত কলাম লিখে গেছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ঘটনার ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ বজায় রাখতেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে তাঁর কলম ছিল সোচ্চার। রাজনৈতিক ধারাভাষ্য আর সমকালীন বিষয়ের পাশাপাশি তিনি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ।
আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী ছিলেন চার মেয়ে ও এক ছেলের জনক। তাঁর মেয়ে বিনীতা চৌধুরী ৫০ বছর বয়সে গত ১৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। হাসপাতালে থেকেই মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছিলেন তিনি। বিনীতা চৌধুরী বাবার সঙ্গে লন্ডনের এজওয়ারের বাসায় থাকতেন ও তাঁকে দেখাশোনা করতেন।
গবেষক ফারুক আহমদের বিলেতে বাংলা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা বইয়ে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালের ৫ অক্টোবর গাফ্‌ফার চৌধুরী তাঁর স্ত্রী সেলিনা আফরোজের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেন। এরপর এখানেই থেকে যান তিনি।
গাফ্‌ফার চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর, বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামে। ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
স্কুলে পড়ার সময় কংগ্রেস নেতা দুর্গা মোহন সেন সম্পাদিত কংগ্রেস হিতৈষী পত্রিকায় কাজ শুরু করেন। ১৯৪৯ সালে তাঁর প্রথম গল্প ছাপা হয় সওগাত পত্রিকায়। পরে দৈনিক ইনসাফ, দৈনিক সংবাদ, মাসিক সওগাত, মাসিক নকীব পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক ইত্তেফাক–এ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জয় বাংলা , যুগান্তর ও আনন্দবাজার পত্রিকায় কাজ করেন।
গাফ্‌ফার চৌধুরী ১৯৭৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলার ডাক, ১৯৮৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক নতুন দিন, ১৯৯০ সালের ১৪ মার্চ সাপ্তাহিক নতুন দেশ এবং ১৯৯২ সালের ১০ জানুয়ারি সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তাঁর হাতে পাক্ষিক জাগরণ পত্রিকাটি সাপ্তাহিক জাগরণ–এ উন্নীত হয়ে বিলেতে একটি প্রথম শ্রেণির বাংলা সংবাদপত্রে পরিণত হয়।
সাপ্তাহিক জনমত–এর সাবেক সম্পাদক নবাব উদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, বিলেতে শুরুর দিকে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী লন্ডনের কমিউনিটি স্কুলগুলোতে শিক্ষকতা করেছেন। অনুবাদকের কাজ করেছেন। তিনি বিলেতে আগমনের পর থেকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত ছিলেন সাপ্তাহিক জনমত–এর নিয়মিত কলাম লেখক।
গাফ্‌ফার চৌধুরীর প্রথম উপন্যাসের নাম চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান। নাম না জানা ভোর, নীল যমুনা, শেষ রজনীর চাঁদ, সম্রাটের ছবি, সুন্দর হে সুন্দর, বাংলাদেশ কথা কয় তাঁর লেখা বইগুলোর অন্যতম। তাঁর লেখা নাটকের মধ্যে রয়েছে পলাশী থেকে বাংলাদেশ, একজন তাহমিনা ও রক্তাক্ত আগস্ট।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ইউনেসকো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফ্‌ফার চৌধুরী। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla