প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নজরদারী চাই
আসছে ১১ নভেম্বর ৮৪৮ টি ইউপি নিবার্চন অনুষ্ঠানের জন্য ইসি তফশিল দিয়েছে। এটি ২য় দফায় নির্বাচন । ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব কয়টি ইউপি নির্বাচন হবে। ফলে গ্রামে গ্রামে ভোটের হাওয়া চলছে । সেই হাওয়া আগের মতো নয়। অন্যরকম এক নির্বাচনী পরিবেশ কাজ করছে দেশ জুড়েই। আওয়ামী লীগ যেন এখন আওয়ামী লীগেরই প্রতিপক্ষ। হাইব্রীড, মুখোশধারী, অন্যদল থেকে আসা সুবিধাবাদী, মামলা মুকদ্দমা থেকে বাঁচতে আসা লোকজনও হালে আওয়ামী লীগ সমর্থক ও ক্ষেত্রবিশেষে নেতাও বনে গেছে। প্রকৃত আওয়ামী লীগের ত্যাগীরা কেমন জানি গোটা দেশে কোনঠাসা হয়ে অবহেলিত দিন যাপন করছে। তবু প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের তেমন আফসোস নেই। হা-হুতাশ করছে সুবিধাবাদীরা কিংবা খুনী মোস্তাক অনুসারীরা।
গোটা দেশজুড়ে ইউপি নির্বাচনের গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু তৃণমূলের মূল্যায়ণ শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে। কর্মীদের কদর নেই প্রার্থীদের কাছে।ভোটারদের সমর্থন কিংবা ভোট দরকার নেই প্রার্থীরা এই ভাবনা নিয়ে মনোনয়ন পেতে তদবিরে নেমেছে সর্ব কৌশল বিনিয়োগ করে। যারা মনোনয়ন পেয়ে দিতে কার্যকর ব্যাক্তিদের চাহিদা এখন রমরমা। অদেশপ্রমিক লুঠের দল, হাইব্রীড নেতা, অজানা ও অদৃশ্য কারবার করে কোটিপতি হওয়া উচ্চবিলাসী লোকজন, দল – বদলে পারদর্শী ও শুধু নেতা পুজারী দলনেতা, বাপ দাদার রাজাকার পুত্র নব্য আওয়ামী লীগার, দুই নাম্বারী ঠিকাদার, টাকা দিয়ে পদ – পদবী কেনা লোকজন এবার নৌকার মনোনয়নে ভাগ বসাতে উঠে পড়ে লেগেছে। গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থার রিপোর্ট ও পূূর্ব বাংলার নিজস্ব জরিপে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নজরদারী চাই, চাই দল ঠিকাতে দলীয় লোকদের মূল্যায়ন। ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই-এ বাণিজ্য হলে আওয়ামী লীগ ইমেজ সংকটে পড়বে, দল চলে যাবে হাইব্রীডদের নিয়ন্ত্রণে। তখন কেন্দ্রীয়ভাবে যতই ভালো উদ্দোগ নেয়া হোক সেই উদ্দোগ উপজেলা থেকে ইউনিয়ন ও গ্রামে গেলেই আর খুঁজ মিলবে না। এই জন্য এইবার অতি মহামারী করোনাকালেও চাল, ডাল ও তেল চুরি হয়েছে ।হয়েছে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন । দল পড়ছে ইমেজ সংকটেও।
ইউনিয়ন ও গ্রামের মানুষের নানাবিধ সেবার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মূখ্যত মূল গণপ্রতিনিধি।এসব গণপ্রতিনিধিরা সিংহভাগ গ্রামেই থাকেন না। থাকেন নিকটতম শহরে । ঢাকার আশে -পাশের ইউপি চেয়ারম্যানগণ থাকেন ঢাকায় আর চট্টগ্রামের আশে -পাশের ইউপি চেয়ারম্যানগণ থাকেন চট্টগ্রামে। একই দৃশ্য সারাদেশ জুড়ে । সপ্তাহে কিংবা মাসে কোন কোন চেয়ারম্যান একবার যান ইউনিয়নে। কেউ কেউ ৬ মাসেও যান না। খুব কম সংখ্যক চেয়ারম্যান প্রতিদিন যান ইউনিয়নে , যান দুই এক দিন পরও। যারা শহরে থাকেন কিংবা গড়হাজির থাকেন এলাকায় তাদেরই কারণে ইউনিয়নবাসী নানান সেবা হতে বঞ্চিত হয় পুরো মেয়াদকালে।এলাকায় না থাকলে ওই চেয়ারম্যানের দরকারই বা কী। বিষয়টি আম জনতা বুঝলেও যারা বুঝলে বিষয়টির সুরাহা করতে পারবেন তারা কেন বুঝে না তা সাধারণ জনগণ বুঝেন না। বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে ও নিতে হবে সিদ্ধান্ত এমন ধারণা পোষণ করছেন দেশের সাাধারণ জনগণ।
জাতির জন্য শৃংখলা অপরিহার্য অংশ। শৃংখলা ছাড়া কোন জাতি গোষ্ঠী অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনা। শৃংখলা থাকতে হবে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রে। ব্যক্তির মধ্যে শৃংখলা অনুশীলন,অনুকরণ প্রতিষ্ঠা ব্যতিরেখে পারিবারিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠা হয় না। পারিবারিক শৃংখলা থেকে সামাজিক শৃংখলা পাওয়া যায়। সামাজিক শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে রাষ্ট্রীয় শৃংখলা সম্ভব নয়। আজকের সমাজে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটি হলো শৃংখলা প্রতিষ্ঠা। মানুষ তার কাজকর্মে শৃংখলা রক্ষা করতে চায়না। সৃশৃংখল জীবন ব্যক্তির মধ্যে লক্ষ্য করা যায়না।
মানবীয় জীবন চলার পথে যেভাবে শৃংখলা রক্ষা করতে হয় তা অনেক ক্ষেত্রেই আমরা বাস্তবায়ন করছিনা। একজন ব্যক্তির যেভাবে চলনে বলনে উঠতে বসতে শৃংখলাপূর্ণ আদর্শ দেখানোর কথা ছিলো সেটা শিক্ষিত , কম-শিক্ষিত বা অশিক্ষিত কারো মধ্যেই শৃংখলার অনুশীলন সমাজ ক্রমেই ভুলতে বসছে।
মানুষ প্রয়োজনের জন্য ভোগ করবে। তার জন্য যতটুকু প্রয়োজন সে পরিমাণ সে ভোগ করবে, আহার করবে,ভক্ষণ করবে,উপভোগ করবে। কিন্তু দেখা যায় তার যা প্রয়োজন এর চেয়েও বেশি সে নষ্ট করছে। তার যেটুকু বসার জায়গার দরকার সে তার চেয়েও বেশি জায়গা দখল করে অন্যজনকে ভোগান্তিতে ফেলছে। চলাচল , চলাফেরায় আচার আচরণ ব্যবহারে মানুষের শৃংখলা পূর্ণ ব্যবহার খুব কম সংখ্যক মানুষে রপ্ত করে থাকে। আচার ব্যবহার , খাওয়া দাওয়া আতিথিয়তা সম্ভাষণ সবকিছুতে মানবিক শৃংখলা অনুপস্থিত। খাওয়া দাওয়া , উঠা বসাতে মানুষের একটা শৃংখলা থাকে। মানুষ যতই উন্নতি অগ্রগতি তার জীবনে উপলধ্বি করে তার মধ্যে শৃংখলা একটি বিশাল বিষয়। শিক্ষা, দীক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য,চাকরী-বাকরী পারিবারিক সামাজিক রাষ্ট্রীয় সমস্ত কাজে অগ্রগতির জন্য অবশ্যই শৃংখলা শব্দটি কর্মক্ষেত্রে থাকা চায়।এই সব শৃৃখংলা গ্রাম ও ইউনিয়ন থেকে রক্ষার মাধ্যমে দেেশজুড়ে চালু করার জন্য প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যানগণ মূখ্য ভুমিকা রাখতে পারে।
শৃংখলা থাকা চায় বিদ্যালয় থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত। পরিবার থেকে সামাজিক সবগুলো সেক্টরে ব্যক্তি পরিবার সমাজ এবং প্রতিটি নগরালয়ে। যদি সে শৃংখলা এখন থেকে জাতি রপ্ত না করে তাহলে ভবিষ্যত সমাজ শৃংখলা কী সেটাও ভুলে যাবে।
মামলাবাজ, মাদক সেবনকারী, মাদক কারবারী, চাঁদাবাজ ও অজানা কারবার করে কোটিপতি হওয়া, দল বদল করা ব্যাক্তি , হাইব্রীড নেতা এদের চিহ্নিত করে নৌকা প্রতীক দেয়া বন্ধ করতে কঠোর নির্দেশ থাকা চাই। পাশাপাশি বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে কোন কোন নেতা নেত্রী কিংবা মন্ত্রী, এমপি এসব মার্কামারাদের চেয়ারম্যান বানিয়ে দলের নীতি আদর্শের বিপরীতে কাজ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শ্রম ও মেধাকে ঘাটে ঘাটে প্রশ্নবিদ্ধ করছে তাদেরও চিহ্নিত করে দলে ও ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে হবে।