1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৩:৫২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সীতাকুণ্ডে কুমিরা ঘাট দিয়ে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা, খবর পেয়েও আটক করেনি নৌ পুলিশ ৬ তারিখে বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো বায়েজিদে টোকেন বাণিজ্য নিষিদ্ধ অটোরিক্সা অবাধেই চলছে ট্রাফিক পুলিশ চাঁদা পেয়েই নিরব ১১ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য ডবলমুরিং- এ ভুয়া নারী পুলিশ কনস্টেবল আটক বিএসসি মর্যাদা পাওয়া নিয়ে আইইবি’ বিরুপ প্রতিক্রিয়া অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য – আইডিইবি সীতাকুণ্ডে অবৈধ বালু উত্তোলন দিয়ে কে আর অক্সিজেন পুরাতন কুমারী খাল ভরাট করছে একজন মন্ত্রী সমর্থিত আরেকজন এমপি সমর্থিত আর আমি হচ্ছি সাধারণ জনগণ সমর্থিত- তৌহিদ  মিরপুর-পল্লবীর মটস: মানবিক ভ্রাতৃত্ব গঠনে কৃষি ও কারিগরি প্রশিক্ষণে এগিয়ে জাফর হায়াতের মৃত্যবার্ষিকী আজ

দেশে ২০ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে ভুগছে

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ

ডায়াবেটিস জন্মের পর থেকে যেকোনো সময় হতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের হার বেশি হওয়ায় আমাদের কাছে ডায়াবেটিস বলতে মনের মধ্যে বড়দের চিত্র ভেসে ওঠে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের ডায়াবেটিসের ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতার অভাব রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই রোগ নির্ণয় বিলম্বিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭০ লাখের অধিক রোগী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং ২০ হাজারের মতো শিশু ডায়াবেটিসে ভুগছে এবং এ সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।

শিশুদের বিভিন্ন প্রকার ডায়াবেটিস হতে পারে—

নবজাতক বা নিওনেটাল ডায়াবেটিস

এ ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত জন্মের পরপর থেকে ছয় মাস বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে হয়, যা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশন বা ত্রুটির কারণে হয়। এ ডায়াবেটিস কিছু ক্ষেত্রে সাময়িক হতে পারে, যা বড় হলে ভালো হয়ে যেতে পারে, আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা স্থায়ী ডায়াবেটিসে রূপ নেয়।

বয়ঃসন্ধিকালের ডায়াবেটিস বা মডি

এটাও নবজাতক বা নিওনেটাল ডায়াবেটিসের মতো একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক মিউটেশন বা ত্রুটির কারণে হয় কিন্তু তা বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতে হয়। এ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত পরিবারের তিন জেনারেশনে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে। নবজাতক ডায়াবেটিস এবং বয়ঃসন্ধিকালের ডায়াবেটিসকে একত্রে মনোজেনিক ডায়াবেটিস বলে।

টাইপ-১ বা জুভেনাইল ডায়াবেটিস

শিশুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি হয় এ ধরনের ডায়াবেটিস। তবে বড়দেরও হতে পারে। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন তৈরি প্রায় সম্পূর্ণভাবে অথবা পুরোপুরি ব্যাহত হওয়ার কারণে এ ধরনের ডায়াবেটিস হয়। আমাদের দেশে এ ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ১৭ হাজার। প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে।

টাইপ-২ ডায়াবেটিস

শরীরে ইনসুলিন উৎপন্ন হওয়া সত্ত্বেও তা রেজিস্ট্যান্সের জন্য কোষে কাজ করতে না পারার ফলে এ ধরনের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। এ ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত বড়দের বেশি হয় এবং সারা বিশ্বব্যাপী এ প্রকার ডায়াবেটিসের হার সবচেয়ে বেশি। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ডায়াবেটিস আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ।

শিশুদের ডায়াবেটিসের লক্ষণ

এ রোগের অন্যতম লক্ষণ হলো বেশি বেশি ক্ষুধা লাগা, অতিরিক্ত পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সমস্যা, ওজন হ্রাস পাওয়া, দীর্ঘস্থায়ী ঘা, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, শুষ্ক ত্বক, পা অবশ বোধ হওয়া বা ঝিমঝিম করা, মনোযোগ হ্রাস পাওয়া, উৎসাহ-উদ্দীপনা কমে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া, ঘন ঘন বমি ও পেটের পীড়া ইত্যাদি।

শিশুদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ

পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকলে তার সন্তানেরও হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ক্ষেত্রে তাই সতর্ক থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রাথমিক অবস্থায় যেন শিশুর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো জানা থাকলে এ কাজটা অনেক সহজ হয়।

শিশুর ডায়াবেটিসের ব্যাপারে নিশ্চিত হলে ভেঙে না পড়ে মনোবল দৃঢ় করতে হবে এবং সঠিকভাবে সন্তানের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হতে হবে। প্রথমেই পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে একটি খাদ্যতালিকা তৈরি করে নিতে হবে, কারণ খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ওপর ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ অনেকটা নির্ভরশীল।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের জন্য অধিক আঁশ ও শর্করাযুক্ত সুষম স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা তৈরি করতে হবে, যা শিশুর রক্তের সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং শিশুর শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকেও ব্যাহত করবে না। শিশুকে তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি দুই বা তিন বেলা হালকা নাশতা দিতে হবে। খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সন্তানের পর্যাপ্ত শরীরচর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। শুয়ে-বসে, টিভি দেখে, কম্পিউটার গেমস খেলে সময় কাটানোর চেয়ে বাইরের খেলাধুলার দিকে সন্তানকে আকৃষ্ট করতে হবে। শিশুদের টাইপ-১ ডায়াবেটিসে হঠাৎ রক্তে শর্করা কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থাটা শিশুর জন্য খুবই জটিল। তাই ইনসুলিন দেয়ার পর পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শর্করার পরিমাণ দেখে নিয়ে শিশুকে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। সন্তান স্কুলে যাওয়ার সময় তার পকেটে বা ব্যাগে মিষ্টিজাতীয় খাবার রেখে দিতে হবে। স্কুলের শিক্ষকদেরও এ ব্যাপারে অবহিত করতে হবে। সঠিকভাবে ইনসুলিন প্রয়োগবিধি জানতে হবে এবং শিশুকে তা উপযুক্ত বয়সে শেখাতে হবে। সঠিকভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পরিবারের করণীয়

শিশুদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পরিবারের সচেতনতাই মুখ্য। পরিবারের মধ্যেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা গড়ে তোলার মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সম্ভব। ছোটবেলা থেকেই সুষম খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি থাকতে হবে। ফাস্টফুড খাবার, চিপস, চকোলেট, ড্রিংকস জাতীয় খাবার থেকে শিশুদের যথাসম্ভব বিরত রাখতে হবে।

মুটিয়ে যাওয়া বা স্থূলতা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি বর্তমানে শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত চাপ, মোবাইল, কম্পিউটার ও টিভির সহজলভ্যতা, খেলার মাঠের অভাব ইত্যাদি শিশুদের অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। শিশুরা যাতে মুটিয়ে না যায় এবং স্বাভাবিক ওজনের হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। খোলা মাঠে প্রতিদিন এক ঘণ্টা খেলাধুলা বা হাঁটা, জগিং, সাঁতার, সাইক্লিংয়ের মতো ব্যায়াম করার ব্যাপারে শিশুদের উৎসাহিত করতে হবে। পরিশেষে শিশুদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিস হলে ভীত না হয়ে সঠিক চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে শিশুদের পূর্ণ বিকাশ এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা সম্ভব। লেখক: ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla