1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৯:৪৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করেছে ২১নং জামালখান ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের আলম আশিক দেশে ২০ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে ভুগছে মনজুর আলম প্রতিষ্ঠিত নতুন ৩ টি জামে মসজিদ জুম্মার নামাজ আদায় এর মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন তরুণ প্রজন্মকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে –  সিমিন হোসেন পতেঙ্গা চরপাড়ায় অবৈধ অনুমোদহীন আইসক্রীম ফ্যাক্টরীঃ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরী লোকেরাই আইসক্রীম ফ্যাক্টরীরও কর্মী গনচিনি, চ্যাকারাইন, লোংরা পানি ও বিষক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখীতে ‘সবুজ চুড়ি আন্দোলনে ২৫শ তালগাছ রোপন সাংবাদিক ওমর ফারুকের ইন্তেকাল ২৯ শে এপ্রিল নিহতদের স্মরণে সাহিত্য পাঠচক্রের স্মরণ সভা পথচারীদের মাঝে শরবত, পানি ও গামছা বিতরণ করলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর  হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর পথচারীদের মধ্যে শান্তির শরবত বিতরণ করলেন

সাব-রেজিস্ট্রারের স্ত্রীর নামে ৮ ফ্ল্যাট

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি

বোরহান উদ্দিন, ফেনী সদরের সাব-রেজিস্ট্রার। তবে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত এই কর্মকর্তার স্ত্রীর নামে এক ভবনেই আট ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। রাজধানীর শ্যামলী স্কয়ারের বিপরীতে শ্যামলীবাগের ৩ নম্বর রোডের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে একটি বহুতল আলিশান বাড়ি। ‘লায়লা বাছেত ক্যাসল’ নামের বাড়িটির নম্বর ২৭/ক। বাড়িটিতে আটটি ফ্ল্যাট আছে একজন সাব-রেজিস্ট্রারের স্ত্রীর নামে। ফ্ল্যাটগুলো হলো-১/এ, ২/এ, বি, সি, ৩/এ, বি, সি, ৪/বি। আশপাশের লোকজন জানেন, এসব ফ্ল্যাটের মালিক সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার স্ত্রী বড় ব্যবসায়ী। সেই অর্থেই একের পর এক ফ্ল্যাট কিনছেন। এলাকায় কেউ ফ্ল্যাট বেচলেই খোঁজ পড়ে এ দম্পতির। দৃশ্যত কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকলেও এসব ফ্ল্যাটের মালিক সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকারের স্ত্রী নাসরিন হক। অভিযোগ আছে, বোরহান যেখানেই যান, সেখানেই দুর্নীতি-অনিয়ম করেন। বারবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও ‘অদৃশ্য শক্তি’র জোরে রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এভাবেই ধরাকে সরা জ্ঞান করে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। স্ত্রীর নামে শ্যামলীবাগের ওই বাড়িতে থাকা ফ্ল্যাটের নামজারিসহ সব কাগজপত্র রয়েছে । সরেজমিন গিয়েও বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ ও গাজীপুরে জমিসহ নামে-বেনামে এই দম্পতির বিপুল সম্পদ আছে বলে জানিয়েছেন তাদের ঘনিষ্ঠরা। বোরহানকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে উগ্র আচরণ করতে থাকেন। বাসায় যাওয়ায় প্রতিবেদকের নামে মামলা করবেন বলেও হুমকি দেন। পরে বোরহান বলেন, ‘তিনি নিজেও একসময় সাংবাদিক ছিলেন। তার সঙ্গে অনেকের পরিচয় আছে।’ এসব বলে ফোন রাখেন। ফের ফোন দিলে কেটে দিয়ে নম্বর ব্লক করে দেন। এর কয়েকদিন পর অন্য নম্বর থেকে ফোন করা হলে বোরহান উদ্দিন তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘শ্বশুরের সম্পদ বিক্রি করে আমার ওয়াইফ ফ্ল্যাট কিনেছে। এগুলো নিয়ে বহুত ইনভেস্টিগেশন, বহুত কিছু হয়ে গেছে, শেষ। এগুলো নিয়ে আর কিছু করে লাভ নাই।’ অভিযোগ আছে, ভালুকায় থাকাকালীন বনের জমি দলিল করে দিয়ে নেওয়া টাকায় এসব ফ্ল্যাট কিনেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে বোরহান বলেন, ‘ভালুকায় ছিলাম করোনার সময়। তখন আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই।’ ফ্ল্যাটগুলোও তো ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে কেনা- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এসব ফালতু অভিযোগ তুলে লাভ কী বলেন। আমার সোর্স না থাকলে কি আমাকে ছেড়ে দেবেন। আমার সংস্থা কি ছেড়ে দেবে।’ বোরহান আরও বলেন, ‘আমার নামে কোনো সম্পদ নাই; যা আছে আমার স্ত্রীর নামে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চাকরির শুরু থেকেই বেপরোয়া ছিলেন সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান। তোয়াক্কা না করে দুর্নীতি আর অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন। ২০১৮ সালে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে থাকাকালে সপ্তাহে দুদিন মঙ্গল ও বুধবার দলিল সম্পাদনের কাজ করতেন। দলিলভেদে ঘুষ নিতেন ৩-৭ হাজার টাকা। অতিরিক্ত টাকা না পেলে কাজেই হাত দিতেন না। তা ছাড়া সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে টাকার বিনিময়ে কাগজপত্র ছাড়াই দলিল সম্পাদন করতেন। এরপর ২০১৯ সালে বোরহান যান ময়মনসিংহের ভালুকায়। সেখানে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ স্থানীয় দলিল লেখকরা তার প্রত্যাহার দাবিতে কলমবিরতি কর্মসূচিও পালন করেন। তার বিরুদ্ধে দলিল লেখকদের সঙ্গে অসদাচরণ, অতিরিক্ত টাকা আদায়, সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, সময়মতো অফিসে না আসা, নিবন্ধনের অপেক্ষায় থাকা দলিল রেখে সময়ের আগেই অফিস ত্যাগ করা, মনমতো ছুটি কাটানোসহ নানা অভিযোগ ছিল। ২০২০ সালে করোনার দোহাই দিয়ে টানা প্রায় ৩ মাস অফিস করেননি বোরহান।

পরে তিনি ভালুকা থেকে যান হালুয়াঘাটে। চলতি বছরের ১ অক্টোবর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের এক চিঠিতে তাকে হালুয়াঘাট থেকে প্রত্যাহার করে ফেনী সদরে পাঠানো হয়। অভিযোগ আছে, সেখানেও দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন তিনি। এসব অভিযোগের বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমার সম্পর্কে আপনাদের ধারণাটা খুবই কম। আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নাই।’ এ সময় তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘তারা কেন করেছে? আমি দুর্নীতি করব না বলে তারা মানববন্ধন করেছে। সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এটি উদ্বেগজনক বিষয়। তবে আমি মোটেই অবাক হব না, হতবাক হওয়ার নয়। কারণ আমাদের দেশের সব খাতেই দুর্নীতি-অনিয়ম হয়। ভূমি নিবন্ধন খাতে সবচেয়ে বেশি হয়। আর এখানে সাব-রেজিস্ট্রাররা কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। এই ঘটনা বাস্তবতার প্রতিফলন।’ জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে অনিয়ম-দুর্নীতি আরও বাড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla