1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
বিশুদ্ধ পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ করেছে ২১নং জামালখান ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের আলম আশিক দেশে ২০ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে ভুগছে মনজুর আলম প্রতিষ্ঠিত নতুন ৩ টি জামে মসজিদ জুম্মার নামাজ আদায় এর মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন তরুণ প্রজন্মকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে –  সিমিন হোসেন পতেঙ্গা চরপাড়ায় অবৈধ অনুমোদহীন আইসক্রীম ফ্যাক্টরীঃ প্লাস্টিক ফ্যাক্টরী লোকেরাই আইসক্রীম ফ্যাক্টরীরও কর্মী গনচিনি, চ্যাকারাইন, লোংরা পানি ও বিষক্ত ক্যামিক্যাল ব্যবহার সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখীতে ‘সবুজ চুড়ি আন্দোলনে ২৫শ তালগাছ রোপন সাংবাদিক ওমর ফারুকের ইন্তেকাল ২৯ শে এপ্রিল নিহতদের স্মরণে সাহিত্য পাঠচক্রের স্মরণ সভা পথচারীদের মাঝে শরবত, পানি ও গামছা বিতরণ করলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর  হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর পথচারীদের মধ্যে শান্তির শরবত বিতরণ করলেন

মিসওয়াক : প্রিয় নবীর প্রিয় সুন্নত

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

মিসওয়াক করা সুন্নত। উলামায়ে কেরামের মতে মেসওয়াকের অভ্যাস করার মধ্যে যে সকল উপকার রয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো “মৃত্যুর সময় কালেমা শাহাদাত নসীব হয়”। মিসওয়াক একটি সুন্নাহ। রাসূলে পাক (সা.)-এর আমলগুলির মধ্য হতে একটি আমল হল মিসওয়াক। রাসূলে পাক (সা.)-এটির অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। ইন্তেকালের পূর্বেও রাসূল (সা.)-মিসওয়াক করেছেন। মিসওয়াক করা ছেলেমেয়ে উভয়ে জন্যই সুন্নত। শরীয়তের পরিভাষায় ৫ ওয়াক্ত নামাযের পূর্বে ঘুম থেকে ওঠার পর ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভাত খাওয়ার পরে যে কোনো কাঁচাগাছের ডাল দ্বারা দাঁত পরিস্কার করাকে মিসওয়াক করা বলে। ইসলামী পরিচ্ছন্নতার অন্যতম একটি বিষয় হলো ‘মিসওয়াক’ যা মানুষের আতিœক ও শারীরিক উভয় দিকের উপকার সাধন করে।
মিসওয়াক রাসূল (সা.)-এর এক অতি প্রিয় সুন্নত। বিভিন্ন হাদিসে মিসওয়াক করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা তাঁর রাসূল মুহাম্মদ (সা.)-কে বেশি বেশি মিসওয়াক করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবু উমামা বাহেলি (রা.)-থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূল (সা.)-এরশাদ করেছেন যখনই জিবরাঈল (আ.)-আমার কাছে আসতেন তখনই আমাকে মিসওয়াক করার জন্য বলতেন। যাতে আমার ভয় হতে লাগল যে মিসওয়াক করতে করতে আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দেব।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-মিসওয়াকের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে বলেছেন আমার উম্মতের জন্য কষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা না করতাম তাহলে আমি মিসওয়াক করা ফরয করে দিতাম। আবূ হুরাযরা (রা.)-থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.)-বলেছেন আমার উম্মাতের উপর যদি কষ্টকর মনে না করতাম তাহলে তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের সময় দাঁতন (মিসওয়াক) করার নির্দেশ করতাম। হযরত আবু দারদা (রা.)-বলেন তোমরা নিজেদের জন্যে মেসওয়াক করা অপরিহার্য করে নাও এবং এ ব্যাপারে উদাসীন হবে না। কেননা উহাতে চব্বিশটি উপকারিতা রয়েছে।
আপনি যদি টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন তাইলে শুধুমাত্র মুখ পরিস্কার করার সুন্নত আদায় হবে কিন্তু টুথপেস্ট দ্বারা দাঁত ব্রাশ করার আগে বা পরে আপনি যে কোনো কাঁচা গাছের ডাল দ্বারা মিসওয়াক করলে মুখ পরিস্কার করা ও মিসওয়াক করা উভয়রেই সুন্নতই আদায় হবে। পিলু/আরক গাছ,যয়তুনগাছের কাঁচা ডাল দ্বারা মিসওয়াক করা সুন্নত। উপমহাদেশে সাধারণত নিমগাছের ডাল দিয়ে মিসওয়াক করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে পাকি¯তান সৌদি আরব থেকে আমদানিকৃত যয়তুন পিলু গাছের মিসওয়াক পাওয়া যায়। এদের মাঝে প্যাকেটবিহীন যে যয়তুন গাছের মিসওয়াক বিক্রি করা হয় দাম ২০ টাকা আপনারা এটা দ্বারা আপনারা মিসওয়াক করবেন। এটা খুব ভালো।
মেসওয়াক করার সবচেয়ে বড় ১০টি উপকার হল : –
(১) মেসওয়াক করলে আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্টি হন (২) নামাযের সওয়াব সাতাত্তর গুণ বৃদ্ধি পায়। (৩) স্বচ্ছলতা আসে। (৪) মুখ সুঘ্রাণ হয় (৫) দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। (৬) মাথ্যা ব্যথা সেরে যায় (৭) চোয়ালের ব্যথা দূর হয় (৮) ফেরেশতাগণ মোসাফাহা করেন (৯) চেহারা উজ্জ্বল হয়। (১০) দাঁত উজ্জ্বল হয়।
মেসওয়াক করার দশটি বিশেষ উপকারিতা :-
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন মেসওয়াকের মধ্যে দশটি গুণ রয়েছে (১) দাঁতের সবুজ রঙ দূর করে (২) দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে (৩) দাঁতের মাড়ি শক্ত করে (৪) মুখ পরিষ্কার করে (৫) কফ দূর করে (৬) ফেরেশতারা খুশী হন (৭) আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টী লাভ হয় (৮) সুন্নতের অনুসরণ করা হয় (৯) নামাযে সওয়াব বৃদ্ধি পায় (১০) শরীর সুস্থ থাকে। এসব কিছু মেসওয়াক দ্বারা লাভ হয়। হযরত আনাস (রা.) কর্তৃক বর্ণিত আছে তোমরা মেস্ওয়াককে আঁকড়ে ধর। কেননা উহা খুব ভাল জিনিষ। দাঁতের হলুদ রঙ দূর করে, কফ শুকিয়ে ফেলে, চক্ষু পরিস্কার করে, মাড়ি শক্ত রাখে, ময়লা দূর করে, পাকস্থলি সংশোধন করে, বেহেশতে মর্যাদা বাড়ায়, ফেরেশতাগণ তার প্রশংসা করে, আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট এবং শয়তানকে অসন্তুুষ্ট করে।ওলামায়ে কেরাম মেস্ওয়াকের বহু উপকারিতা বর্ণনা করেছেন :-
আল্লামা ইবনে হাজার (রহ)-মোনাব্বেহাত নামক গ্রন্থে মেস্ওয়াকের বিশটি উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। নাহরুল ফায়েক কিতাবের লেখক ত্রিশটির কিছু বেশী উপকারিতা উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে সর্ব নিম্ন উপকারিতা হল ময়লা দূর করা এবং সর্বোচ্চ উপকারিতা হল মৃত্যুর সময় কালেমা স্মরণ হওয়া। আল্লামা হাসকাকী (রহঃ)-দুররে মোখতার কিতাবে লিখেছেন মেস্ওয়াক মৃত্যুর সময় কালেমায়ে শাহাদাত স্মরণ করিয়ে দেয় এবং মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের আরোগ্য দানকারী। নেহায়াতুল আমল কিবে আছে যে মেসওয়াকের বাহাত্তরটি উপকারিতা রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হল মৃত্যুর সময় কালেমায়ে শাহাদাত স্মরণ হয়। অন্যদিকে ভাঙ্গ (মাদক দ্রব্য) খাওয়ার দ্বারা সত্তরটি ক্ষতি রয়েছে। তন্মধ্যে একটি হল মৃত্যুর সময় কালেমা স্মরণ হয় না। আল্লামা তাহতাবী (রহ.) মারাকিউল ফালাহের টিকার মধ্যে মেসওয়াকের উপকারিতা বর্ণনা প্রসঙ্গে লিখেছেন-ইমামগণ মেসওয়াকের যে সম¯ত ফযীলত হযরত আলী (রা.) হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) ও হযরত আতা (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন তাহল এই। তাঁরা বলেন–তোমরা অবশ্যই মেসওয়াক করবে। উহার ব্যাপারে কখনও উাদাসীন হবে না এবং নিয়মিত মেসওয়াক করবে। কেননা মেস্ওয়াক করলে–
১. আল্লাহ্ পাকের সন্তুষ্টির ওয়াদা রয়েছে। ২. নামাযের সাওয়াব নিরানব্বই অথবা চারশত গুণ বেড়ে যায়। ৩. নিয়মিত মেস্ওয়াক করার ফলে সচ্ছলতা বৃদ্ধি পায়। ৪. জীবিকা নির্বাহ সহজ হয়ে যায়। ৫. মুখ পরিস্কার হয়। ৬. মাড়ি ব্যথা ও মাথার সর্বপ্রকার রোগ সেরে যায়। ৭. মাথা ব্যথা ও মাথার সর্বপ্রকার রোগ সেরে যায়। ৮. কোন নিশ্চল রগ নড়াচড়া করে না এবং নড়াচড়াকারী কোন রগ নিশ্চল হয় না। ৯. কফ দূর হয়। ১০. দাঁত শক্ত হয়। ১১. দৃষ্টিশক্তি পরিস্কার হয়। ১২. পাকস্থলী ঠিক হয়। ১৩. শরীর শক্তিশালী হয়। ১৪. মানুষের বাকপটুতা মুখস্ত শক্তি ও জ্ঞান বাড়ে। ১৫. অন্তর পবিত্র হয়। ১৬. পুণ্য বেড়ে যায়। ১৭. ফেরেশতারা খুশী হন। ১৮. তারা চেহারার জ্যোতির কারণে তার সাথে ফেরেশতারা মোছাফা করেন। ১৯. যখন সে মসজিদ থেকে বের হয়, তখন ফেরেশতারা তার পিছনে পিছনে চলে। ২০. নবী ও রাসূলগণ তার জন্য ক্ষমা পার্থনা করেন। ২১. মেস্ওয়াক শয়তানকে অসন্তুষ্ট করে ও তাকে তাড়িয়ে দেয়। ২২. পাকস্থলী পরিস্কার করে। ২৩. খাদ্য হজম করে। ২৪. অধিক সন্তান জন্মায়। ২৫. চুলের ন্যায় সরু পুলসেরাত বিজলীর ন্যায় পার করে দিবে। ২৬. বার্ধক্য পিছিয়ে দেয়। ২৭. আমলনামা ডান হাতে দিবে। ২৮. আল্লাহর ইবাদত করার জন্যে শরীরে শক্তি দান করে। ২৯. শরীর থেকে উষ্ণতা দূর করে। ৩০. পিঠ মজবুত করে। ৩১. মৃত্যুর সময় কালেমায়ে শাহাদাত স্মরণ করিয়ে দেয়। ৩২. মৃত্যু কষ্ট অতি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। ৩৩. দাঁত সাদা করে। ৩৪. মুখে সুঘ্রাণ আনে। ৩৫. কন্ঠ পরিস্কার করে। ৩৬. জিহ্বা পরিস্কার করে। ৩৭. বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করে। ৩৮. আর্দ্রতা বন্ধ করে। ৩৯. দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করে। ৪০. প্রয়োজন পুরা হতে সাহায্য করে। ৪১. কবর প্রশ¯ত করে দেয় এবং মৃত্যুর জন্য সমবেদনাশীল হয়ে যায়। ৪২. যারা মেসওয়াক করে না তাদের সওয়াব তার আমল নামায় লেখা হয়। ৪৩. বেহেশতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। ৪৪. ফেরেশতাগণ তার জন্য প্রতিদিন বলতে থাকে এ ব্যক্তি নবীদের অনুসারী। তাঁদের পদাংক অনুসরণকারী। ৪৫. তার জন্য দোজখের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৪৬. মেস্ওয়াককারী দুনিয়া হতে পবিত্র হয়ে যায়। ৪৭. মৃত্যুর ফেরেশতা তার কাছে এমন ছুরতে হাজির হয় যেরূপ কোন অলি-আল্লাহ বা নবীদের নিকট হাজির হয়। ৪৮. মেস্ওয়াককারী ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাউজ হতে পানি পান করার পূর্বে মৃত্যুবরণ করবে না। ৪৯. সর্বোপরি ফযীলত এই যে মেস্ওয়াককারীর প্রতি আল্লাহ্ তায়ালা রাযী-খুশী হন। ৫০. মেসওয়াক করলে মুখ পরিস্কার হয়। মেস্ওয়াকের আরও বহু উপকারিতা হাদগীস ও ফেকাহর কিতাবে উল্লেখ আছে। ৫১. আল্লামা তাহতাবী একটি নতুন কথা লিখেছেন যে মেসওয়াক করলে বেশী পরিমাণ মনী (বীর্য) সৃষ্টি হয়। ইমাম তিরমিজি ও ইমাম হাকেম বলেছেন মেসওয়াক করার সময় একেবারে প্রথম বারের লালা গিলে ফেলবে। কেননা এতে কুষ্ঠরোগ থেকে বাঁচা যায়। এবং মৃত্যু ছাড়া সকল রোগ থেকেও বাঁচা যায়। তবে প্রথম বারের পর আর গিলবে না। কেননা এতে স্মৃতিশক্তি কমে যায়। আল্লাহতাআলা আমাদের সকলকে নিয়মিত মিসওয়াক করার তাওফিক দান করুন। আমীন।লেখক : ফখরুল ইসলাম নোমানী, ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla