ভাইজানরে,
আপনি হইলেন , বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আপনার গৌরবময় অবদানের জন্য আপনি বীর প্রতীক খেতাব প্রাপ্ত ব্যাক্তি আপনি । উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ফরহাদাবাদ গ্রামের গুল মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়িতে আপনি জন্মগ্রহণ করেন। উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ফরহাদাবাদ গ্রামের গুল মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নিম্নবিত্ত এক কৃষক পরিবারের বড় সন্তান আপন । আপনি ১৯৬৬ সালে হাটহাজারীর কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করিয়াছেন। শুনিয়াছি, চরম দারিদ্র্যের কারণে ভাগ্য উন্নতির আশায় ১৯৬৭ সালের আগস্ট মাসে মাত্র ৫০ টাকা লইয়া খুলনায় চলিয়া গিয়াছিলেন আপনি। সংগ্রামূখর জীবন ছিল আপনার।যাক, সেইসব কথা।
ভাইজানরে,
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে আপনি খুলনা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করিয়াছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হইলে আপনি চট্টগ্রামে আসিয়া ৬ মে সীমান্ত পাড়ি দিয়া ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নে। এই অবস্থায় নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হইবে শুনিয়া লাইনে দাঁড়ালেন এবং নির্বাচিত হইলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য আপনাকে মনোনীত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান অপারেশন জ্যাকপট। সারা দেশে একই সময়ে সব বন্দরে একযোগে আক্রমণ চালানো হইয়াছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য ২০ সদস্যের তিনটি দল নির্বাচন করা হয়। তখন একটি দল চট্টগ্রামে আসিয়া পৌঁছাতে পারেনি। বাকি দুটি দলের ৩৭ জন সদস্য অংশ নেন। অধিনায়ক ছিলেন এ ডব্লিউ চৌধুরী ও উপ-অধিনায়ক ছিলেন আপনি।
ভাইজানরে,
১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামে প্রথম বিজয় মেলার অন্যতম সংগঠক ও পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সক্রিয় সদস্য ছিলেন আপনি। আপনার সাথে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক আবুল মোমেনও সক্রিয় ছিলেন। সাংবাদিক সমাজে আবুল মোমেন একজন নিখুঁত পরিচ্ছন্ন ব্যাক্তি। আপনার মতো মোমেন সাহেবেরও রহিয়াছে অসংখ্য গুণ। একসময় আপনাদের মেধাবুদ্ধির বিজয় মেলা হাইজাক হইয়া গিয়াছিল। মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজয় মেলা আপনাদের হাতছাড়া হইয়াছিল।যখন বিজয় মেলা আপনাদের থেকে হাইজাক হইয়াছিল তখন বিজয় মেলা বাণিজ্য মেলায় রুপ নেয়। মেলাকে কেন্দ্র করিয়া দোকান বরাদ্ধ, অতিথি নির্ধারণে শৃংখলা ভঙ্গ , সার্কাস, যাত্রা, ভেরাইটি শো, লটারী ও জুয়ার আসরের ঠিকানা হইয়াছিল এই মেলা । তখন সুশীল ও সৃজনশীল মানুষেরা বিজয় মেলা থেকে মুখ ফিরাইয়া নিয়াছিল।
ভাইজানরে,
মুক্তিযুদ্ধ শেষে আপনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যোগ দিয়াছিলেন ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করিয়াছেন। দক্ষতা ও দেশপ্রেমের কারণে আপনি নৌবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখিয়াছেন। আপনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়া দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করিয়াছেন। ‘১৯৭১ যুদ্ধদিনের স্মৃতিকথা’ শিরোনামে একটি স্মৃতিচারণমূলক বইও আপনি লিখিয়াছেন।
ভাইজানরে,
আপনি এখন রাষ্টযন্ত্রের অন্যতম ব্যাক্তি। দুইটি মন্ত্রণালয়ের আপনি উপদেষ্ঠাও। প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মোহাম্মদ ইউনুসও চট্টগ্রামের। বেশ কয়েকজন উপদেষ্ঠাও আমাদের প্রিয় চট্টগ্রামের। এখন চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করিবেন নাতো কখন করিবেন ? নদী মাতৃক বাংলাদেশের নৌবাহিনী সদর দপ্তর চট্টগ্রামে নয় কেন ? রেলওয়ের হেড অফিস চট্টগ্রামে হওয়া কি অযৌক্তিক ? অন্তত ২টি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রামে হইলে অসুবিধা কোথায় ?
আজ আর না । আপনার মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনায় ইতি আপনার গ্রাম বাংলার অখ্যাত ঠাণ্ডা মিয়া গ্রন্থনা – ম. আ. হ
আগামী সংখ্যায় তারেক রহমান সমীপে ঠাণ্ডা মিয়ার গরম কথা (৩৪২ ) সম্প্রচার করা হইবে।