1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
২৯ শে এপ্রিল নিহতদের স্মরণে সাহিত্য পাঠচক্রের স্মরণ সভা পথচারীদের মাঝে শরবত, পানি ও গামছা বিতরণ করলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর  হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর পথচারীদের মধ্যে শান্তির শরবত বিতরণ করলেন চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে বন্দর দিবস উদযাপন তৎক্ষালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মরার কথা ছিলো, তত মানুষ মরে নাই স্মরণ সভায় ওয়াসিকা আবারও আসছে তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল

জশনে জুলুস : স্থান পাক ওয়ার্ল্ড গিনেস বুকে

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ১২৬ বার পড়া হয়েছে

 

আ ব ম খোরশিদ আলম খান

বছর ঘুরে ফিরে এলো ১২ রবিউল আউয়াল মহিমান্বিত একটি মাস। ঈমানদার নবী ওলীপ্রেমী জনতা বছরের এই একটি দিনের প্রতীক্ষায় থাকে। কেননা, এই দিনে ধরণীকে আলোকিত ও ধন্য করে আজ হতে সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে শুভাগমন করেন বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারী ও বিশ্ব মানবজাতির ত্রাণকর্তা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মহানবীর (দ.) শুভাগমনে সমগ্র পৃথিবীর আবহ পাল্টে যায়। আরবের সবচেয়ে বর্বর পাষণ্ড মানুষগুলো পরিণত হয় সোনার মানুষে। মহানবীর (দ) আগমনে আইয়্যামে জাহিলিয়াতের গভীর অন্ধকার ও বর্বরতার অবসান ঘটে। প্রিয় নবীর (দ.) ছোঁয়ায় আরববাসী আলোকিত জীবনের দিশা খুঁজে পায়। কুরআন মজিদে আল্লাহ পাক বলেছেন, ওয়ামা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন,‘হে রাসূল (দ.) আমি আপনাকে জগৎবাসীর জন্য রহমত ও করুণা স্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ক্বাদ জাআকুম মিনাল্লাহি নূর,‘নিশ্চয়ই তোমাদের মাঝে এসেছে আল্লাহ পাকের বিশেষ ‘নূর’ বা জ্যোতি। আর নিঃসন্দেহে এই ‘নূর’ হচ্ছেন প্রিয় নবী (দ.)। মহানবীর (দ.) প্রকৃত সত্তা হচ্ছে ‘নূর’। কিন্তু তিনি মানবজাতির দিশার জন্য মানুষের আকৃতিতে দুনিয়ায় এসেছেন। মানবজাতির গাইড বা পথ প্রদর্শক হচ্ছেন প্রিয় নবী (দ.)। মহানবীর (দ.) শুভাগমন দিবসটি সমগ্র বিশ্বে  ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) হিসেবে অতীব শানদান জাঁকজমকের সঙ্গে যুগযুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে। আর বাংলাদেশে ১২ রবিউল আউয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য ও ভিন্ন আবেদনধর্মী ‘জশনে জুলুস’ উদ্যাপিত হচ্ছে আজ হতে ৫০ বছর আগে থেকে। ১৩৯৪ হিজরি মোতাবেক ১৯৭৪ সন থেকে চট্টগ্রামে দেশে প্রথম বারের মতো জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বেশ বর্ণাঢ্য আয়োজনে। ইসলামী সংস্কৃতিতে নবতর সংযোজন এই জশনে জুলুস। আর এর প্রবর্তক হলেন গাউসে জমান রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ (রহ.)। এ মহান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম নগরের বলুয়ারদীঘি খানকাহ্ থেকে সর্বপ্রথম বের হওয়া জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন হুজুর কেবলার (রহ.) প্রধান খলিফা আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ আলকাদেরী (রহ.)। তিনি ১৯৭৪ এবং ১৯৭৫ সন পরপর দুই বছর জশনে জুলুস আয়োজন করেন চট্টগ্রাম নগরে। আর সেই থেকে এ জুলুসের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে আধ্যাত্মিক, দ্বীনি ও মানবিক সংগঠন আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। ১৯৭৬ সন থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত টানা দশ বছর জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন আওলাদে রাসূল (দ.) গাউসে জমান আল্লামা হফেজ সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ (রহ.)। আর ১৯৮৭ সন থেকে মাঝখানে ৩/৪ বছর বাদ দিয়ে টানা ৩৪/৩৫ বার ঢাকা-চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন গাউসে জমান রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত পেশোয়ায়ে আহলে সুন্নাত আল্লামা শাহসূফি সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মজিআ)। করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সনে সীমিত পরিসরে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়। দুই বছর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মজিআ) দেশে আসেননি। গত বছর ২০২১ সনে জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দেন পীরে বাঙাল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মজিআ)। এ বছর ২০২২ সনে আমাদের বড় সৌভাগ্য যে, করোনার প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার কারণে জশনে জুলুস আগের অবয়বে ফিরে যাচ্ছে। এবার ৫০/৬০ লাখ দ্বীনদার নবীওলীপ্রেমী জনতা ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামের জশনে জুলুসে শামিল হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আনজুমান ট্রাস্টের উদ্যোগে এবার ৯ রবিউল আউয়াল রাজধানী ঢাকায়ও জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে। ঢাকার জুলুসে অন্যবারের চেয়ে এবার বেশি মানুষের অংশগ্রহণ ঘটে।

প্রিয় নবী (দ.) যখন মক্কার মাতৃভূমি থেকে মদিনা শরিফে হিজরত করেন তখন মদিনার আবালবৃদ্ধবনিতা মহানবীকে (দ) নানা কবিতার শ্লোকে স্বাগত জানান। মদিনাবাসী জুলুস তথা অসীম আনন্দের মাধ্যমে প্রিয় নবী (দ.) কে মদিনা শরিফে বরণ করে নেন। তাদের শ্লোগান ছিল,‘তালায়াল বদরু আলাইনা’…। তাই, আজকের জশনে জুলুসকে প্রিয় নবীর (দ) যুগের মাদানি সংস্কৃতিরই উজ্জ্বলতর বহিঃপ্রকাশ বললে অত্যুক্তি হবে না। জশনে জুলুস ইসলামী সংস্কৃতিতে ভিন্ন মাত্রাই যোগ করেছে। এই জুলুস হয়ে উঠেছে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সম্প্রীতি ও উজ্জীবনের স্মারক। তাই জশনে জুলুসের বৈশ্বিক আবেদন ও গ্রহণযোগ্যতা কখনো উপেক্ষা করা যাবে না। রাজপথে হেঁটে হেঁটে নবীপ্রেমী জনতা ‘ইয়া নবী (দ.) সালাম আলাইকা, ইয়া রাসূল (দ.) সালাম আলাইকা’ বলে যে প্রতিধ্বনি তুলেন তা সত্যিই ঈমানি উদ্দীপনা-উচ্ছ¡াসেরই বহিঃপ্রকাশ। জশনে জুলুসের জন¯্রােতের ঢেউয়ে যাবতীয় অপসংস্কৃতি অপসৃত হয়। মানুষের মনে ঈমানি জজবা ও প্রেরণা তৈরি হয়। জশনে জুলুসের মাধ্যমে ঈমানি চেতনাকে শাণিত করার যে আয়োজন তাকে স্বাগত জানানো উচিত। ঈমানি দাবি ও ঈমানি চেতনায় ঘুরে দাঁড়ানোর বড় উপলক্ষই হতে পারে জশনে জুলুস।

এবার জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন আওলাদে রাসূল (দ.) আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মজিআ), পীরে বাঙাল আল্লামা সৈয়দ সাবির শাহ্ (মজিআ) ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মজিআ)। এই তিন বরেণ্য বুজুর্গ আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের আগমনে দেশে সর্বস্তরের জনতার মাঝে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্যণীয়। জশনে জুলুসের মতো কোনো ইসলামী অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে ৫০/৬০ লাখ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চয়ই বিশ্বরেকর্ড। তাই জাতিসংঘ ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ বা ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে জশনে জুলুস স্থান পাবে তাই আমরা আশা করি। ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডেও’ জশনে জুলুস স্থান পাবার মতো সকল বৈশিষ্ট্য নিঃসন্দেহে পূরণ করেছে। এবার কেবল অপেক্ষা। চট্টগ্রামে এবারের ৫০তম জশনে জুলুস ইতিহাস গড়বে তথা ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ এবং ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে’ ঠাঁই করে নেবে এটাই আজ দেশবাসীর মুখ্য দাবি ও প্রত্যাশা।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla