1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০২:২০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
২৯ শে এপ্রিল নিহতদের স্মরণে সাহিত্য পাঠচক্রের স্মরণ সভা পথচারীদের মাঝে শরবত, পানি ও গামছা বিতরণ করলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর  হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর পথচারীদের মধ্যে শান্তির শরবত বিতরণ করলেন চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজনে বন্দর দিবস উদযাপন তৎক্ষালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মরার কথা ছিলো, তত মানুষ মরে নাই স্মরণ সভায় ওয়াসিকা আবারও আসছে তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল

বিশ্বনবীর আদর্শেই মানবজাতির মুক্তি

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বুধবার, ৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ১২০ বার পড়া হয়েছে

 

মাহমুদুল হক আনসারী

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। স্বয়ং আল্লাহতায়ালা তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিয়েছেন। তাঁর অসাধারণ চারিত্র ও অনুপম ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতি দিয়ে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।”

বিশ্বনবীর শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা শুধুমাত্র কুরআন,হাদিস এবং মুসলমানরাই দেয়নি; বরংঅমুসলিম মনীষীরাও দিয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম অমুসলিম মনীষী‘ মাইকেল হার্ট’ রচিত বিশ্বের সর্বকালের সর্বাধিক প্রভাবশালী একশত মনীষীর জীবনী গ্রন্থে সর্বপ্রথম বিশ্বনবীর জীবনী রচনা করেছেন। এই গ্রন্থে তিনি মন্তব্য করেছেন, “মুহাম্মদ (সা.) -এর সাফল্যের মধ্যে জাগতিক ও ধর্মীয় উভয়বিধ প্রভাবের এক অতুলনীয় সংমিশ্রণ ঘটেছে। এজন্য সংগতভাবেই তাঁকে ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।”

মহানবী (সাঃ) ছিলেন মানবজাতির অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় উত্তম চরিত্র ও মহানুভবতার একমাত্র আধার। তিনি ছিলেন একাধারেস মাজসংস্কারক, ন্যায়বিচারক, বীরযোদ্ধা, যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক, দক্ষ শাসক, এবং সফল ধর্মপ্রচারক। সকল ক্ষেত্রে মানব জাতির জন্য তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আদর্শ। আমাদের উচিত, বিশ্বনবীর জীবনী বেশি বেশি অধ্যয়ন করা, তাঁর জীবনী নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা করা। সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্বনবী রসুন্নাহ ও জীবনাদর্শের প্রতি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা। সার্বিকভাবে মহানবী (সাঃ) -এরআদর্শ অনুসরণ-অণুকরণের মাধ্যমে বর্তমান সমাজের অধঃপতন অবণতি থেকে মুক্তি লাভ করা সম্ভব।

আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ মক্কার  কোরাইশ বংশের একসম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুল্লাহ এবং মাতার নাম আমিনা। তাঁর জন্মের কয়েক মাস পূর্বেই পিতা আবদুল্লাহ মারা যান এবং শিশুকালেই তিনি তাঁর মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হন। মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় কিছুদিন দাদা আবদুল মুত্তালিব এরপর চাচা আবুতালিবের স্নেহে লালিত পালিত হয়ে বেড়ে ওঠেন শিশু মুহাম্মদ (সাঃ)।

তাঁর জন্মের সময় আরবের অবস্থা ছিল খুবই ভয়াবহ। সে সময়ের মানুষ ছিল হানাহানি, রাহাজানি, সন্ত্রাস, ব্যভিচার-ধর্ষণ, খুনখারাবিতে মত্ত। তারা ভুলে গিয়েছিল মনুষ্যত্ব। অজ্ঞতা-মুর্খতার চরম পর্যায়ে পৌছেছিল। সুশিক্ষার আলো হারিয়ে অন্ধকারের আবর্তে নিমজ্জিত হয়েছিল। যে কারণে সেইযুগকে‘আইয়ামেজাহিলিয়াত’বাজাহেলিয়াতেরযুগবলাহয়ে থাকে। বিশৃঙ্খলা, অজ্ঞতা-মুর্খতা, অনাচার-পাপাচার করতে করতে তখনকার মানুষ একেবারে জাহান্নামের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল।

মানবতার এই চরম দুঃসময়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -কে আল্লাহতায়ালা মুক্তির পথনির্দেশক মহাগ্রন্থ আলকুরআন দিয়ে জগতবাসীর জন্য রহমতস্বরুপ প্রেরণকরলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেছিলেন। জান্নাতের পথ দেখিয়েছিলেন।

শিশুকাল থেকে তিনি ছিলেনশান্ত, নম্রভদ্র ও সৎচরিত্রবান। সত্যবাদিতার কারণে সে সময়ের লোকেরা তাঁকেআল-আমীন উপাধীতে ভূষিত করেছিল। যুবককালে তিনি সমাজের কল্যাণে ব্রতী ছিলেন। সমসাময়িকদের সঙ্গী বানিয়ে তৎকালীনসময়ে‘হিলফুলফুজুল’নামক একটি সমাজ কল্যাণ সংস্থা গঠন করেছিলেন। এই সংস্থার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। ৪০ বছর বয়সে রাসূল (সাঃ) আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত প্রাপ্ত হন। নবুওয়াত প্রাপ্তির পর তিনি মানুষকে কালেমার দাওয়াত দিতে লাগলেন। সর্বপ্রথম পরিজন ও নিকটজনদের মাঝে ঘোষণা করলেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।” অর্থাৎ- “আল্লাহতায়ালা ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল।”মানুষকে বুঝালেন, এই কথাটি মুখে স্বীকার করা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং আল্লাহতায়ালার বিধি-নিষেধ মেনে চলার মধ্যেই ইহ-পরকালীন সুখ-শান্তি নিহিত রয়েছে। এভাবে কালেমার বাণী প্রচার করে মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান করতে লাগলেন।

রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কালেমার বাণী প্রচারের সাথে সাথে নিকটজন ও ঘনিষ্ঠ জনদের মধ্য থেকে হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ)-সহ অনেকেই কোন রকম অজুহাত ব্যতিরেকে সানন্দে তা গ্রহণ করে নেন। মক্কার মুর্তিপূজক ও অগ্নি উপাসকদের চরম বিরোধিতা ও চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রের মাঝেও মুসলমানদের সংখ্যা দিনদিন বাড়তে থাকে। সুতরাং বর্তমান সময়ে যারা ইসলামের বিরোধীতা করেন, ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চান- তাদেরকে বলবো, আপনাদের এই মনো বাসনা কখনই   পূর্ণ হবে না। আবু জেহেল, উতবা, সাইবা, উবাই, সুলূলরা পারেনি, আপনারাও পারবেন না। আপনারা যতই বিরোধিতা করবেন ইসলাম ততই প্রসারিত হবে। দ্রূত গতিতে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। দিকে দিকে ইসলামের বিজয় নিশান উড্ডীন হবে। এক আল্লাহ’র বিশ্বাসে বিশ্বাসী হোন। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) -কে আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল হিসেবে মেনে নিন। জেনে রাখবেন, মুসলমানরা মহানবী (সাঃ) -কে নিজের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। রাসূল (সাঃ) -এর কটুক্তি ও অবমাননা করে রাসূলপ্রেমীদের হৃদয়ে আঘাত করা হচ্ছে। আপনাদের জানা থাকা উচিৎ, কারো হৃদয়ে আঘাত করে নিজেরা সুখ-শান্তিতে থাকার আশা করা বোকামি। চামচিকার ভর্ৎসনা যেমনিভাবে সূর্যের আলো একটুও দমাতে পারেনা, কুকুরের ঘেউ ঘেউ পূর্ণিমার চন্দ্রের স্নিগ্ধতার বিন্দুমাত্র ক্ষতি সাধন করতে পারেনা; তেমনি আপনাদের নিন্দা ও কটুক্তির কারণে মহানবী রএকটুও অপমান হবে না। বরং তাঁর শান-মান আরো বৃদ্ধি পাবে। ইসলামের জাগরণ সৃষ্টি হবে। নবীপ্রেমিজনতা রসংখ্যা বাড়তেই থাকবে। ইসলামের ইতিহাস থেকে এটাই প্রমানিত।

আমাদের প্রিয়নবী (সাঃ) মক্কার মুর্তিপূজক ও অগ্নি উপাসকদের বাধা, ষড়যন্ত্র, জুলুম-নির্যাতনের মাঝেও তাওহীদের বাণী, মুক্তির পথনির্দেশক জীবন বিধান মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের বাণী প্রচার করতে লাগলেন। মানুষকে তাওহীদেরশিক্ষা-দীক্ষা দিতে লাগলেন। ধীরে ধীরে সমাজের নাজুক অবস্থার পরিবর্তন হতে লাগলো। বিদ্বেশ পোষণকারীরা যতই বিরোধিতা করলো ইসলাম ততই বিস্তৃত হয়েছে।

নবুওতেয়র একাদশতম বছর ৬২২ সালের জুন মাসে মক্কার আবু জেহেল ও তার দোসরদের জুলুম নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মহানবী (সাঃ) জন্মভূমি ত্যাগ করে মক্কা থেকে উত্তরদিকের ইয়াসরিব নামক শহরে হিজরত করেন। এই শহরের লোকজন দো’জাহানের বাদশাহকে যথাযথ মর্যাদার সাথে বরণ করে নেন এবংতাঁর দেখানো জীবন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করেন। মহানবী (সাঃ) -এর আগমনের ফলে ইয়াসরিব শহরের নাম হয়ে গেলো‘মদীনাতুন্নবী’- যার অর্থ: নবীর শহর। প্রিয়নবী (সাঃ) তৎকালীন সময়ের সামাজিক অস্থিরতার কারণগুলো চিহ্নিত করে তা দূরীকরণে তাগিদ দিলেন। খুনখারাবির বিরুদ্ধে ঘোষণা করলেন, ‘মানুষ হত্যা মহাপাপ।’এর করুণ পরিণতির কথা মানুষকে বুঝালেন। কুরআনে কিসাসের আয়াত নাযিল হলো- রাসূল (সাঃ) সমাজের লোকজনকে তা জানিয়ে দিলেন। ফিতনা-ফাসাদ দূরীকর ণেরাসূল (সাঃ) ঘোষণা করলেন, “ফিতনা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও জঘন্য অপরাধ।”ফিতনাফাসাদ, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, দুর্ণীতির কুফল ও পরিণতির কথা মানুষকে বুঝালেন। যেনা-ব্যভিচার ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। ব্যভিচার ও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান জারি করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, “অবিবাহিত পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে ব্যভিচারের শাস্তি একশত বেত্রাঘাত এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর। আর বিবাহিত পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে একশত বেত্রাঘাত ও রজম (‘রজম’ অর্থাৎ- পাথর মেরে মৃত্যুদন্ড)।”

বিশ্বনবী (সা:) এর জীবনাদর্শ মানবজাতির জন্য একটি কালজয়ী জীবন চরিত্র। তাঁর জীবনের মধ্যে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং পৃথিবীর জন্য শাশ্বত উন্নত চরিত্র রয়েছে। তাঁর চরিত্রের মধ্যেই মানবজাতির চির সুখ ও শান্তি নিহীত। মানুষে মানুষে হানাহানি ,মারামারি জুলুম নির্যাতন নিস্পেষণ তথা মানবজাতির মুক্তির জন্য মুহাম্মদ (সা:) এর আদর্শের বিকল্প নেই। আসুন আমরা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবনকে অনুসরণ ,অনুকর ণকরি। বাংলাদেশের প্রান্ত হতে হাজার লাখ সালাম জানাই হে রাসূল (সা:)।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla