

ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
মুসলিম উম্মাহর অন্যতম প্রধান ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের দিনটি অশেষ তাৎপর্য ও মহিমায় অনন্য। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার শেষে শাওয়ালের বাঁকা চাঁদ নিয়ে আসে পরম আনন্দ ও খুশির ঈদ। রোজাদার যে পরিচ্ছন্নতার ও পবিত্রতার সৌকর্য দ্বারা অভিষিক্ত হন, যে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, উদারতা, বদান্যতা, মহানুভবতা ও মানবতার গুণাবলি দ্বারা উদ্ভাসিত হন, এর গতিধারার প্রবাহ অক্ষুণ্ন রাখার শপথ গ্রহণের দিন হিসেবে ঈদুল ফিতর সমাগত হয়। এদিন যে আনন্দধারা প্রবাহিত হয়, তা অফুরন্ত পুণ্য দ্বারা পরিপূর্ণ। নতুন চাঁদ দেখা মাত্র রেডিও-টেলিভিশন ও পাড়া-মহল্লার মসজিদের মাইকে ঘোষিত হয় খুশির বার্তা—‘ঈদ মোবারক’। সেই সঙ্গে চারদিকে শোনা যায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত রোজার ঈদের গান: ‘ও মন্ রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ্। তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্ আস্মানী তাগিদ্ ’আজকের বিষয় নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ডা.এম এম মাজেদ তাঁর কলামে লিখেন করোনাকালে ঈদ উৎসব উদযাপনের জন্য বিপুলসংখ্যক কর্মজীবী মানুষ রাজধানী ঢাকা ও অন্য বড় শহর থেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। মহামারি করোনাভাইরাস এসে আমাদের ফেলেছে এক কঠিন অবস্থায়। সময়ের সঙ্গে যেন পৃথিবীও যেন তার আপন রং বদলে ফেলেছে। এক মহামারি মানবজীবনের স্বাভাবিক গতিধারাকে পাল্টে দিয়েছে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, খুশি-আনন্দের পরিবর্তে বেঁচে থাকার সংগ্রামটাই এখন মুখ্য হয়ে উঠেছে। তাই গত দুই ঈদের মতো এবারও আমাদের থাকতে হবে ঘরবন্দিই।
এইদিকে উৎসব আয়োজনে আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষের স্রোত থাকে পথ-ঘাটে। যারা বাড়িতে যাচ্ছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানায় তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক চলতে হবে। সবসময় মাস্ক পড়া, সঙ্গে হ্যান্ড সানিটাইজার রাখার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও। স্বাস্থ্যবিধি মানায় অবহেলা হলে করোনা ছড়িয়ে পড়বে দেশজুড়ে। তাই আপনি সচেতন হলেই, আপনার পরিবারই শুধু সুরক্ষিত থাকবে না, পুরো দেশই থাকবে ঝুঁকিমুক্ত। তাই গ্রামে গিয়েও উৎসব মানসিকতা পরিহার করে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।তবে গত বছরের মতো এবারও করোনা অতিমারির তাণ্ডবে ঈদের আনন্দ অনেকটাই নিষ্প্রাণ। এ বছর ঈদের আগে আগে আমরা সংক্রমণের নতুন পিক বা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সম্মুখীন হয়েছি, তবে এর মাত্রা একটু একটু করে নামতে শুরু করেছে। কিন্তু তাই বলে নিশ্চিন্ত হওয়া বা আত্মতৃপ্তির কিছু নেই, করোনা অতিমারি চলে যায়নি। যে কোনো বড় ধরনের উৎসব, জনসমাগম, গণচলাচলের পরই আবার সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখেই আমাদের এ বছর ঈদ করতে হবে। আর ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি, বুকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, ফ্রেমে বন্দি অসংখ্য স্থিরচিত্র, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়ের বাসায় বাসায় ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া, মজা করা মুসলমানদের জন্য মহা আনন্দের। আর এসব কাজকর্মও ঈদের সংস্কৃতির অংশ। তবে করোনা অতিমারির কারণে জগৎজুড়ে মানবজীবন আজ বিপর্যস্ত, ভেঙে পড়ছে অর্থনীতির চাকা। করোনা হানা দিয়েছে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক-শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় কার্যাবলিসহ সর্বক্ষেত্রে। কীভাবে ঈদ পালন করবেন, তা নিয়ে সব সময়ই থাকে নানামুখী পরিকল্পনা। কিন্তু ঈদের হাসিখুশি, আমেজ আর আনন্দ সবকিছু বদলে দিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। বিপর্যস্ত জনজীবন আর ঈদের আনন্দ এবার গৃহবন্দি, আতঙ্ক আর অস্বস্তির মধ্যে মানুষকে কাটাতে হচ্ছে সর্বক্ষণ।
ঈদে নিজ ঘরে থাকুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই ক্রান্তিকালে যে যেখানে আছেন, সেখানেই সীমিত পরিসরে নিজ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ করুন। মনে রাখতে হবে, বাড়ি গেলে আপনি আপনার মা-বাবা বা স্বজনদের, এমনকি পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের জনগণকেও ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারেন। গণপরিবহনে, ট্রেন-বাস, লঞ্চ বা উড়োজাহাজে যেভাবেই হোক, এ সময় চলাচল করা বিপজ্জনক। নিজের ও পরিবারের জন্য তো বটেই, যাদের কাছে যাচ্ছেন তাদের জন্যও। তাই করোনাকে শহর থেকে গ্রামে নিয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া কোনো ক্রমেই উচিত নয়। চলাফেরা, ভ্রমণ করা কিন্তু করোনা বিস্তার বাড়ায়, তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রটোকল বজায় রাখতে এবং খুব জরুরি না হলে ভ্রমণ ও ঘোরাফেরা থেকে বিরত থাকুন।
ঈদের কেনাকাটা বাচ্চাদেরসহ প্রিয়জনদের জন্য অনেকেই কেনাকাটা করতে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে ফুটপাতে, ছোট-বড় দোকানে, বিপণিবিতানে জনগণের উপচেপড়া ভিড়। এই জনসমাগম মহাবিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। শুধু অত্যাবশ্যকীয় জিনিস ছাড়া কোনো কিছু কেনাকাটা থেকে বিরত থাকুন। কেনাকাটা করতে দোকানে ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যাবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে দূরত্ব মেনে চলতে ভুলবেন না। অনলাইনে কেনাকাটার ওপর নির্ভর করতে পারেন।
ঈদের নামাজ কীভাবে পড়বেন ঈদের নামাজ বড় খোলামেলা ময়দানে পড়লে হাজার হাজার মানুষের ভিড় হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই উত্তম হবে, নিজের এলাকার কোনো মসজিদে নামাজের ব্যবস্থা করার। নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে বাসা থেকে অজু করে, জায়নামাজ নিয়ে যাবেন এবং মুখে মাস্ক পরে দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করবেন। এক জায়গায় সবাই ভিড় না করে সারিবদ্ধভাবে দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদে প্রবেশ করবেন এবং বের হবেন। তাড়াতাড়ি নামাজ সেরে যতটা কম সময় মসজিদে থাকা যায়, সে চেষ্টা করুন। যারা বয়স্ক, যাদের নানা ধরনের রোগবালাই আছে, তারা বাড়িতেই থাকুন। এই ভাইরাস সাধারণত ড্রপলেট দিয়ে ছড়ায়, যা ফ্লোরে পড়ে থাকতে পারে। তাই মসজিদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পূর্ণ সচেতন থাকতে হবে, যাতে ফ্লোর জীবাণুনাশক দিয়ে যথাযথ পরিস্কার করা হয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ মসজিদের প্রবেশপথ, মেঝে ও অজুর জায়গার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। প্রতিবার জামাতের নামাজের আগে মসজিদটি পুরোটা জীবাণুমুক্ত করে রাখবেন। এ কাজটি করা জরুরি।★ঈদ উৎসবে আর কী করা হয়ঃ-ঈদুল ফিতর মুসলমানদের সবচেয়ে বেশি আনন্দ উৎসবের দিন। এ উপলক্ষে প্রিয়জন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব অনেকেই একত্র হয়ে থাকেন। তবে করোনা অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত সবার মঙ্গলের জন্যই এ জমায়েত, নেমন্তন্ন, আসা-যাওয়া পরিহার করতে হবে। স্বল্প পরিসরে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িতে ঈদ উদযাপন করুন। স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে টেলিফোন বা ভিডিওকলে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারেন। কাউকে এ সময় দাওয়াত করবেন না, কারও দাওয়াতে নিজেরাও যাবেন না। জীবন সবার আগে, বেঁচে থাকলে আর সবাই সুস্থ থাকলে ভবিষ্যতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হবে। আগামীতে আরও ভালোভাবে ঈদ উদযাপন করার জন্য এটুকু ত্যাগ স্বীকার করুন। ঈদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে ঈদের নামাজ শেষে কোলাকুলি, মুসাফা বা করমর্দন, আর বড়দের পা ছুঁয়ে সালাম করা, ছোটদের চুমু দিয়ে আদর, বাচ্চা আর তরুণদের হুড়োহুড়ি, গরিব ও দুস্থদের আনাগোনা। এ ছাড়া পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের বাসায় যাওয়া, তাদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া, রাস্তাঘাটে, পার্কে, চিড়িয়াখানায় ঘোরাঘুরি, রেস্টুরেন্ট, পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রে আড্ডামারা- এভাবেই কাটে ঈদের দিনটি। কিন্তু পরিবার ও প্রিয়জনের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এগুলো পরিহার করতে হবে। শারীরিক দূরত্বের বেড়াজালে এবারও আক্ষেপ থাকবে কোলাকুলি করতে না পারার। জীবনের মূল্য সবচেয়ে বেশি- এ কথাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুতে অনেক পরিবারে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই হয়তো প্রিয়জনকে হারিয়ে সম্পূর্ণ নিঃস্ব, আবার করোনা আক্রান্ত পরিবারে ঈদ নয়, যেন মহাবিষাদ। এ ধরনের ঈদ গতবার এসেছিল, এবারও আসছে। তাই শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সপরিবারে আনন্দের সঙ্গে নিজ নিজ বাসায় ঈদ করবেন।
ভিন্নমাত্রায় ঈদ উদযাপন সর্বজনীন ঈদের আনন্দধারায় এবার কিছুটা হলেও বিঘ্ন ঘটবে। আমাদের ঈদযাত্রা যেন শবযাত্রায় পরিণত না হয়- এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তাই ঈদের আনন্দ মেটাতে প্রয়োজন দায়িত্বশীল আচরণ। করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। কঠিন পরিস্থিতি হলেও বেঁচে থাকাই হোক এবার ঈদ উদযাপনের অঙ্গীকার। আত্মসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আমরা নিজেরা সচেতন না হলে এর মাশুল হবে অনেক বিশাল, এমনকি ভালোবাসার মানুষের বিদায়ও অসম্ভব নয়।
সবার প্রতি আবেদন বা অনুরোধ :সবচেয়ে ভালো হবে, আপনার এবারকার ঈদ বাজেট বিপদগ্রস্ত দুস্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করুন। ঈদে অপ্রয়োজনীয় খরচ না করে ওই অর্থ অসহায় সহায়সম্বলহীন মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতে পারলে হবে সবচেয়ে বড় আনন্দ। সমাজের বিত্তবান ও সম্পদশালীদের প্রতি অনুরোধ, ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ- এই মর্মবাণী হৃদয়ে ধারণ করে অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান। জাতির এই দুঃসময়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা যেন অসহায়, দুস্থ, দরিদ্র ও খেটে খাওয়া অনাহারে-অর্ধাহারে জর্জরিত ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে অর্থ, জামাকাপড় ও খাদ্যসামগ্রী বিলিয়ে দেন। চলমান করোনার ক্রান্তিকালে নিম্ন আয়ের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা একেবারেই পঙ্গুত্বের পর্যায়ে। কঠিন সংগ্রামের মুখোমুখি বিশাল এই জনগোষ্ঠীর ঈদ একটা
উপলক্ষ মাত্র। তবে লক্ষ্য রাখবেন, দান-খয়রাত বা জাকাত দেওয়ার সময় যেন জনসমাগম না হয়। কোনোরকম ভিড় না করে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন।
সংক্রমণের হার কমতে শুরু করায় অনেকেই যে স্বস্তিতে আছেন, তা একেবারেই অমূলক। কারণ, লোকসমাগম ও চলাচল বাড়লে এ হার আবারও বাড়তে পারে। আমরা যদি আরও কিছুদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তবে করোনার সংক্রমণকে পরাস্ত করতে পারব। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে, আর তা হতে পারে আরও মারাত্মক। তাই কোনোভাবেই গা-ছাড়া ভাব, শৈথিল্যতা, উদাসীনতা, খামখেয়ালি- এসব করা যাবে না। উল্লেখ্য, করোনাকালে কিছু কিছু শব্দের সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি নতুন করে পরিচিত হয়েছি। বিশেষ করে এই করোনাকালের লকডাউন, আইসোলেশন কিংবা কোয়ারেন্টাইন শব্দগুলো। তবে প্রতিটি শব্দেই মিশে রয়েছে সময়ের দীর্ঘশ্বাস। রয়েছে বেদনা, আতঙ্ক ও নিঃসঙ্গতা। কভিড-১৯ রোগের করোনাভাইরাসের ভয়ে যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সবকিছু। মনের কোণে সামান্য আনন্দটুকুও যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে। নিশ্চুপ নিঃশব্দ এক পৃথিবীর চেহারা যেন বিশ্ববাসী দেখতে পেল। থমকে গেছে জীবিকা। হবেই বা না কেন যেখানে জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে পড়েছে। তবে মানুষ থেমে যেতে শেখেনি। তাই হয়তো করোনার ভয় আস্তে আস্তে মন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। পৃথিবীকে ফিরিয়ে নিতে চাইছে স্বাভাবিক গতিতে। বহির্বিশ্বের মতো এ দৃশ্য আমাদের দেশেও বিরাজমান। উৎসবের জাতি হিসেবে বাঙালি জাতির পরিচয় নতুন নয়। তবে এই ২০২০ সালে আমাদের দেখতে হয়েছে উৎসবের ভিন্ন রূপ।উল্লেখ্য, করোনাকালে কিছু কিছু শব্দের সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি নতুন করে পরিচিত হয়েছি। বিশেষ করে এই করোনাকালের লকডাউন, আইসোলেশন কিংবা কোয়ারেন্টাইন শব্দগুলো। তবে প্রতিটি শব্দেই মিশে রয়েছে সময়ের দীর্ঘশ্বাস। রয়েছে বেদনা, আতঙ্ক ও নিঃসঙ্গতা। কভিড-১৯ রোগের করোনাভাইরাসের ভয়ে যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সবকিছু। মনের কোণে সামান্য আনন্দটুকুও যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে। নিশ্চুপ নিঃশব্দ এক পৃথিবীর চেহারা যেন বিশ্ববাসী দেখতে পেল। থমকে গেছে জীবিকা। হবেই বা না কেন যেখানে জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে পড়েছে। তবে মানুষ থেমে যেতে শেখেনি। তাই হয়তো করোনার ভয় আস্তে আস্তে মন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। পৃথিবীকে ফিরিয়ে নিতে চাইছে স্বাভাবিক গতিতে। বহির্বিশ্বের মতো এ দৃশ্য আমাদের দেশেও বিরাজমান। উৎসবের জাতি হিসেবে বাঙালি জাতির পরিচয় নতুন নয়। তবে এই ২০২০ সালে আমাদের দেখতে হয়েছে উৎসবের ভিন্ন রূপ।পরিশেষে আমরা এখনো ধারণাও করতে পারছি না কবে এই করোনাভাইরাস বিদায় নেবে মানবজাতির কাছ থেকে।অবসাদ, মানসিক চাপ কাটিয়ে পৃথিবীর মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পাক। শহর ফিরুক তার নিজস্ব ছন্দে। প্রকৃতি ফিরুক নিজের নিয়মে। আমরা সেই সুদিনের প্রত্যাশায় পথ চেয়ে রই। পৃথিবী থেকে করোনার বিদায়ে মানুষ ঈদের আনন্দের চেয়ে বেশি আনন্দিত হবে। এবং সেই আনন্দই পৃথিবীর বুকে আসুক দ্রুত, এটা এই করোনা দিনের ঈদ প্রত্যাশা। দূরের, কাছের পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক।পরিশেষে আমরা এখনো ধারণাও করতে পারছি না কবে এই করোনাভাইরাস বিদায় নেবে মানবজাতির কাছ থেকে।অবসাদ, মানসিক চাপ কাটিয়ে পৃথিবীর মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পাক। শহর ফিরুক তার নিজস্ব ছন্দে। প্রকৃতি ফিরুক নিজের নিয়মে। আমরা সেই সুদিনের প্রত্যাশায় পথ চেয়ে রই। পৃথিবী থেকে করোনার বিদায়ে মানুষ ঈদের আনন্দের চেয়ে বেশি আনন্দিত হবে। এবং সেই আনন্দই পৃথিবীর বুকে আসুক দ্রুত, এটা এই করোনা দিনের ঈদ প্রত্যাশা। দূরের, কাছের পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক।