সন্দ্বীপ প্রতিনিধি
চলতি বছরের মার্চ মাসের ৭ তারিখ দুপুরে বাড়ির সামনে গিয়েছিল শিশু ২ বছর ৬ মাস বয়সী ইফাত। বাড়ির সামনে মাঠে মেরামতের জন্য অরক্ষিত অবস্থায় রাখা ছিল ট্রাক। সেই ট্রাকের নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয় ইফাত। দূর্ঘটনায় প্রথমে সন্দ্বীপ মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে স্হানীয় চিকিৎসার পর ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডান পা কেটে ফেলা হয়। চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয় সিফাত।
ইফাতের পরিবারের অভিযোগ ট্রাক মালিক শওকাত হোসেন ( কালাপানিয়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী) প্রথমে সহায়তার আশ্বাস দিলেও দূর্ঘটনার তিন মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সহায়তা পাননি। সহায়তা চাইলে উল্টো হুমকী দিচ্ছেন শওকত।
ইফাতের পিতা মোঃ মনির বলেন, আমার বাড়ির সামনে নষ্ট ট্রাক ফেলে রেখেছিল। ট্রাকের চাপায় আমার ছেলে পা হারায়। ছেলের চিকিৎসায় আমাদের ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিদিনই টাকা লাগছে। ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। ছেলের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে চাকরিও হারিয়েছি। টাকার অভাবে এখন আর চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিনে ২১ জুন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডে মোতালেব মার্কেট সংলগ্ন ইফাতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কেটে ফেলা ডান পায়ের নিচের অংশের ক্ষত এখনও শুকায়নি। বাম পায়ের ক্ষত অংশেও ব্যান্ডজ পরানো। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে শিশু ইফাত।
ইফাতের পরিবার জানায়, দূর্ঘটনার পর চিকিৎসা ব্যায় মেটানোর জন্য ট্রাক মালিক শওকত হোসেন, ট্রাক ড্রাইভার জাবেদ, ট্রাক মালিক সমিতি, ট্রাক চালক- শ্রমিক সমিতির প্রতিনিধিসহ মিটিং হয়েছিল। মিটিংয়ে চিকিৎসা খরচ দেবেন বলেছিলেন শওকত হোসেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এক টাকাও দেয়নি। সাহায্য চাইলে এখন উল্টো হুমকী দিচ্ছে।
ইফাতের পিতা মোঃ মনির বলেন, আমার ছেলের মোট ৫ টা অপারেশন হয়েছে। মিটিংয়ে ২ টা অপারেশনের পর থেকে সব খরচ শওকত হোসেনের দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১০ শতাংশের মধ্যে ৩ শতাংশ ড্রাইভার দেবে। বাকি টাকা দেবে মালিক।
ট্রাক ড্রাইভার জাবেদ বলেন, আমি ৩৬ হাজার টাকা মালিকের কাছে বেতন বাবদ পেতাম। সে টাকা চিকিৎসার জন্য দিয়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালাপানিয়া ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শওকত হোসেন বলেন, দূর্ঘটনারর জন্য আমি দায়ী না। ড্রাইভার দায়ী। তারপরও আমি ৫৪ হাজার টাকা দিয়েছি। আমি নির্বাচনের পরে আবার বসবো ইফাতের পরিবারের সঙ্গে।
কিন্তু ইফাতের পিতা মোঃ মনির বলেন, আমি শুধু ড্রাইভারের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি।
এ বিষয়ে সন্দ্বীপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন শিশু ইফাতের পিতা মোঃ মনির।
সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে এখনও কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে জানাবো।