চকরিয়া প্রতিনিধি
গরু ও মহিষ চুরি মামলায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত বর্তমান চেয়ারম্যান নবী হোসেন চৌধুরীকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। চেয়ারম্যান নবী হোসেনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় ২টি মহিষ চুরির মামলা রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মহেশখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ছিদ্দিক আহমদের পুত্র মো. নছিমের ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ৮টি মহিষ কয়েক বছর পূর্বে চিংড়ি ঘের থেকে চুরি যায়। চুরি যাওয়া মহিষগুলো নবী হোসেনের দখলে খবর পেয়ে মালিকপক্ষ তার সাথে যোগাযোগ করলে ফেরত দেবে বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
এর ফাঁকে মহিষগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেন। কোনো উপায় না দেখে মহিষের মালিক মহেশখালী থানায় ২০২১ সালের ৯ মে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর- জিআর ১২২-২০২১।
এই মামলায় বিভিন্ন চাপের মুখে চেয়ারম্যান নবী হোসেন মামলার এজাহার থেকে বাদ গেলেও পুলিশি তদন্তে চুরির ঘটনায় চেয়ারম্যান জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় চার্জশিটে ২নম্বর আসামি করা হয় তাকে। এ ছাড়াও এই মামলার অপর আসামি আবুল হাশেম চকরিয়ার সাহারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবী হোসেনকে ঘটনায় জড়িত করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
এই মামলায় উচ্চ আদালতে সম্প্রতি জামিনের আবেদন জানালে আদালত তাকে নিন্ম আদালতে হাজির হতে নির্দেশনা দেন। সেইমতে বৃহস্পতিবার ১৫ ডিসেম্বর কক্সবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবুল মনসুর সিদ্দিকীর আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেলে প্রেরণ করেন।
এছাড়াও মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাট এলাকার দুদু মিয়ার ছেলে এবাদুল হকের ৬ লাখ টাকা মূল্যের আরো ৪টি মহিষ ২০২১ সালের ৪ জুন রাতে খামার ঘর থেকে চুরি করে ট্রলারে নিয়ে চলে যায়। চুরির বিষয়টি বুঝতে পেরে নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলে ও খামারের পাহারাদার ঘাট থেকে অপর একটি ট্রলার নিয়ে চোরের পিছু নেয়।
এক পর্যায়ে সাহারবিলের চেয়ারম্যান নবী হোসেন চৌধুরীর বাড়ির গোপন আস্তানায় গেলে মহিষগুলো পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মহিষের মালিক এবাদুল হক বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় ২০২১ সালের ৫ জুন শাহারবিলের চেয়ারম্যান নবী হোসেনকে প্রধান আসামি করে মহিষ চুরির মামলা করেন।
কক্সবাজার চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি এডভোকেট নজরুল ইসলাম খান জানান, সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০২১ সালে মহেশখালী থানায় গরু ও মহিষ চুরির অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় নবী হোছাইনের বিরুদ্ধে চার্জশীটও দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
সম্প্রতি নবী হোছাইন চৌধুরী উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের জন্য জামিন নেন। ১৫ ডিসেম্বর ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরী কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট আবুল মনছুর সিদ্দিকী জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।