চট্টগ্রামে পল্লী ডাক্তার মেডিকেল কাের্সের নামে প্রতারণার অভিযোগ
চট্টগ্রাম নগর ও নগরীর বাইরের বিভিন্ন উপজেলায় পল্লী ডাক্তার মেডিকেল কোর্সের নামে ভুয়া অনুমোদনহীন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোর্সের নামে এ প্রতিষ্ঠানগুলো হাতিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন এলাকার বেকার অর্ধ শিক্ষিত যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা। এসব কোর্সে যারা ভর্তি হয়েছে তারাও জানে না এ প্রতিষ্ঠান কতটুকু বৈধ। সিভিল সার্জন এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মাঠে নামিয়েছেন একটি টিমও।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ার হোপ সোসাইটি এবং কমিউিনিটি মেডিকেল রিসার্চ এন্ড ইমপ্রোমেন্ট সোসাইটি নামের দুটি প্রতিষ্ঠান নগরীর আকবর শাহ, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ চৌমুহনী, আনোয়ারা চাতরী চৌমুহনী, বায়েজিদ, খুলশী, পাহাড়তলী, কর্ণেলহাট, চকবাজার, পটিয়া, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, লিচু বাগান, বোয়ালখালীসহ বিভিন্ন উপজেলায় ক্যাম্পাস খুলে এল.এম.এফ কোর্স, আর.এমপি কোর্স, ডি.এম. এস কোর্স, নার্সিং কোর্সসহ বিভিন্ন মেয়াদে ৮ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা ফি নিয়ে সনদ বাণিজ্য করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের কাছে কোর্স ফি দিয়ে যে কারো সনদ নেয়ার সুযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ভর্তি হওয়ার আগে মনে করতাম এখানে পেশাগত কোন কোন চিকিৎসক অথবা সরকারি বেসরকারি কোন মেডিকেল কলেজ বা হাসপাতালের এম.বি.বি.এস পাশ করা কোন ডাক্তার প্রশিক্ষন নেবেন। ভর্তি হওযার পর দেখলাম কোন প্রশিক্ষকই নেই তাদের। মানুষের বেকারত্বকে পুঁজি করে তারা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে কোর্স ফি দিয়ে বিভিন্ন কোর্সের সনদ নিচ্ছ। এখানে প্রশিক্ষন কোন বিষয় না মূলত টাকা দিলে সনদ পাওয়া যায়। নগরীর হালিশহর এলাকার আলতাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তি এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তিনি ঢাকা থেকে জয়েন স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন নিয়ে এ কার্যক্রম চালাচ্ছে। একইভাবে আওয়ার হোপ সোসাইটি নামের আরেক প্রতিষ্ঠানও একইভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত শাহদাত হোসেন জানান, আমি শুধু এখানে চাকুরী করি এ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন আছে কি নেই আমি বলতে পারব না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন ফোরামের মহাসচিব কামাল উদ্দীন জানান, মানুষের জীবন নিয়ে চিনিমিনি খেলতে দেয়া উচিত না। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে গ্রাম গঞ্জে গিয়ে সহজ সরল মানুষকে তারা চিকিৎসা সেবা দেয়ার নামে অপচিকিৎসা করবে, তারা মানুষকে ক্ষতি করবে এবং তাদের ভুল চিকিৎসার কারণে মানুষের মৃত্যু হবে। এসব প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোরালে দাবি জানান।
আওয়ার হোপ সোসাইটির পরিচালক মোহাম্মদ এরশাদ জানান, আমি এক সময়ে আলতাফ সাহেবের প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতাম, এখন আমি নিজে প্রতিষ্ঠান দেয়ার পর তিনি আমার বিরুদ্ধে লেগে আছে, আমি আমাদের প্রতিষ্ঠানকে হেয় করতে আমাদের বিরুদ্ধে লেগে আছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের গোপনী শাখার সহকারী মফিজুল আলম জানান, যে দুটি প্রতিষ্ঠান পল্লী ডাক্তারদের কোর্স করাচ্ছে এগুলো একটারও অনুমোদন নেই। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন কাগজ পত্রও আমাদের কাছে নেই, তারা অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
পল্লী ডাক্তার ট্রেনিং কোর্স থেকে ১ মাস কিংবা ১৫ দিনের কোর্স নিয়েও পল্লী চিকিৎসক হওয়া যায়। জাল সনদ কিনা এসব যাচাইও করে না এসব প্রতিষ্ঠান ।শুধুমাত্র মোটা অংকের টাকা দিলে সব হয়ে যায়। ডাঃ সাজ্জাদ নামক জনৈক ব্যাক্তি প্রশিক্ষক পরিচয় দিয়ে কথা বললেও তিনি স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি। ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার জনৈক নজরুল এই প্রতিষ্ঠানের মালিক পরিচয় দিলেও সিভিল সার্জন বা স্বাস্হ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এখনো নেননি বলে জানান। ২০০৮ সাল থেকে এইরকম ভাবে তারা পল্লী ডাক্তার বানিয়ে আসছে বলে দাবী করেন । বাবর ও জহির নামক দুই ব্যক্তি পল্লী ডাক্তার ট্রেনিং কোর্স আকবর শাহ শাখা পরিচালনা করেন দাবী করে একেকজন একেকরকম কথা বলেন ও এই প্রতিনিধিকে দুপুরে ভাত খাবার অপারসহ নানান কথা বলেন যা অপ্রাসাঙ্গিত ।