1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
আবারও আসছে তিনদিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক তাপদাহে পুড়ছে দেশ, ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড রাজধানীর সৌদি দূতাবাসে আগুন উত্তর চট্টগ্রামে এই প্রথম ফ্যাকো অপারেশন শুরু করছে চট্টগ্রাম গ্রামীণ চক্ষু হাসপাতাল সীতাকুণ্ডে বৃষ্টির জন্য ইস্তাহার নামাজ আদায় শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মধ্যে ভোটের যুদ্ধ সন্দ্বীপে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার  চট্টগ্রামে র‌্যাবের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৪

মাঠ জরিপ চলছে , কপাল পুড়বে বিতর্কিত-জনবিচ্ছিন্ন এমপিদের

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ৭ মে, ২০২২
  • ১৪৪ বার পড়া হয়েছে

ফেঁসে যেতে পারেন দলের অনেক প্রভাবশালী সংসদ সদস্য এমনকী মন্ত্রীরাও

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা জয়ের ধারাবাবাহিকতা ধরে রাখতে নৌকার প্রার্থী বাছাইয়ে মাঠ জরিপের কাজ চলমান রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মাঠ জরিপের কাজ মনিটরিং করছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় নির্বাচনে যারা নৌকার বিরোধিতাকারী, বিতর্কিত, জনবিচ্ছিন্ন, গ্রুপিংবাজ সেই সব সংসদ সদস্যরা দ্বাদশের নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। বিতর্কিত-জনবিচ্ছিন্ন এমপিদের কপাল পুড়বে বলে মনে করছে দলীয় নীতি-নির্ধারণী সূত্র।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে— আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চলতি মাস থেকে তৃণমূলের ত্যাগী-পরিশ্রমী ও পরীক্ষিত-পদবঞ্চিত দুর্দিনে মাঠের আন্দোলন-সংগ্রামের সক্রিয় থাকা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর কৌশল নিতে যাচ্ছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে দেখা সাক্ষাতের বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রয়োজন পরিসরে বাড়ানো হচ্ছে। তাই গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় নেতা, সংসদ সদস্যসহ তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান সাক্ষাৎতের পরিসর বাড়তে যাচ্ছে।

শনিবার ৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার‌্যনির্বাহী সংসদের সভার থেকে প্রয়োজন পরিসরে গণভবনে দলীয় যোগাযোগ বাড়ানোর কৌশল নিতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেবিলে দলীয় সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সংগঠনবিরোধী নানামুখী অভিযোগ জমা হয়েছে। এ সব অভিযোগের মধ্যে দলের পক্ষ থেকে পৌরসভাসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, ‘এমপি বলয়’ ‘বিদ্রোহীদের পক্ষাবস্থান বা ইন্ধনে দলের অভ্যন্তরে কোন্দল সৃষ্টি’র অভিযোগ জমা পড়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক টিমের নেতারাও এসব বিষয়ে দলীয় সংসদ সদস্যদের বিষয়ে মৌখিকসহ প্রতিবেদন আকারে নানামুখী অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তৃণমূলের ওই সকল অভিযোগপত্র এখন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার টেবিলে। ভবিষ্যতে এ সব সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ফেঁসে যেতে পারেন দলের অনেক প্রভাবশালী সংসদ সদস্য-মন্ত্রীরা বলে মনে করছেন দলের নীতি নির্ধারণী মহল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক  বলেন, ‘আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এই দলটিকে এত সময় ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যে দলটির সব তিনি চেনেন, ভালো চেনেন, ভালো বোঝেন। সে কারণেই তিনি দল হোক নির্বাচনে মনোনয়ন হোক; সময় উপযোগী করে সাজিয়ে থাকেন এবারও সেভাবেই সাজাবেন।’

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোয়নের ক্ষেত্রে কী গুরুত্ব পাবে বলে মনে করছেন জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকে দিতে হবে। অবশ্যই তাকে সৎ নির্ভীক হতে হবে,  এমন প্রার্থীকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।’

নানক বলেন, ‘যাদের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে তাদের ব্যাপারে সার্ভে চলছে। সবার আমলনামা নেত্রীর কাছে আছে। বারবার মাঠ জরিপ করে তিনি আমলনামা নিচ্ছেন। সেই আমালনামা অনুসারে কোনো নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কেউ রেহাই পাবে না, কেউ না। সে যত বড় নেতাই হোক, আর যত বড় যেই হোক কেউ রেহাই পাবেন না।

দলীয় সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের অনেক সংসদ সদস্য-মন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় তাদের অনুগত নেতারা মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে-অপকাশ্যে বিরোধিতা করছেন। দলীয় মাঠ জরিপে উঠে এসেছে, ওইসব সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার অবস্থাও নাজুক। কারণ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর অনেক সংসদ সদস্য-মন্ত্রী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজ নিজ সংসদীয় আসনে জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে। অনেকে তৃণমূলের ত্যাগী-পরিশ্রমী ও পরীক্ষিত-পদবঞ্চিত দুর্দিন-দুঃসময়ে আন্দোলন-সংগ্রামের সক্রিয় থাকা অনেক নেতা রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বির্তকিত এসব সংসদ সদস্য/মন্ত্রীরা এলাকায় নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন।

টানা তৃতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলে ও জেলা-উপজেলায় দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল উপদল গ্রুপিং এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। তৃণমূল জুড়ে কোথাও কোথাও ‘ভাই লীগ’, ‘এমপি লীগ’সহ নানামুখী বলয় ভিত্তিক রাজনীতির প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে অনেকে নিজের গ্রুপ বা বলয় শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত পরিবার থেকে আসা বিতর্কিতদের নানাভাবে কাছে টেনে নিয়েছেন। ফলে দলের অনেক ত্যাগী, পরিশ্রমী, পরীক্ষিত বা দুর্দিন –দুঃসময়ের নেতারা অভিমান করে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন।

এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা বা আগামী দিনে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে তৃণমূল আওয়ামী লীগে নানামুখী সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ জরিপের কাজ চলমান রেখেছেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে। কাজেই ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাননীয় নেত্রী ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থীদের চিহ্নিত করার কাজ এগিয়ে রাখছেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সারাবাংলা’কে বলেন, ‘রিপোর্ট তো করাই আছে। একটি বিভাগের কয়জন বিরোধিতা করে নৌকা ডুবাইছে, এটি আমাদের সবার জানা। এটি দলীয় নেতৃবৃন্দও জানেন, নেত্রীও জানেন। যে মাঝি নৌকা ডুবাই তাকে দ্বিতীয়বার আর নৌকা (মনোনয়ন) দেওয়া হবে না।’

ঢাকা বিভাগের এরকম কতজন এমপি-মন্ত্রী নৌকার মাঝি হয়ে নৌকা ডুবিয়েছে বলে মনে করেন জানতে চাইলে মির্জা আজম বলেন, ‘৭/৮ জন তো হবেই। মন্ত্রীও দুই তিনজন আছেন।’

আগামীতে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমার বিশ্বাস তাদের ব্যাপারে নেত্রী উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। ’

মির্জা আজম আরও বলেন, ‘মনোনয়নে নৌকা না পেলে কিংবা বাদ পড়লেও এটিও তো বড় পানিশমেন্ট।  সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেত্রীর। নমিনেশনের সময় একটি আসনের বিপরীতে চার-পাঁচজন করে প্রার্থী হন। এখান থেকে যে কোনো একজনকে নমিনেশন দেওয়া হবে। আগে তিনি কী ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন নাকি এমপি ছিলেন এগুলো হিসাবের মধ্যেই পড়বে না।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সভাপতি কোনো আলাদা প্রস্তুতি শুরু করেছেন কি না জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘আমাদের নেত্রী রাজনৈতিকভাবে দক্ষ এবং বিচক্ষণ। তিনি ৪২ বছর আওয়ামী লীগের হাল ধরে আছেন। আমাদের নেত্রী তো সব ধরনের নেতাকেই চেনেন, সব ধরনের প্রার্থীকেই তিনি চেনেন। গোটা বাংলাদেশ তার নখদর্পণে। তাকে আলাদাভাবে কোনো প্রস্তুতি নিতে হয় না। তিনি সুযোগমতোই বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। কেননা সারা বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতির হালচাল তার ‍মুখস্থ। দ্বাদশ নির্বাচনেও তিনি যুৎসই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন। ’

টানা ছয় বারের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘আগামী নির্বাচনটা একটি চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। এটি আমরা বুঝতেছি। সে কারণেই নেত্রী হিসাব-নিকাশ করেই যোগ্য  প্রার্থীকে নমিনেশন দেবেন। এলাকায় যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, যাদের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার নেই। যারা বিতর্কের ঊর্ধ্বে তারাই কেবল মনোনয়ন পাবেন।’

মির্জা আজম এ সময় ইঙ্গিত দেন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে অন্তত একশ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla