1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
হত্যার চেয়েও আত্মহত্যা তিনগুণ গোপন অপরাধ বেড়ে চলছে - পূর্ব বাংলা
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
১৩ তম রাফি স্মৃতি টি-টুয়েন্টি গোল্ড কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’২৫ ফাইনাল খেলা সম্পন্ন ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন বায়েজিদ বোস্তামী ও মালেক শাহ (র.) ওরশ সম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফোরকানিয়া মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

হত্যার চেয়েও আত্মহত্যা তিনগুণ গোপন অপরাধ বেড়ে চলছে

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২
  • ২২১ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি

যারা বলেন, বাবা-মার সাথে একটু ঝগড়া হইলেই মইরা যাওয়া লাগে?…তিন বছর ধরে সুইসাইডাল চিন্তায় ভুইগা আমার এতদিনে সাহস হইসে।…আপনার মনে হয় আমার খুব ইচ্ছা ছিল মরার? বাধ্য হইসি। আপনাদের তৈরি সমাজ আর পেরেন্টিংয়ের কারণে..।’

এটি ময়মনসিংহের সরকারি বিদ্যাময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্ক প্রিয়া ধর শ্রীজার ফেসবুক আইডিতে দেওয়া ১৩ মার্চের স্ট্যাটাস। ওইদিন বেলা ২টার দিকে নগরীর স্বদেশী বাজারের ‌রাইট পয়েন্ট নামক বহুতল ভবন এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শ্রীজা ধর ময়মনসিংহ কমার্স কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক স্বপন ধর ও মুক্তাগাছা উপজেলার স্কুল শিক্ষিকা অর্পণা দের মেয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবে সুইসাইড নোট লিখে বা লাইভে এসে আত্মহত্যা করার বাড়ন্ত প্রবণতা চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে অনেককে।
শ্রীজার সুইসাইড নোটে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে তার পরিবারের অমিলের কথা, প্যারেন্টিংয়ের ‘ত্রুটি’ এবং পরিবার তাকে বুঝতে না পারার কথা রয়েছে। দীর্ঘ তিন বছর ধরে সে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আসছিল। যা তার পরিবার টের পায়নি।
দেশে বর্তমানে হত্যার চেয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা তিনগুণ, কখনও চারগুণেরও বেশি। দুই দশক আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে

অনুপাতে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হতো, তা এখন কমেছে। তবে বেড়েছে আত্মহত্যা। মানুষ এখন অন্যের ওপর যতটা না আক্রমণাত্মক হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি নিজেই নিজেকে হত্যা করছে।

২৮ মার্চ দুপুর সাড়ে বারোটায় একজন নারী কলার ঢাকার হাতিরঝিলের মধুবাগ থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, তার ভাই আত্মহত্যা করার জন্য তার রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা খোলেনি। তারাও চেষ্টা করে দরজা খুলতে পারেননি। এরপর হাতিরঝিল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে ২৫ বছরের ওই তরুণকে উদ্ধার করে। সে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বিশ্বব্যাপীই এমন ঘটনা বাড়ছে। এখন মানুষ অন্যের হাতে যতটা না খুন হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি নিজেকে নিজে খুন করছে। এর প্রধান কারণ, মানুষ তার মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখছে না। হত্যাকারী ও আত্মহত্যাকারী দুজনই অসুস্থতায় ভোগে।’

রাজধানীতে ২০২০ সালে ২১৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৬১৭টি। শিশু থেকে বয়স্ক, শ্রমজীবী থেকে উচ্চবিত্ত-নিম্নবিত্ত, শিক্ষিত-কমশিক্ষিত, সব ধরনের মানুষই আছে এ তালিকায়।

২০২১ সালে ঢাকা মহানগরীতে ১৬৬ জন খুন হন। একই বছর আত্মহত্যা করে ৬৯৫ জন। যা খুনের তুলনায় চারগুণেরও বেশি।

গবেষকরা বলছেন, হত্যা ও আত্মহত্যা; দুটোর পেছনেই সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ জড়িত। কেউ নিজের ইচ্ছায় হত্যাকারী বা আত্মহত্যাকারী হয় না। সামাজিক নানা কারণে হয়ে থাকে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার বলেন, ‘একটি মানুষের মানসিক গঠনে যেসব বিষয়গুলো ভূমিকা রাখে সেগুলোর কোনও একটি বিষয় যদি অনুপস্থিত থাকে তাহলে তার প্রভাব তার কার্যক্রমে দেখা যায়। একজন হত্যাকারীর ভেতর দেখা যাবে মানবিক অনেক কিছু অনুপস্থিত। তার গঠন ঠিক মতো হয়নি। সে অন্যের স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তার মূল্যবোধের জায়গাটিও তৈরি হয়নি। সঠিক শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে একজন মানুষ হত্যাকারী হয়ে ওঠেন। আবার যিনি আত্মহত্যা করেন তার পেছনেও অনেকগুলো কারণ আছে। মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা উভয়ের জন্যই জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের যেসব এলাকা বা স্থানের মানুষ বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা থেকে পিছিয়ে রয়েছে সেখানকার মানুষের মধ্যে তুলনামূলক হত্যা, যৌতুকসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবণতা বেশি দেখা যায়।’

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সোশাল ইস্যুগুলো মানুষকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আত্মহত্যার নেপথ্যে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে এক গবেষণায় আমরা দেখেছিলাম পারিবারিক ও সামাজিক কারণেই বাংলাদেশে আত্মহত্যার ঘটনাগুলো ঘটছে।’

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। সামাজিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বোধ যাতে বৃদ্ধি পায় এমন শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। তাহলে সমাজ থেকে অপরাধ ও অপরাধী দুটোই কমবে।’

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla