বিএনপির চেয়ারপারসন তারেক রহমান সমীপে,
শ্রদ্ধেয় তারেক ভাইজানরে ,
গরম গরম কথার শুরুতে আমার লাখ কোটি সালাম জানিবেন। আশা করি, আল্লাহ মালিকের অপার মহিমায় ভালো থাকিয়া নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে নানান ফর্মূলা তৈরী ও বাস্তবায়ন করিয়া ভালোই আছেন। আমিও গ্রাম বাংলার এক মফস্বল শহরে থাকিয়া দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়া ভাবিয়াই নানান রকম চিন্তা করিয়া ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্ছার মতো খাইয়া না খাইয়া বাঁচিয়া আছি।
গেলবার ত্রাণ, পুর্ণবাসন ও দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্ঠা ফারুক- ই- আজম সমীপে গরম কথা লিখিবার সময় এইবার আপনার সমীপে লিখিব বলিয়াছিলাম বলিয়াই আপনাকে লিখিতেছি বলিয়া রাগ করিবেন না বরং শত ব্যস্ততার মধ্যেও গরম কথাটুকু পড়িয়া দেখিবেন ও যাহা প্রয়োজন তাহা করিবেন আর ভুল হইলে নিজ গুনে মাফও করিয়া দিবেন। এর আগে প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সমীপেও গরম কথা লিখিয়াছিলাম ও যথাযথ কিছু কাজও হইয়াছে বলিয়া শুনিয়াছি।
তারেক ভাইজানরে ,
আপনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন। এছাড়াও দৈনিক দিনকাল সংবাদপত্রের প্রকাশক। আপনি সাধারণত তারেক জিয়া নামে পরিচিত যার শেষাংশটি আসিয়াছে আপনার পিতা বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম থেকে।
আপনার পিতা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসাবে যোগদান করিয়া আপনি রাজনৈতিক জীবন শুরু করিয়াছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দিবার পূর্বেই আপনি রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আপনার মা খালেদা জিয়ার সহচর হিসাবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়াছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনেও আপনি বেগম জিয়ার প্রচারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালাইয়াছেন। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় আপনার অংশ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতিতে আপনার সক্রিয় আগমন ঘটিয়াছে। যাক, সেই সব কথা।
ভাইজানরে,
আপনি বলিলেন, ‘শেখ হাসিনার বিচার না হইলে, আগামীর নেতৃত্ব হত্যাকান্ডে উৎসাহ পাইবে। ১৬ বছর ধরিয়া যাহারা হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাহাদের বিচারের আওতায় আনিতে হইবে। সংস্কারের নামে কোনো ষড়যন্ত্র হইলে দেশে অশান্তি সৃষ্টি হইবে। যত দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হইবে, তত দ্রুতই বাংলাদেশ সঠিক পথে হাঁটিবে। বর্তমানে আমাদের ভিতর অনেক অনুচর প্রবেশ করিয়া বিভ্রান্তি তৈরির নীলনকশা করিতেছে।’ একই সভায় রিজভী আহমেদ বলিলেন, সরকারের ভিতর এখনো হাসিনার দোসররা লুকিয়া আছে। বরকতউল্লা বুলু বলিলেন ন্যূনতম সংস্কার করিয়া নির্বাচনের সুযোগ করে দিন। ১৭ বছরের বিএনপির শ্রম, ঘাম ও রক্তের ওপর আপনারা উপদেষ্টা হইয়াছেন।
ভাইজানরে,
৫ আগষ্টের পর সারাদেশের আপামর জনসাধারণ আপনার বক্তব্য ও বিবৃতির প্রশংসা করিতেছে।এমনকি আপনাদের চিরপ্রতিদ্বন্ধি আওয়ামী লীগও আপনার বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করিতেছে না।অনেকের মুখে বলিতে শুনিয়াছি এমনও হইতে পারে সুষ্ঠু ও অচিরে ভোটের দাবীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এক হইয়া আন্দোলন করিলে অবাক হইবার কিছুই নাই। তবে জামায়াত ইসলাম আপনার বক্তেব্যর কিছু কিছু সমালোচনা না করিলেও সব বক্তব্য সাপোর্ট করিতেছে না।অবস্থাদৃষ্টে মাঠে ময়দানে মনে হইতেছে জামায়াত ইসলাম যেন আপনাদের প্রতিদ্বন্ধি।সংস্কারের নামে নির্বাচন দেরী করা মানে দেশে আরো একটি ভয়াবহ সংকট তৈরী হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা দাবী করিতেছে। বিষয়টি গভীরভাবে ভাবিবেন।
ভাইজানরে,
সারাদেশে আওয়ামী লীগের লোকেরা দুইনম্বরী যেইসব কাজ করিত সেস্থানে এখন আপনার দলের লোকেরা ভাগ বসাইতেছে।এই দশা দেখিয়া কেউ কেউ বলিতেছে ‘যে যায় লঙ্কায়, সে হয় রাবণ’ আবার অনেকেই বলিতেছে ‘যেই লাউ সেই কদু’।এইসব অপবাদ থেকে বাঁচিতে হইবে। যদি পারেন প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশে চলিয়া আসুন।এখন তো জেলজুলুমের ভয় নাই। শ্লো পয়জন দিয়া আপনাকে মারিয়া ফেলিবে এই অভিযোগও নাই। নাই মামলা হামলার ঝুঁকিও।মনে রাখিবেন কেউ ভোট জিতাইয়া প্রধানমন্ত্রী করিয়া আপনাকে বাংলাদেশে আনিবেন না।জাতীয় নির্বাচন দিতে ও আপনার দেশে আসিতেছে যতই দেরী হইবে ততই ষড়যন্ত্রের ডালপালা গজাইবে।পরিস্থিতি দিনদিন পরিবর্তন হইবে না এটাও বিশ্বাস করা যায় না।
আজ আর নয়।আপনার মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনায় ইতি আপনারই গ্রাম বাংলার অখ্যাত ঠান্ডা মিয়া
গ্রন্থনা : ম. আ. হ
আগামী সংখ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন সমীপে ঠান্ডা মিয়ার গরম কথা ( ৩৪৩)হইবে। গত সংখ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক -ই -আজম সমীপে ঠান্ডা মিয়ার গরম কথা ( ৩৪২) প্রকাশিত হইয়াছে।