এম. হায়দার আলী অতিথি প্রতিবেদক
সূর্যের আলো ফোটার স্যাথে সাথে কানফাটা আওয়াজ করে ডাকতে ডাকতে মগভালে বসে পড়ে যুগল ‘পাকড়া, খনেশ’। তাদের আওয়াজে মুখর হয়ে উঠে আশপাশ। যেন ডাক দিয়ে জানান দিয়ে বলছে, ‘আমিই ধনেশ’। বাংলাদেশের আবাসিক পাখি পাকড়া ধনেশ। এটি উদয়ী পাকড়া ধনেশ নামেও পরিচিত। ২রা জানুয়ারী বৃহস্পতিবার কাপ্তাই ব্যাংঙছড়ি এলাকায় এ প্রজাতির কিছু পাখির দেখা মিলে। সাথে সাথে নানা রূপে তাদের ক্যামেরাবন্দি করা হয়। পাখিটি নিয়ে বন্যপ্রাণী আলোকচিত্রী নোবেল চাকমা বলেন, রাজ ধনেশ, উদয়ী পাকড়া ধনেশ এক সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের কিছু পাহাড়ি এলাকা ও সিলেটে বেশি দেখা যেত। এখন কোথাও রাজ ধনেশ স্বাভাবিকভাবে বিচরণের দেখা মিলে না। কয়েক দশক ধরে এদের বংশবৃদ্ধি কমে গেছে। রাজ ধনেশ যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে,আমরা যদি পরিবেশ সংরক্ষণ না করি এবং বিচরণ ক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণ না করি, তাহলে অচিরেই পাকড়া ধনেশও হারিয়ে যেতে পারে। এখন বিপন্নের তালিকায় পাখিটির নাম উঠেছে। পাখিটি অঞ্চল ভেদে ‘কাউ ধনেশ’ নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন ও মালয়েশিয়াসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এদের বিচরণ রয়েছে। এদের দৈর্ঘ্য ৯০ সেন্টিমিটার। শরীরের উপরের দিক চকচকে কালো। আর নিচের দিকের রঙ সাদা। গলায় পালকহীন নীল চামড়ার পট্টি রয়েছে। এ প্রজাতির পাখিরা সাধারণতজোড়ায় জোড়ায় থাকে। বনের ছোট বড় সব ধরনের নরম ফল এদের পছন্দের খাবার। এছাড়া পাখির ছানা, ডিম,ইঁদুর, ব্যাঙ, সরিসৃপ খেয়ে জীবন ধারণ করে এরা। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ যদি তাদের সংরক্ষণ, তাদের জন্য স্বাভাবিক ও নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিতে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বন্যপ্রানী আলোকচিত্রী ও পাখি প্রেমিরা।