মাহমুদুল হক আনসারী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাভি হলো সচিবালয়। প্রশাসনিক দপ্তরের যাবতীয় ফাইল সচিবালয়ে সংরক্ষিত থাকে। উপজেলা থেকে জেলা বিভাগীয় পর্যায়ের সমস্ত নতিপত্রের ফাইল সচিবালয়ে সংরক্ষিত হয়। বাংলাদেশের সরকার ও জনগনের অতিব গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর স্থান হলো সচিবালয়। দেশের সব ধরণের প্রশাসনিক ফাইল এখানে সংরক্ষিত হয়। মন্ত্রি, এমপি, সচিবগন এই সব ফাইলের উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। এই ফাইলের মধ্যে দেশের সমস্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাজেট সবকিছু সংরক্ষিত থাকে। সচিবগন ফাইল পর্যালোচনা হিসেব নিকেশ করে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উপজেলা, সেখান থেকে জেলা বিভাগীয় পর্যায়ের যাবতীয় ফাইল সচিবালয়ের দাপ্তরিক কাজ শেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচি অগ্রগতি বাস্তবায়িত হয়।
ফলে এই সচিবালয় হলো ১৮ কোটি মানুষের হৃতপিন্ড। তাই সচিবালয়ের নিরাপত্তা, রক্ষণাবেক্ষণ জাতির জন্য ব্যাপক গুরুত্ব বহন করে। এখানে দূর্ঘটনা অর্থ জাতির শরীরে ক্যান্সার। শরীরের সুস্থতা নিরাপত্তা রাখতে হলে বডি ভালো রাখতে হবে। রাষ্ট্রকে শৃঙ্খলায় শান্তিতে স্থিতিশীল রাখতে চাইলে প্রশাসনকে অবশ্যই শৃঙ্খলায় রাখতে হবে। প্রশাসনের সমস্ত শাখা প্রশাখা সচল এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। ইউ,পি থেকে শুরু করে সচিবালয় পর্যন্ত কর্মকর্তা কর্মচারিদের আনুগত্য শৃঙ্খলা দায়িত্বনুভূতি পূর্ণ কাজ আদায় করতে হবে। রাষ্ট্রের উন্নয়ন অগ্রগতি জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রথম কাজ। সরকারের যেই দলই থাকুক না কেন তার প্রথম কাজ হলো সমস্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের শৃঙ্খলায় রাখা। প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক দেশ চলতে পারে না। এখানে গণতন্ত্র থাকবে। রাজনৈতিক দল থাকবে। সরকারি দল বিরোধি দল থাকবে। মত পার্থক্য থাকবে। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপত্তা বিষয়ে জাতীয় ঐক্য থাকতে হবে। রাষ্ট্রের সমস্ত সীমানা নিরাপদ রাখতে হবে। জনগনের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো ধরণের আপোষ ও ষড়যন্ত্র প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। ষড়যন্ত্র চক্রান্ত যে বা যারা করুক না কেন ছাড় দেয়া যাবে না। সেটি রাজনৈতিক হোক, দেশি বিদেশি অথবা অন্য যে কোনো পক্ষ থেকে হোক না কেনো কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না। নাগরিক নিরাপত্তা, জাতীয় নিরাপত্তা সার্বভৌমত্বের নিরাপত্তা সর্বাগ্রে। রাষ্ট্র পরিচালনায় কে আছে কে নেই সেটি দেখার বিষয় নয়। বাস্তবে তারা কি করছে, কতটুকু করতে পারবে সেটিই দেখার বিষয়। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা নিরাপদ রাখতে দেশপ্রেম দেশাত্ববোধ প্রশাসনিক দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে হবে। এই জায়গায় অবহেলার জন্য কাউকেই ছাড় দেয়া যাবে না। রাষ্ট্রের সাথে বেঈমানি ও ষড়যন্ত্রকারী কাউকেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য থাকা চাই। প্রতিটি ইঞ্চি মাটি নিরাপত্তার বেষ্টনিতে রাখতে হবে। শাসক দলকে জাতীয় ও স্থানীয় নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো ধরণের অবহেলার সুযোগ দেয়া যাবে না।
চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করে দেশকে যারা পিছিয়ে নিতে চায় তাদেরকে মোটেও সুযোগ দেয়া যাবে না। দূর্নীতির মাধ্যমে দেশকে যারা পিছিয়ে রাখতে চায় তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আ্ওতায় আনতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী, পাচারকারি কাউকেই ছাড় দেয়া যাবে না। অতীতে যা হয়েছে তার বিচার করতে হবে। অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া জনগন স্বাগত জানায়। সেই কর্মসূচিতে কোনো ধরণের অবহেলা জনগন গ্রহন করবে না।
ফাইলে আগুন দিয়ে, অফিস দপ্তর পুড়িয়ে ফেলে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ষড়যন্ত্রের সৃষ্টি কোথা থেকে সেটিও চিহ্নিত করতে হবে। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা চিহ্নিত হবে তাদেরকে প্রকাশ্যে শাস্তির আ্ওতায় আনতে হবে। নতুন করে অগ্নিকান্ড থেকে ভূমিকম্প পর্যন্ত রাষ্ট্রিয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনিকে কঠোর ভাবে চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এতো গুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনির তৎপরতার চোখকে ফাকি দিয়ে কিভাবে অপরাধগুলো সংগঠিত হয়, সেটি সচেতন জনগনের প্রশ্ন।
জাতীয় নিরাপত্তা শৃঙ্খলা প্রশ্নে আপোশহীন স্বিদ্ধান্তে রাষ্ট্র চালাতে হবে। দেশের কোটি কোটি যুব সমাজকে স্বশস্ত্র ট্রেনিংয়ের আ্ওতায় আনা চায়। আর যেনো জাতীয় দূর্ঘটনার সংবাদ শুনতে না হয়। গুরুত্ব পূর্ণ সবগুলো স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। রাষ্ট্রিয় সম্পদের রক্ষণাবেক্ষন, কর্মকর্তা কর্মচারিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সচিবালয়ের অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিছক দূর্ঘটনা, নাকি ষড়যন্ত্র সেটি জনগনকে কম সময়ের মধ্যে পরিষ্কার করতে হবে। আগামির বাংলাদেশ চলার পথ উন্নয়ন অগ্রগতি জাতীয় নিরাপত্তা। পরিচ্ছন্ন বিপদ মুক্ত করার সমস্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বাধিনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সকলের মধ্যেই ঐক্যবদ্ধ জাতিয় ঐক্য গড়ে উঠুক।