1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুপস্থিতি: ইতিহাসের শিক্ষা ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ - পূর্ব বাংলা
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন বায়েজিদ বোস্তামী ও মালেক শাহ (র.) ওরশ সম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফোরকানিয়া মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত  আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশন ২৬৫ জন রোগীর ছানি অপারেশন করালেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়বো না: হান্নান মাসউদ

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুপস্থিতি: ইতিহাসের শিক্ষা ও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

 

মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেলে একটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ভেঙে পড়ে, যা ধীরে ধীরে সমাজ, রাষ্ট্র এবং অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তোলে। ইতিহাসে আমরা এর ভয়াবহ উদাহরণ দেখতে পাই। নিচে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার আলোকে আমরা বিষয়টি বিশ্লেষণ করবো।

১. ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং পাকিস্তানের ভাঙন

১৯৭০ সালের নির্বাচনের ঘটনাটি ইতিহাসে একটি অনন্য উদাহরণ। এই নির্বাচন শুধু একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ ছিল না, এটি একটি রাষ্ট্রের ভাগ্য নির্ধারণ করেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত অনেক বিষয় নিয়ে বিরোধ থাকলেও একথা মানতেই হবে যে, ‘৭০-এর নির্বাচনই পাকিস্তান ভেঙে দিয়েছিল। ‘৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না জিতলে স্বাধীনতা যুদ্ধ হতো না। আবার ‘৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়া হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধ হতো না। ফলাফল মেনে নেওয়া হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই হতেন অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। অখণ্ড পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি কোনো অবস্থায় পাকিস্তান ভাঙতে পারতেন না।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সরকার পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ হওয়ার কারণে একটি রাষ্ট্রের দুই টুকরো হয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশের অখণ্ডতার স্বার্থে আমাদেরকে সব সময় মনে রাখতে হবে।

২. নির্বাচনের পথ বন্ধ: বাকশাল এবং ১৫ আগস্টের করুণ পরিণতি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ছিল বাকশাল গঠনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া। যদি শেখ মুজিব গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের গণতান্ত্রিক পথ খোলা রাখতেন, তাহলে তিনি কিছুতেই স্বৈরাচার হতে পারতেন না। মুজিব স্বৈরাচার না হলে নিঃসন্দেহে জনগণ তাঁর পাশে থাকতো। সে ক্ষেত্রে কেউ ১৫ আগস্ট তাঁকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার সাহস পেতেন না।

এই করুণ অধ্যায় আমাদের শিক্ষা দেয় যে, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ নিশ্চিত করতে না পারলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয় এবং তার পরিণতি হয় ভয়াবহ ও বেদনাদায়ক।

৩. নির্বাচনের পথ বন্ধের পরিণতি: শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন ও পতন

শেখ হাসিনাও হেঁটেছেন তাঁর পিতার পথে। আমৃত্যু তাঁর স্বৈরশাসন টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সব পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ক্ষমতার স্বাদ তাঁকে দানব থেকে মহাদানবে পরিণত করে। কল্পনাতীত লোমহর্ষক নির্যাতন, বিরোধী মতের হাজার হাজার নেতা-কর্মী খুন, গুম এবং বিরোধী শিবিরের লাখ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে তিনি তাঁর সকল প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছেন। নজিরবিহীন লুটপাট আর অর্থ পাচারের মাধ্যমে তিনি এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা বিভিন্ন দেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাত্রজনতার গণ-অভ্যুত্থানে তাঁকে পালাতে হয়েছে। পালাতে হয়েছে এমপি, মন্ত্রীসহ তার দলের হাজার হাজার জালিম এবং দুর্নীতিবাজ নেতা-কর্মীকে। তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধ করে না দিলে তাঁর পক্ষে স্বৈরাচার হওয়ার সুযোগ থাকতো না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকতেন; আর অন্য কেউ নির্বাচিত হলে তিনি প্রধান বিরোধী দলের নেতা হিসেবে থাকতেন। বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে তাঁকে দেশ ছেড়ে পালাতে হতো না।

শেষ কথা

আমরা আরও কিছু তথ্য যোগ করতে পারতাম। আমরা সেসব তথ্যের আলোকে দেখাতে পারতাম যে, যদি স্বাধীনতার পর থেকে গ্রহণযোগ্য এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পথ খোলা রাখা হতো, তাহলে স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়েছে, সেসবের অনেক কিছুই ঘটতো না এবং বাংলাদেশ পরিণত হতো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রে। কিন্তু লেখা অনেক লম্বা হয়ে যাওয়ার ভয়ে কেবল তিনটি ঘটনা বিশ্লেষণ করেছি। আমার বিশ্বাস, উল্লেখিত আলোচনার আলোকে এটা বোঝাতে পেরেছি যে, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের স্থায়ী পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশে কখনো শান্তি আসবে না। তাই আমাদেরকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের স্থায়ী পদ্ধতি খুঁজতে হবে। সবার মতামতের আলোকে স্থায়ী পদ্ধতি বের করতে পারলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নতির পথ প্রসারিত হবে।

লেখক : শিক্ষক ও সমাজকর্মী

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla