1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
ভারতে শেখ হাসিনার ১০০ দিন: কীভাবে রয়েছেন, সামনেই বা কী? - পূর্ব বাংলা
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
একটি আদর্শিক জাতিগঠন মূল লক্ষ্য হলেও সেই গণআকাঙ্ক্ষা এখনো গুমরে মরছে- অধ্যক্ষ আল্লামা জুবাইর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় কবি সাহিত্যিকদের এক মিলনমেলা! চট্টগ্রামে ৫ টন লোহার স্ক্র্যাপসহ ৭ চোর আটক করেছে কোস্ট গার্ড এসকে সুরের বাসায় দুদকের অভিযান মিলল যত টাকা বৃহত্তর চট্টগ্রাম সমিতি ক্যুইবেক কানাডা’র ২৮তম বর্ষপূর্তি পালন হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম বাকলিয়া থানার কমিটি গঠন আনোয়ারা, পটিয়া ও হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি প্রকাশ্যই মুখে আশেকে রাসূল বললে আশেকে রাসূল হয় না, আশেকে রাসূল হয় আমলে -ছারছীনার পীর ছাহেব আনোয়ারায় বরুমচড়া ইউপি চেয়ারম্যান আটক  ৫ আগস্ট হলো রাজনীতিবিদদের দীর্ঘদিনের ত্যাগ সংগ্রামের ফল বললেন কর্ণেল অলি

ভারতে শেখ হাসিনার ১০০ দিন: কীভাবে রয়েছেন, সামনেই বা কী?

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

শুভজ্যোতি ঘোষ

ভারতের রাজধানী দিল্লির কেন্দ্রস্থলকে চক্রাকারে ঘিরে রয়েছে যে ইনার রিং রোড, তার ঠিক ওপরেই চারতলা পেল্লায় বাড়িটা।

শহরের দক্ষিণপ্রান্তে পাঞ্জাবি অধ্যুষিত ওই এলাকায় এই বাড়িটার আলাদা করে কোনও বিশেষত্ব চোখে পড়ার কোনও কারণ নেই! কিন্তু আসলে ক’জনই বা জানেন প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে শেখ হাসিনা যখন প্রথম ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তার ঠিকানা ছিল রিং রোডের ওপরে এই ভবনটাই?

আসলে তখন ৫৬ রিং রোড ছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি ‘সেফ হাউজ’ বা গোপন অতিথিশালা। শেখ মুজিব আততায়ীদের হাতে নিহত হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যখন তার কন্যাকে সপরিবার ভারতে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো প্রথমে তার থাকার ব্যবস্থা করেছিল এই বাড়িটিতেই।

পরে একাধিকবার হাতবদল হয়ে ওই ভবনটি এখন শহরের একটি ছিমছাম চারতারা হোটেলে রূপ নিয়েছে। নাম ‘হোটেল ডিপ্লোম্যাট রেসিডেন্সি’।

মজার ব্যাপার হলো, লাজপত নগরের ওই এলাকাটি এখন দিল্লির আইভিএফ চিকিৎসার প্রধান হাবে পরিণত– যার সুবাদে বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে হাজার হাজার নিঃসন্তান দম্পতি ওখানে আসেন এবং দিনের পর দিন ওখানকার হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে থাকেন।

কিন্তু বাংলাদেশের এই মেডিক্যাল ট্যুরিস্টদের যারা ওই বিশেষ হোটেলটিতে ওঠেন, তাদের হযতো কারওরই জানা নেই তাদের দেশের সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী থাকা শেখ হাসিনাও তার জীবনের চরম সঙ্কটের মুহূর্তে ওই একই ভবনে আশ্রয় পেয়েছিলেন!

দিল্লির লাজপতনগরে ৫৬ রিং রোডের ভবনটি, এখন যেভাবে লাজপত নগরের ওই ঠিকানায় অবশ্য শেখ হাসিনা বা তার পরিবারকে খুব বেশিদিন থাকতে হয়নি।

শহরের ব্যস্ততম রাস্তার ওপর একজন গুরুত্বপূর্ণ অতিথিকে দীর্ঘ সময় রাখাটা নিরাপদ নয় বিধায় তাদের সরিয়ে নেওয়া হয় দিল্লির কেন্দ্রস্থলে অভিজাত পান্ডারা রোডের একটি সরকারি ফ্ল্যাটে, যার বাইরে ঝোলানো থাকত ভিন্ন নামের নেমপ্লেট। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর সেখানেই ছিলেন তারা।

লাজপত নগরের সেই ভবনে এসে ওঠার ঠিক ৪৯ বছর বাদে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা যখন আরও একবার ভারতে এসে আশ্রয় নিলেন – তখনও কিন্তু শহরে তার প্রথম ঠিকানায় তিনি থিতু হননি।

আসলে আজ থেকে ঠিক একশো দিন আগে অগাস্টের ৫ তারিখে চরম নাটকীয় পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা যখন ভারতে পা রাখেন, দিল্লির বিশ্বাস ছিল তার এই আসাটা একেবারেই সাময়িক – ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশে যাওয়ার আগে এটা একটা সংক্ষিপ্ত যাত্রা বিরতির বেশি কিছু নয়!

যে কোনও মুহূর্তে তৃতীয় কেনও দেশের উদ্দেশে তিনি রওনা হয়ে যাবেন, এই ধারণা থেকেই প্রথম দু-চারদিন তাকে (ও সঙ্গে বোন শেখ রেহানাকে) রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকন্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিং-এই, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশের বিমান বাহিনীর।

কিন্তু চট করে শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনও দেশে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাকে হিন্ডন থেকে সরিয়ে আনে দিল্লির কোনও গোপন ঠিকানায়। পরে তাকে হয়তো দিল্লির কাছাকাছি অন্য কোনও সুরক্ষিত ডেরাতে সরিয়েও নেওয়া হয়েছে – কিন্তু এ ব্যাপারে ভারত সরকার আজ পর্যন্ত কোনও তথ্যই প্রকাশ করেনি।

কিন্তু ‘লোকেশন’ যা-ই হোক, ভারতে তার পদার্পণের একশো দিনের মাথায় এসে এই প্রশ্নটা ওঠা খুব স্বাভাবিক যে এখন শেখ হাসিনাকে কীভাবে ও কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে? আর সেটার পেছনে কারণটাই বা কী?

দিল্লির কাছে ভারতের বিমানবাহিনীর হিন্ডন এয়ারবেসের মূল প্রবেশপথ

পাশাপাশি এই ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি সিচুয়েশন’ বা চরম অস্বাভাবিক একটা পরিস্থিতিতে তিনি স্বাধীনভাবে কতটা কী করতে পারছেন? কিংবা ‘হোস্ট কান্ট্রি’ হিসেবে ভারত কি তাকে কোনও কোনও কাজ না-করারও অনুরোধ জানিয়েছে?

দিল্লিতে একাধিক মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ওয়াকিবহাল মহলের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বিবিসি বাংলা এই সব প্রশ্নের যে উত্তর পেয়েছে, এই প্রতিবেদনে থাকছে তারই সারাংশ।

নিরাপত্তা প্রোটোকলটা ঠিক কী রকম?

সরকারি পদমর্যাদা ও নিরাপত্তাগত ঝুঁকি বিবেচনায় ভারতের ভিভিআইপি-রা বিভিন্ন ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন– যার মধ্যে ‘জেড প্লাস প্লাস’-কেই সর্বোচ্চ বলে ধরা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা অবশ্য সম্পূর্ণ আলাদা মানদণ্ডে আয়োজন করা হয়, ‘স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ বা এসপিজি কমান্ডোরা সচরাচর বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলান।

যে ভিভিআইপি-দের নিয়মিত প্রকাশ্যে আসতে হয়, আর যাদের লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও চলে– অবশ্যই তাদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার আয়োজনও হয় কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের।

তাহলে ‘অপ্রত্যাশিত অথচ অতি গুরুত্বপূর্ণ’ অতিথি শেখ হাসিনার জন্য ভারত এখন ঠিক কোন ধরনের নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করছে?

হুবহু এই প্রশ্নটাই করেছিলাম ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাকে, যিনি গত একশোদিন ধরে ভারতে শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপের বিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত।

ভারতের এলিট এসপিজি কমান্ডোদের একটি দল ক্ষুদে বার্তায় তিনি ছোট ছোট তিনটে বাক্যে এই প্রশ্নের যে উত্তর দিলেন, তা এরকম : এক. “বেয়ার মিনিমাম, প্লেইন ক্লোদস, নো প্যারাফারনেলিয়া!” যার অর্থ হল, যেটুকু না-হলে নয় শেখ হাসিনাকে সেটুকু নিরাপত্তাই দেওয়া হয়েছে, সাদা পোশাকের রক্ষীরাই তার চারপাশে ঘিরে রয়েছেন (জলপাই-রঙা উর্দির কমান্ডো বা সেনা সদস্যরা নন), আর গোটা বিষয়টার মধ্যে কোনও আতিশয্যর বালাই রাখা হয়নি! মানে ঢাকঢোল পিটিয়ে বা ঘটা করে তাকে কোনও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না, বরং পুরো জিনিসটাকে খুব নিচু তারে বেঁধে রাখা হয়েছে।

দুই. ‘ইন হার কেস, সিক্রেসি ইজ দ্য সিকিওরিটি!”

সোজা কথায়, তার বেলায় গোপনীয়তাই হল নিরাপত্তা! এটারও অর্থ খুব সহজ– শেখ হাসিনার অবস্থানের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে গোপনীয়তা রক্ষার ওপর, কারণ তিনি কোথায়, কীভাবে আছেন এটা যত গোপন রাখা সম্ভব হবে, ততই তার নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করা সহজ হবে।

তিন. “মুভমেন্টস অ্যান্ড ভিজিটস– অ্যাজ লিটল অ্যাজ পসিবল!” ফলে ওই কর্মকর্তা তার তৃতীয় বাক্যে জানাচ্ছেন, শেখ হাসিনাকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া কিংবা তার সঙ্গে অন্যদের দেখা করানোর ব্যবস্থা– এটাও যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শেখ হাসিনার মুভমেন্টস বা ভিজিটস যে পুরোপুরি বন্ধ নয়, তার কথায় সে ইঙ্গিতও ছিল!

ওই কর্মকর্তার কথা থেকে স্পষ্ট, শেখ হাসিনার জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও সেটা খুব বিশেষ এক ধরনের আয়োজন– মানে ধরা যেতে পারে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য যে ধরনের নিরাপত্তা থাকে তার সঙ্গে সেটা মাত্রায় তুলনীয় হলেও আয়োজনে একেবারেই অন্য রকম!

১৯৭৫-৮১ পর্বে দিল্লি থাকাকালীন এই নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগায় প্রায়ই আসতেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনাকে যাতে কোনওভাবেই প্রকাশ্যে না-আসতে হয়, এই প্রোটোকলে সেই চেষ্টাও বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

ফলে দিল্লির মর্নিং ওয়াকারদের স্বর্গ লোদি গার্ডেনে তিনি এসে মাঝেমাঝে হাঁটাহাঁটি করে যাচ্ছেন কিংবা ইচ্ছে করলে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগায় বৃহস্পতিবারের সন্ধ্যায় কাওয়ালি শুনে আসছেন– এই ধরনের যাবতীয় জল্পনা হেসেই উড়িয়ে দিচ্ছেন ভারতের সংশ্লিষ্ট মহলের কর্মকর্তারা!

সেই সঙ্গেই তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে এর অর্থ হলো তার সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্বও কিন্তু এখন ভারতেরই কাঁধে। সেখানে সামান্য কোনও ভুলচুক হলেও তার দায় ভারতের কাঁধেই আসবে এবং সেটা দিল্লির জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর হবে।

ফলে সেই নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও আপস করা যাবে না এবং তার জীবনকে সামান্যতম ঝুঁকিতেও ফেলা যাবে না আর পাশাপাশি পুরো বিষয়টা অত্যন্ত গোপন রাখতে হবে– এগুলো বিবেচনায় নিয়েই সাজানো হয়েছে তার নিরাপত্তা প্রোটোকল!

ঘনিষ্ঠজনদের সাথে মেলামেশা?

গত ৫ অগাস্ট যখন শেখ হাসিনা দিল্লিতে এসে নামলেন, সে দিনই সন্ধ্যায় দিল্লিতে কংগ্রেসের একদা মুখপাত্র শর্মিষ্ঠা মুখার্জি নিজের এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট করেন।

তাতে তিনি লেখেন, “স্টে সেফ অ্যান্ড স্ট্রং, হাসিনা আন্টি। টুমরো ইজ অ্যানাদার ডে, মাই প্রেয়ার্স আর উইথ ইউ!”

শেখ হাসিনাকে ‘আন্টি’ বলে ডাকতে পারেন, দিল্লিতে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি ছাড়া এমন আর দ্বিতীয় কেউ আছেন কি না বলা খুব মুশকিল! সেই প্রিয় আন্টিকে মনোবল শক্ত রাখার কথা বলতে তিনি কিন্তু এক মুহূর্ত দেরিও করেননি।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla