1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা  ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এর সম্মানীত সচিব এর কাছে বিনম্র  প্রত্যাশা - পূর্ব বাংলা
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন বায়েজিদ বোস্তামী ও মালেক শাহ (র.) ওরশ সম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফোরকানিয়া মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত  আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশন ২৬৫ জন রোগীর ছানি অপারেশন করালেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়বো না: হান্নান মাসউদ

মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা  ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এর সম্মানীত সচিব এর কাছে বিনম্র  প্রত্যাশা

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

মোস্তফা কামাল যাত্রা                           
এক দেশ বহু জাতি। জাতি নির্ভর একক দেশ খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাঙ্গাল থেকে বাঙালি আর বাঙালি থেকে বাংলাদেশি। কিন্তু জাত কি বাংলাদেশে একটা?
নিশ্চয়ই না। তাই “দেশজ নাট্য” তথা “ইনজিনিয়াস থিয়েটার” এবং “জাতীয় নাট্য” তথা ন্যাশনাল থিয়েটার-এর কেন্দ্রিয় রূপ চুড়ান্ত করা খুব সহজ বিষয় নয়। সুবর্ণ জয়ন্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো একটি দেশের ‘দেশজ বা জাতীয়’ যে অভিধায়ই বলিনা কেন একটি কেন্দ্রিয় নাট্যশৈলী নেই এটা ভাবা যায়না।
ভূমিগত শিমারেখা তথা মানচিত্রগত স্বীকৃত রাষ্ট্র বা দেশ হিসাবে বাংলাদেশে বসবাসকারী বহুজাতিক যে চর্চিত নাট্যধারাসমুহ রয়েছে তার মধ্যে অবশ্যই একটি দেশজ আবরণ দৃশ্যমান। কিন্তু চর্চিত সেই দেশজ নাট্য ধারাসমূহের সমন্বয়ে একটি কেন্দ্রিয় বা জাতীয় স্বরূপ অদ্যাবদি রাষ্ট্র যন্ত্রের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জাতিয় নাট্যশালা অদ্যাবধি চুড়ান্ত করতে পারেনি।
দেশব্যাপি চর্চিত নাট্য ধারাসমূহের ব্যুৎপত্তি আর উৎপত্তিগত দিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে তার সবগুলোই এই ভূমি থেকে উদ্ভূত নয়। আবার ধর্মীয় আগ্রাসন বিবেচনায় সংস্কৃত নাট্যের উদ্ভব এই বঙ্গেঁ হলেও তা দেশজ কি?
ইতিহাসের কালপর্বে ব্রিটিশ কলোনিয়াল প্রভাবজাত সময়কালে লিয়েবিদেফ কর্তৃক প্রসেনিয়াম ধারণায় যে নাট্যচর্চার সুচনা হয়েছিল এতদ্ব অঞ্চলে তার বঙ্গীয় স্বরূপও কি আমাদের দেশজ নাট্য?
উত্থাপিত প্রশ্নদ্বয়ের যৌক্তিক উত্তর খুঁজে পেতে গবেষণামূলক বিশ্লেষণের পথপরিক্রমা অনুসরণ অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশের প্রাগৈতিহাসিকতা এবং ভূ-প্রকৃতির গঠণকে বিবেচনায় নিয়ে এই প্রসঙ্গটি আলোকপাত করা জরুরি। কারণ প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে বঙ্গ অঞ্চলের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট রয়েছে।
আসলে ভূ-প্রকৃতিগত দিক বিবেচনায় সৃষ্ট নাট্য ঘরনাই হল ঐ ভূমির নিজস্ব নাট্য। সেখানে জাত প্রথা মূখ্য বিবেচনা নয়। জাতীভেদে স্ব স্ব নাট্য থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তাই জাতীয় নাট্য-এর কেন্দ্রিয় স্বরূপ নির্ধারণ বা স্বীকৃতি প্রদানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক পরম্পরার গতিপ্রকৃতির আলোকে মৌলিক কতগুলো বিষয়কে এই প্রসংগে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের ভূমি তথা মানচিত্রের অভ্যন্তরে বসবাসকারী জাতী, উপজাতী (নৃ-গোষ্ঠী)-দের চর্চিত নাট্যক্রিয়া বহুমাত্রিক। সুতরাং সেখানে জাতীয় নাট্য-এর কেন্দ্রিয় বা রাষ্ট্রিয় ঘরনা সুনির্দ্দিষ্টকরণের ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে সচেতন বিবেচনা প্রনিধানযোগ্য। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে প্রসেনিয়াম ধারণার বেড়িতে এই অঞ্চলের নাট্য চরিত্রকে গণ্ডিবদ্ধ করা যৌক্তিক নয়। কেন না মূখ্যত: এতদ্ব অঞ্চলে চর্চিত নাট্যশৈলীসমূহ মুক্তাঙ্গণ আদলের অর্থাৎ উন্মুক্ত আবহের।
তাই বাংলাদেশের দেশজ নাট্য-এর স্বরূপ নির্ধারণে এই রাষ্ট্রের সীমারেখায় বসবাসকারী জাতী-উপজাতী তথা নৃ-গোষ্ঠীসমূহের চর্চিত নাট্যশৈলীগুলোর একটি সমন্বিত রূপ নির্ধারণ অত্যাবশ্যক।
যে সমন্বিত স্বরূপ নির্মাণে প্রয়োজন প্রাচীনকালে এতদ্ব অঞ্চলে জাত প্রথারভিত্তিতে যে সামাজিক বিভাজন সৃষ্টি হয়েছিল তাকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের একক বৈশিষ্ট্যমন্ডিত নাট্য ঘরনার সংশ্লেষনে একটি সম্মিলিত নাট্যধারার উদ্ভব ঘটানো। যাতে নব্যনাট্য-এর প্রকৃতি জাতী স্বত্তার উর্ধে ওঠে দেশজ চরিত্র ধারণ করতে সমর্থ্য হয়।
অর্থাৎ ব্রাক্ষ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রগণ কর্তৃক যে স্বতন্ত্র নাট্যানুশীলন এই বঙ্গদেশে প্রাচীনকালে সুচিত হয়ে নানা রূপে রূপান্তরে আজো এতদ অঞ্চল; বিশেষ করে বর্তমান বাংলাদেশে চর্চিত হচ্ছে- তাকে ব্যাপক গবেষণার মধ্য দিয়ে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য নাট্য আদলে রূপান্তরিত করা। এক্ষেত্রে পরিবেশনা (প্রেজেন্টেশন) থেকে উপস্থাপনা (রি-প্রেজেন্টেশন) প্রক্রিয়ার নানান ধাপ ও নন্দনতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গির যৌক্তিক ও মৌলিক প্রসঙ্গগুলোর মেলবন্ধন ঘটাতে হবে।
প্রশ্ন হল- বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধার সেই গুরু দায়িত্ব কার? রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ সরকার-এর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অদ্যাবধি কি কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন মনোনিত কমেটিকে সেই দায়িত্ব অর্পন করেছে? যারা আলোচ্য অভিধা চুড়ান্তকরণে কাজ করবে?
বিশ্বের যে সকল দেশে জাতীয় নাট্য বা দেশজ নাট্য রয়েছে- তা নির্ধারণে সেই সব দেশ বা রাষ্ট্র কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিল-এই ক্ষেত্রে সেই অভিজ্ঞতা সর্বাগ্রে আমাদের সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের জানা প্রয়োজন। যদিও বা সেইসব রাষ্ট্রের সাথে আমাদের রাষ্ট্রের ভু-প্রকৃতি ও প্রেক্ষাপটের মধ্যে পার্থক্য থাকবে তথাপি তা জানা থাকলে সে সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা অন্তত পাওয়া যাবে। নিশ্চয়ই সে অভিজ্ঞতা আমাদের দেশজ নাট্য-এর জাতীয় স্বরূপ সুনির্দ্দিষ্টকরণে রাখবে সহায়ক ভূমিকা।
আমার বিবেচনায় আমাদের দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অনতিবিলম্বে এই প্রসংগটি গুরুত্বের সহিত বিবেচনায় নেবেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠণের উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নয় ‘দেশজ নাট্য আঙ্গিক’ চুড়ান্তকরণের পথকে প্রসস্থ করবে।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জাতীয় নাট্যশালার অবকাঠামোকে ব্যবহার করে মনোনিত বা নির্বাচিত কমিটির নেতৃত্বে সকলের মতামত নিয়ে রাষ্ট্রের কেন্দ্রিয় নাট্যশৈলী নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করে সর্বাগ্রে একটি নীতিগত কাঠামো অনুমোদন সময়ের দাবি।
সর্বজন গ্রহণযোগ্য ও অনুমোদিত সেই কাঠামোর (নীতিমালা) আলোকে জাতীয় নাট্যশালার অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে একটি রোড ম্যাপ মোতাবেক নির্ধারিত টাইম-লাইন’র মধ্যে এই কাজটি সুসম্পন্ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাতে করে এই রোডম্যাপ এর আওতায় গঠিত রাষ্ট্রীয় কমিটি, সংশ্লিষ্টজন দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই কাজটি সু-সম্পন্ন করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সমর্থ্য হন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীস্থ জাতীয় নাট্যশালায় নিযুক্ত জনবলের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় নাট্যশৈলী সু-নির্দিষ্ট করার জন্য উল্লেখিত খণ্ডিত প্রস্তাবটি বিবেচনার উদ্যোগ নেওয়া হোক। যাতে করে দ্রুততম সময়ে জাপানের ‘নো’ ও ‘কাবুকী’ এবং চীনের ‘অপেরা’ এর ন্যায় বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় নাট্যশৈলী তথা ঘরানার জাতীয় স্বরূপ সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়।
এটা জাতীয় স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী একটি বিবেচনা। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দেশের বিশিষ্টজনদের অভিমত ও পরামর্শ এই প্রস্তাবনাকে আরো সমৃদ্ধ করবে বলে আমি দৃড়ভাবে বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশের নাট্য নেতৃত্ব যেখানে বিশ্বনাট্য সভার নেতৃত্ব দিচ্ছেন; সেখানে দ্রুত উচিৎ কাল ক্ষেপন না করে অনতিবিলম্বে এই প্রসংগে একটি রাষ্ট্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়া। যাতে করে বাংলাদেশের ‘দেশজ’ বা ‘ইনডিজিনিয়াস’ নাট্যশৈলী- এর কেন্দ্রিয় আঙ্গিক নির্ধারনোত্তর রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি চুড়ান্ত করা দ্রুততম সময়ের মধ্যে হয়। অন্যথায় বিশ্বনাট্য সভায় আমাদের নাট্য নেতৃত্বকে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউট (আইটিআই) এর কেন্দ্রিয় পর্ষদ অর্থাৎ ওয়ার্ড কংগ্রেস যেহেতু বাংলাদেশের প্রধান প্রধান নাট্য ব্যাক্তিত্বদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়- সেহেতু বিশ্বনাট্য সভায় এই ধরণের প্রশ্নের সম্মুখিন হওয়ার পূর্বেই দেশজ নাট্য এর কেন্দ্রিয় বা জাতীয়রূপ সুনির্দ্দিষ্টকরণ বাংলাদেশের জন্য অত্যাবশ্যক। তা ‘জাতীয় নাট্য’ অভিধায় না হয়ে ‘দেশজ নাট্য’ শিরনামেই হওয়া যুক্তিযুক্ত হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এর সম্মানীত সচিব ও উপ-সচিবদের কাছে বিনম্র   প্রত্যাশা প্রস্তাবিত প্রসঙ্গটি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর নব নিযুক্ত মহাপরিচালক মহোদয়ের অন্যতম প্রধান কাজ হিসেবে সম্পাদনের নির্দেশনা দিয়ে জাতীয় নাট্য কাঠামোকে সু-সমৃদ্ধ করার একটি গঠনমূলক পদক্ষেপ নিবেন।
লেখক: অতিথি শিক্ষক: নাট্যকলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।এবং নির্বাহি পরিচালক: ইউনাইট থিয়েটার ফর সোশাল অ্যাক্শন্
শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla