1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম মাস উদযাপন বিশেষ বার্তাঃ শেখ হাসিনা একটি দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন - ড. ইউনূস - পূর্ব বাংলা
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম মাস উদযাপন বিশেষ বার্তাঃ শেখ হাসিনা একটি দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন – ড. ইউনূস

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম মাস উদযাপন বিশেষ বার্তায়

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের এক মাস পূর্তিতে দেওয়া বার্তায় ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার ওই বার্তায় আগের সরকারের রেখে যাওয়া ‘দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং একটি ভঙ্গুর অর্থনীতির’ দেশ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশকে এর পূর্ণ গৌরবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছেন। নতুন প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করার আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এক নতুন যুগের সূচনা করতে চাই।

বার্তায় ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ভূমিকা রাখা তরুণদের উদ্দেশে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এখন সময় পড়াশোনায় ফেরার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। আমি তোমাদেরকে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা বিপ্লবের সুফল ঘরে তুলতে আমাদের একটি সুশিক্ষিত ও দক্ষ প্রজন্মের দরকার। তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নিয়েছিলে। শহর ও গ্রামীণ জনপদের দেয়ালে আঁকা তোমাদের স্বপ্নগুলো এখনও নানা রঙের সাজ নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বিপ্লবের সময়, তোমরা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে বন্ধুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছ এবং দিনে নিষ্ঠুর শাসনকে প্রতিহত করার জন্য পরস্পরের থেকে চির বিদায় নিয়ে রাস্তায় নেমেছ। বিপ্লব শেষ হওয়ার পর তোমরা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তাঁদের উপাসনালয় পাহারা দিয়েছ এবং সারাদেশে ট্রাফিক পরিচালনা করার দায়িত্ব নিয়েছ। আমি জানি তোমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে।

ছাত্র–জনতার তুমুল আন্দোলনে গত ৫ আগাস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারত চলে যান। সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্র্বর্তী সরকার বিপ্লবের প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কাজ জুলাই ও আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। গণহত্যার বিষয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করার জন্য আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা এদেশে এসেছেন এবং তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমি জুলাই এবং আগস্ট মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল তৈরি করার প্রয়াসে শীর্ষ আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের সাথেও কথা বলেছি। আমরা খুনিদের প্রত্যর্পণ এবং স্বৈরাচারের সময় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও আমলারা যে পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে তা দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি।

বিপ্লবের সময় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হাজার হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা নিশ্চিত করাকে সরকারের প্রধান দায়িত্বের একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, হাসিনার দুর্বৃত্তরা তাদের চোখ লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ায় অসংখ্য তরুণ শিক্ষার্থী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব তাদের চোখের আলো ফিরিয়ে দিতে। আমরা শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির জন্য ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছি। মূল তালিকা হয়ে গেছে। এখন শুধু দূর–দূরান্তে যাদের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে তথ্যগুলিতে পূর্ণাঙ্গতা দেওয়া হচ্ছে। আহত শত শত মানুষ যাদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহীদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন এখন তৈরির শেষ পর্যায়ে আছে। যাদের শাহাদাতের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে আমরা তাদের কখনই ভুলব না।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া বার্তায় শত শত প্রাণক্ষয়ী ছাত্র–জনতার আন্দোলন পেরিয়ে সরকার পতনের পর অন্তর্র্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা তুলে ধরেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আজ আমরা বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম মাস উদযাপন করছি। ইতিহাসের অন্যতম গৌরবময় বিপ্লবের জন্য শত শত ছাত্র এবং সর্বস্তরের মানুষ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। তারা ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে যার নেতৃত্বে নৃশংস একটি গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে। শেখ হাসিনা একটি দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্র এবং একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। আমাদের বাংলাদেশকে এর পূর্ণ গৌরবে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব আমাদের।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজ আমি সেই সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর, পেশাজীবীদের স্মরণ করছি যারা জঘন্য হত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিল। স্মরণ করছি আন্দোলন চলাকালে নিহত সাংবাদিকদের। আজ আমি এই বিপ্লবে শাহাদাত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমি অভিবাদন জানাই হাজার হাজার মানুষকেও যারা আহত হয়েছেন, প্রাণঘাতী আঘাতের শিকার হয়ে চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছেন, কিংবা চক্ষু হারিয়েছেন।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla