1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
‘নিরীহ কোটা’র দাবি নিয়ে জাতির মরণফাঁদ পাতলো কারা? - পূর্ব বাংলা
মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:২৩ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
জয়নাল আবেদীন মহিউচ্ছুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সম্মানপ্রদ আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের শোক ১৩ তম রাফি স্মৃতি টি-টুয়েন্টি গোল্ড কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’২৫ ফাইনাল খেলা সম্পন্ন ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

‘নিরীহ কোটা’র দাবি নিয়ে জাতির মরণফাঁদ পাতলো কারা?

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

জার্মান দার্শনিক হেগেল বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের বড়ো শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না’। কথাটি সবাই উচ্চারণ করেন কিন্তু বাস্তবে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা কতজনে করে থাকেন? আমাদের জাতীয় জীবনে সব বড়ো বড়ো অর্জন এবং বিসর্জন থেকে আমাদের অবশ্যই শিক্ষা নিতে হবে। শিক্ষা না নেওয়ার কী পরিণতি আমাদের জাতীয় জীবনে ঘটেছে তার ব্যাখ্যা করে বলার খুব বেশি প্রয়োজন নেই। সম্প্রতি আমাদের দেশে যা কিছু ঘটে গেছে সেসবের দিকে এখন নির্মোহভাবে ফিরে তাকালে, বোঝার চেষ্টা করা হলে অবশ্যই ধরা পড়বে দেশে কারা কী ঘটাতে চেয়েছিল, কারা আগুন জ্বেলে লঙ্কাকাণ্ড ঘটাতে চেয়েছিল, কারা নিরীহ সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষের অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে দেশে এমন নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ, হতাহত, অগ্নিসংযোগ, সংগঠিত করার মস্তবড়ো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল?

বলা হয়ে থাকে, কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের একটি আন্দোলন চলেছে। আন্দোলন একটি রাজনৈতিক ধারণা। মূলত কোনো বিশেষ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী যখন দাবি আদায়ের জন্য কর্মসূচি পালন করে তখন সেটিকে একটি আন্দোলন হিসেবে অভিহিত করা যায়। তবে দাবিটি কোনো না কোনো গোষ্ঠীর কাছে আন্দোলনকারীরা করে থাকেন যারা সেটি প্রথমে মানতে চান না, দিতেও চান না। সে কারণে ভুক্তভোগী গোষ্ঠী শ্রেণি বা বৃহত্তর জনসাধারণ তাদের সংগঠিত নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রথমে দাবিদাওয়া পেশ করেন, অগ্রাহ্য করা হলে রাস্তায় কর্মসূচি পালন করেন, এ নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষও হতে পারে। কর্তৃপক্ষ বা শাসক মহল সেটি শেষ পর্যন্ত মানতেও পারেন আবার ন্যায়সংগত দাবি উপেক্ষা করে চরম নির্যাতন, নিপীড়ন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে চালাতেও পারেন। কিন্তু আন্দোলন সাময়িকভাবে থেমে গেলেও পরবর্তী যেকোনো সময় আবার সংগঠিত হতে পারে। সুতরাং আন্দোলনের একটি আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক ও বিষয় সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক বাস্তবতা রয়েছে যা মোটেও উপেক্ষা করার নয়। সে কারণে বলা হয়ে থাকে- যেকোনো আন্দোলন বা বড়ো ধরনের ঘটনার পেছনে দুটি শর্ত অবশ্যই থাকে। একটি হচ্ছে বস্তুগত শর্ত (objective condition) অন্যটি হচ্ছে বিষয়গত তথা (subjective condition)। এর একটি শর্ত অনুপস্থিত থাকলে আন্দোলন বা যেকোনো বড়ো ধরনের ঘটনা সংগঠিত হয় না বা করা যায় না। বিষয়গত শর্তের মধ্যে সচেতনতা, সাংগঠনিক তথা নেতৃত্বের দক্ষতা অপরিহার্য। সংক্ষেপে আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য বিষয়টি তুলে ধরা হলো।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাকে নিয়ে ২০১৮ সালে একটি আন্দোলন হয়েছিল। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি এবং তাদের নানা ধরনের আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার পর কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়। এখানে শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণে রাস্তায় নেমেছিল, সরকার গোটা কোটা ব্যবস্থাই বাতিল করে দিয়েছিল। এটিকে অবশ্যই একটি আন্দোলন বলা চলে। কিন্তু এবার কোটার দাবিতে যা ঘটেছে তাকে রাজনীতির সংজ্ঞায় কোনোভাবেই আন্দোলনে ফেলা যায় না। ২০১৮ থেকে দেশে কোটা ব্যবস্থা নেই। সরকার সেটি ফিরিয়ে আনতেও চায়নি। সংক্ষুব্ধ যে কয়েকজন আদালতে গিয়েছিল, আদালত তাদের পক্ষে রায় দিলেও সরকার সে রায়ের বিরুদ্ধেই উচ্চ আদালতে আইনগত অবস্থান নিয়েছিল। ফলে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আন্দোলন করার কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না। এটি আদালতের মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে মীমাংসিত হতো। সুতরাং কোটা নিয়ে যা ঘটেছিল তা সন্দেহ, প্রচার, অপপ্রচার এবং বিভ্রান্তি ছাড়া আর কিছু না। তারপরও শিক্ষার্থীগণ কোটা নিয়ে যে প্রক্রিয়ায় দাবি ও কর্মসূচি প্রদান করতে থাকে তা একটি আন্দোলনের অনেক বাস্তবতা ও শর্ত থেকে বেশ দূরে ছিল। কার্যত এই দাবির কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না।

আদালত কারো প্রতিপক্ষ কোনো দেশে হয় না। সর্বোচ্চ আদালতেই ন্যায়বিচার পাওয়া যায়। এখানেও সেটি ঘটতো কিন্তু বিষয়টিকে কেউ তলিয়ে না দেখার ফলে দেশে দৃশ্যত যা দেখা গেল তা কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী, কোটা-সংস্কার অথবা কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কোনো সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায় না। কিন্তু যেহেতু বেকারত্ব, কর্মসংস্থান এবং চাকরির একটি বড়ো ধরনের সমস্যা বিরাজ করছে তাই বর্তমান বা ভবিষ্যৎ চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে একটি বাস্তব সমস্যা হিসেবেই ছিল যাকে আমরা প্রথম শর্ত হিসেবে দেখতে পারি। তবে দ্বিতীয় শর্তটি এক্ষেত্রে খুব একটা কার্যকর ছিল না। সে কারণে চাকরি, কর্মসংস্থান এবং বেকারত্বের আবেদনটি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সবমহলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। আবেগ ও স্বতঃস্ফূর্ততা নানা প্রচার, প্রচারণা ও অপব্যাখ্যায় বিস্ফোরণের অপেক্ষায় ছিল। সেটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছিল সরকারবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং অপশক্তি।

সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের আন্দোলন সংগ্রামের ইস্যু শিক্ষার্থীদের চাইতে একেবারেই ভিন্ন। কিন্তু তারপরও তারা কোটার ইস্যুটিকে শিক্ষার্থীদের একটি আন্দোলনে বিস্ফোরিত করতে ভেতর থেকে নানা পরিকল্পনা নিয়ে তাদের দলীয় সমর্থক শিক্ষার্থী এবং ক্যাডারদের যুক্ত করেন। ফলে শিক্ষার্থীদের কোটার দাবি যেখানে অল্প কদিনের মধ্যেই আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয় যেত সেটিকে কার্যত ঢাকাসহ দেশব্যাপী যেরূপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল দেশে একটি কোটাবিরোধী আন্দোলন ‘ন্যায়সংগত’ভাবে হচ্ছে কিন্তু আন্দোলন যখন হচ্ছে তখনো কোটা ব্যবস্থাই দেশে চালু নেই। তারপরও দেশে সতর্স্ফূতভাবে শিক্ষার্থীদের যে সমাবেশ বিশ্রিত হতে থাকে তাতে আন্দোলনের বহিরাবরণ সৃষ্টি করতে সরকারবিরোধী জামাত-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিকদল তাদের ছাত্র, যুবকদের এর সঙ্গে যুক্ত করে ফেলে। তাদের গোপন উদ্দেশ্য তখন আর কোটায় থাকেনি সরকার পতনের জন্য সহিংস অপশক্তিকে ব্যবহারে মাঠে নামানো হয়েছিল। সারা দেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রশিবির, ছাত্রদল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ঢাকায় নিয়ে আসা হলো। এরা কোটার দাবিকে আন্দোলনে রূপ দিতে ক্ষণে ক্ষণে দাবি ও কর্মসূচির পরিবর্তন ঘটায়। এদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তখন কোটাতেও ছিল না। সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে একটি সাংঘর্ষিক রূপ দেওয়ার ইস্যু তৈরি করা হতে থাকে। সেখানে সরকারদলীয় নেতৃবৃন্দের কথা এবং চিন্তার মধ্যে বাস্তব পরিস্থিতির মোড় পরিবর্তনের ধরন-ধারণের কোনো উপলদ্ধি ছিল না। ফলে দ্রুত সংঘাত ছোটো থেকে বড়ো আকার ধারণ করতে থাকে। এটি তখন যে একটি প্রতি আন্দোলনে রূপ নিতে যাচ্ছে তা রাষ্ট্রপক্ষ কিংবা কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদেরও ধারণায় ছিল না। রাজধানী ঢাকাকে তখন নেপথ্যের অপশক্তি গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার জন্য শহরের প্রবেশমুখগুলো সব অবরুদ্ধ করে ফেলে। একে একে সকল সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করার জন্য তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাডারগণ নেমে পড়ে। সঙ্গে নিয়ে আসা হয় ভাড়াটে অপরিচিত বিশেষ গোষ্ঠীকে যারা ধ্বংসলীলা, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটে বেশ দক্ষ ছিল। শুধু ঢাকা শহরেই নয় অন্যান্য প্রায় সব শহরেই একইভাবে তাণ্ডব, ধ্বংসলীলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট সংগঠিত করার মিশনে এই নেপথ্যের অপশক্তি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। দেশের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন একটি তাণ্ডব, ধ্বংসলীলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট রোধ করতে মোটেও প্রস্তুত ছিল না, সম্ভবও ছিল না। তাছাড়া জামাত শিবির শিশু-কিশোর এবং পথ শিশুদেরও সম্মুখে এগিয়ে দিয়ে নিজেরা পেছনের থেকে ওদেরকে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এমন একটি বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। যেখানেই বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে সেখানেই সংঘাত, সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে। এখানেই হতাহত হতে থাকে নিরীহ শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত শিশু-কিশোর এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণও। সবচাইতে লক্ষণীয় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় যে- নরসিংদীর জেল ভেঙে জঙ্গি এবং কয়েদিদের বের করে দেওয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ধ্বংস এবং অগ্নি সংযোগ ঘটানো হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী পরিচয়ে কাউকে পাওয়া গেলে প্রতিশোধ নেওয়ার ভিন্ন বর্বরতা প্রকাশ ঘটানো হয়। একইভাবে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার মিশন বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়। তাদের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করা, মেরে ফেলা এবং মৃতদেহ নিয়ে বীভৎসতা তৈরি করতেও দেখা যায়। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সড়ক ভবন, সেতু ভবন, বিটিবি ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, ডাটা সেন্টার, বিআরটিএ, সিটি কর্পোরেশনের ভবন, টোল প্লাজা, পুলিশ ফাঁড়ি, থানা পুলিশ স্টেশন, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের কার্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান একে একে ধ্বংস করা হতে থাকে। এটি ঢাকার বাইরে অনেক স্থানেও নগ্নভাবে ঘটানো হয়েছিল। তাদের প্রস্তুতি দেখে মনে হয়েছিল রাজধানী ঢাকা বর্তমান ফিলিস্তিনি শহর গাজার মতো ধ্বংসপ্রাপ্ত হতে যাচ্ছিল। ঢাকার বিদ্যুৎকেন্দ্র ধ্বংস করারও একটি পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। সেটি করা সম্ভব হলে ঢাকায় মানুষের জীবন এক দুদিনেই স্তব্ধ হয়ে যেত। কারা এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে? অবশ্যই এমনসব স্থাপনা ধ্বংস করার মতো যাদের প্রস্তুতি ছিল অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লুটপাটকারী বাহিনীও সঙ্গে ছিল। অসংখ্য গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হলো। চট্টগ্রামে রেল ডিপোতে অগ্নিসংযোগ করা হলো। বোঝাই যাচ্ছে যে- রাস্তার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরদের মধ্যে যুক্ত হয়ে তারা একদিকে উন্মক্ততা ও উত্তেজনার উদগীরণ করছিল, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবেগ, উত্তেজনা জারি রাখছিল, নানা অপপ্রচার, অসত্য তথ্য, মৃত্যু ও হতাহতের সংবাদ, গুজব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। অন্যদিকে তাদেরই বিশেষ বাহিনীরা ধ্বংসলীলা, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছিল। দুদিনেই কোটাসংস্কার আন্দোলন পরিণত হয় এক রাষ্ট্রযন্ত্রকে ধ্বংসকারী অপশক্তির গোপন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বুলডোজার হিসেবে।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মাত্র একজন সমন্বয়কারী অনিয়ন্ত্রিত ভয়াবহতা বুঝতে পেরে যেসব রাজনৈতিক দল এবং নেতা কর্মীরা রাস্তায় নেমে ধ্বংসলীলায় অংশ নিচ্ছিল তাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক নেই বলে সংবাদমাধ্যমে একটি ক্ষুদে বার্তা প্রচার করতে সক্ষম হলো। তখনি সরকার আর বসে থাকা নিরাপদ নয় ভেবে রাষ্ট ও জনগণের জানমাল রক্ষা করার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করতে সামরিক বাহিনীকে আমন্ত্রণ জানায়। ২০শে জুলাই থেকে সরকারকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। সন্ত্রাসীদের ঢাকা থেকে বিতাড়িত করাই শুধু নয় আইনের আওতায় এনে বিচার করারও উদ্যোগ নিতে হয়। বোঝাই যাচ্ছিল জামাত-বিএনপির গণঅধিকার সংগঠন এবং নেপথ্যের আরো অনেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার নানা মরণফাঁদ কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের রাস্তায় বসিয়ে সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। তাদের পরিকল্পনার আরও অনেককিছু হয়তো নিকট ভবিষ্যতে উন্মোচিত হবে কিন্তু অসংখ্য মানুষের হতাহত হওয়া, রাষ্ট্রের ব্যাপক সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাওয়া, অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া এবং দেশের প্রতিটি মানুষ কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার যে অপআন্দোলনটি বিশেষ কয়েকটি অপরাজনৈতিক শক্তি প্রত্যক্ষভাবে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছিল তা দিবালোকে তুলে আনা সকল দেশপ্রেমিক সচেতন মহলেরই দায়িত্ব- এটি ভুললে চলবে না।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: কলাম লেখক, ইতিহাসবিদ ও সাবেক অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla