চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় হাজার হাজার নিষিদ্ধ অটো রিক্সা থেকে ক্ষমতার দাপটে টোকেন বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সামসু প্রকাশ ফটো সামসু। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নগরীর বায়েজিদসহ আপপাশের এলাকায় গতিদানব অবৈধ ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার কারণে দিনদিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়কগুলো। জনসংখ্যার তুলনায় সংকীর্ণ সড়কগুলোতে অটো রিক্সা অনিয়ন্ত্রিত গতি প্রতিযোগিতার কারণে প্রায় প্রতিদিনই পথচারীসহ হাজার হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক ও যাত্রীদের নিয়ে উঠে আসছে ছোট বড় দুর্ঘটনার খবর। টাকা দিলেই এই গাড়িগুলোর দেওয়া হচ্ছে শিশুসহ অদক্ষ চালকের হাতে।
ইতোপূর্বে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন সিটি কর্পোরেশন মার্কেট সংলগ্ন টেক্সটাইল সড়কে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা সাইড দিতে গিয়ে কোম্পানির লোহার রড বোঝাই করা (চট্ট মেট্রো-ঢ ৮১-১৪৮৫) সিরিয়ালের ১৪ চাকার বড় লড়ির সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী কমিশনারের ব্যবহৃত (সিএমপি ১২৪) গাড়িটির সাথে হঠাৎ সংঘর্ষ ঘটে। এতে আহত হয় গাড়িতে থাকা ২ কনস্টেবল ও পেছন থেকে আসা একটি মোটর সাইকেলের চালক। এই রকম অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও এখনো নিরব রয়েছে প্রশাসন। নতুন টিআই সুশোভন চাকমা যোগদানের পর টোকেন বাণিজ্য বেড়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, থানা ক্যাশিয়ার, রাজনৈতিক কথিত নেতাদের সরাসরি ইন্ধনে এই অবৈধ ব্যাটারী চালিত মোটর রিকশা রাস্তায় নামানোর বেসরকারী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে যা টোকেন বাণিজ্যে হিসেবেই পরিচিতি।
ট্রাফিক ও থানা পুলিশের নামেই তারা সাধারণ চালক ও অটোরিক্সার মালিকের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
সরেজমিনে বাংলা বাজার ডেবারপাড় এলাকায় দেখা যায় ২টি মোটর সাইকেলযোগে ৩ ব্যক্তি প্রায় সবগুলো বিদ্যুৎ খেকো অবৈধ মোটর রিক্সার গেরেজসহ চিহ্নিত কয়েকটি চায়ের দোকানে বৈঠক করে টাকা নিচ্ছে। এসময় হাতে নাতে ধরে তাদের কিসের টাকা নিচ্ছেন নিজ্ঞেস করলে তারা টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মোটর সাইকেলে চড়ে দ্রুত পালিয়ো যায়। এসময় টাকা প্রদানকারী এক লোক বলেন, সামসুকে অটোরিকসার টোকেনের টাকা দিয়েছি। সে প্রতিনিয়ত আমাদের থেকে অটোরিক্সা টোকেনের টাকা নিয়ে থাকে। সামসুকে প্রতিদিন গাড়ি প্রতি ৫০ -১২০ টাকা দেই। না হলে পুলিশ গাড়ি ‘টু’ করে দেয়।
টিআই, থানা পুলিশ, দায়িত্ব পালন করা সার্জেন্টের সাথে এদের রয়েছে বিশেষ আঁতাত। সামসু ও লিভার আহাদ আলী তাদের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই টোকেন বানিজ্যের মাধ্যমেই ৩ বছরে কোটিপতি বনে গেছেন এই সামসু কোম্পানি এবং আহাদ আলী।
আরো জানা যায়, শামিমের রয়েছে একটি অটোরিক্সার গ্যারেজ। শেরশাহ, ডেবারপাড়সহ আশপাশে সামসু কোম্পানী হাতিপাড়া আর ডিপো এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে এনাম। টেকনিক্যাল ও আশপাশের এলাকা জামালের। এছাড়াও নিজেদের মতো ভাগ করে নিয়ে টোকেন বানিজ্য করছে শাহাবুদ্দিন, জুলহাজ, আলাউদ্দিন, নূর হোসেনরা।
এর আগে চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ২৩ম সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছিলেন- নগরীতে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ও জনসাধারণের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে পরিত্রানের জন্য খুব শীঘ্রই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে আলোচনা করে অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সা কাম সিএনজি চলাচল বন্ধ করার অভিযান শুরু করা হবে । তবে তা এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এখানে। লাইনম্যান আবুল এইসব কাজে সার্জেন্ট মেনেজ করে থাকে। বাংলাবাজারে সার্জেন্টের উপর হামলার অন্যতম আসামী লাইনম্যান কিশোরগ্যাং লিভার, চাঁদা প্রকাশ ইন্দুর আনোয়ার, আহাদ আলী টোকেন বাণিজ্যের মূলহোতা সামসুর আপন মানুষ। এই বিষয়ে জানতে টিআই সুশোভন চাকমাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।