রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমলেও মিলছে না স্বস্তি। সারাদিনের তীব্র তাপপ্রবাহে শরীরের ত্বক পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। এমন পরিস্থিতিতে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
যদিও দেশে তাপপ্রবাহ মে এবং জুন মাসে বাড়ে। কিন্তু এ বছর এপ্রিলের শুরু থেকেই তাপ বৃদ্ধির পারদ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। ফলে, একপ্রকার বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীতে তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ৩টায় যশোরে চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
একই দিন চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাটিতে টানা ১৪ দিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকায় ৩৮ ডিগ্রি, সাতক্ষীরা ও টাঙ্গাইলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪০ দশমিক ২, খুলনায় ৪১ ডিগ্রি, খুলনার মোংলা, রাজশাহী ও পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ এবং যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি।
আবহাওয়া অধিদফতরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের উপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়া, জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে অস্বস্তি। এই তাপপ্রবাহ সহসাই কমছে না। আরও বেশ কয়েকদিন তাপমাত্রা এমন উষ্ণ থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এমন তীব্র দাবদাহে দুর্বিষহ অবস্থা পার করছেন দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলো। এছাড়া তাপদাহে গত কয়েকদিনে ডিহাইড্রেশন, জ্বর ও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী মায়েরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। অনেককে হাসপাতালে চিকিৎসাও নিতে হয়েছে।
দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই তাপপ্রবাহ সহসাই কমছে না। আরও বেশ কয়েকদিন আবহাওয়া এমন উষ্ণ থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় সব স্কুল-কলেজ ৭ দিনের ছুটি ঘোষণা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অন্তত টানা ৫ দিন কোনো এলাকায় গড় তাপমাত্রার চেয়ে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি অব্যাহত থাকলে ঐ ঘটনাকে দাবদাহ বলা হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মৃদু দাবদাহ ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে মাঝারি দাবদাহ এবং ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রাকে তীব্র দাবদাহ হিসেবে বিবেচনা করে।সবটুকু জানতে ক্লিক করুন