আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নে বোয়ালিয়ায় ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে আনয়ারার সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত। এই জামাতে একসঙ্গে প্রায় ৫হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের। প্রখর রোদ আর তীব্র দাবদাহেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি আনোয়ারাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বারশত ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডসহ আশেপাশের অন্যান্য ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনার ও মাঠ বোয়ালিয়ার এই ময়দানে এবার ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন জেলা-উপজেলার দুরদুরান্ত থেকে আসা কয়েক হাজার মুসল্লি।
প্রতি বছর নিয়মিত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও আধুনিক নির্মাণশৈলীতে এই ঈদগাহে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। কিন্তু মাঝখানে করোনা পরিস্থিতির জন্য দুই বছর এই ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি ঈদের জামাত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ায় এ যাবৎকালের সর্বোচ্চসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় ঈদুল ফিতরের জামাত।
তীব্র গরম উপেক্ষা করে সকাল ৭টা থেকেই মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন এই ঈদগাহে। ঠিক সাড়ে ৮টায় শুরু হয় নামাজ। এখানে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহসহ ইসলামের জন্য শান্তি কামনা করে করা হয় মোনাজাত।
বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্থানীয় মেম্বার, সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, প্রশাসনের কর্মকর্তা,সাংবাদিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনতা।
এদিকে বৃহৎ এই জামাতে অংশ নিতে পেরে খুশি মুসল্লিরা। তারা জানান, এবার ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা এসে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। বোয়ালিয়া ঈদগাহ ময়দানে বৃহৎ পরিসরে ঈদের জামাত শুরু হওয়ার পর থেকে এবার সর্বোচ্চ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেন তারা।
মুসুল্লিরা বলেন, এত বড় মাঠ ও এত মুসল্লিকে সঙ্গে নিয়ে এটাই তাদের প্রথম নামাজ। এই অনুভূতি কাউকে বোঝানোর নয়। তারা এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে এবং ব্যবস্থাপনা দেখে খুব খুশি।
এখানে নামাজ আদায় করে একই রকম অনুভূতি প্রকাশ করেন ঢাকা-চট্রগ্রাম থেকে আসা,প্রবাস থেকে আসা অনেক মুসুল্লিগন।
তারা বলেন, আনোয়ারায় বড় জামাতের কথা শুনে শহরে ঈদের নামাজ না পড়ে এখানে ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছি। এটি আসলেই বৃহৎ জামাত। এই বড় জামাতে নামাজ আদায় করেছি বড় সওয়াবের আশায়। তবে দূরের মুসল্লিদের জন্য বিশেষ করে এই ঈদগাহ সংলগ্ন কিছু মেঠোপথ রয়েছে যেগুলি সংস্করণ করা খুব জরুরী। তারপর বিশেষ কোনো পরিবহনব্যবস্থা করলে মুসল্লিরা এখানে সহজেই আসতে পারত।
আনোয়ারা থেকে আসা জামাল বলেন, ঈদের কারণে যানবাহন পেতে সমস্যা হয় দেখে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে নামাজ আদায় করতে আসেন না। যদি প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে মুসল্লি আরো বেড়ে যাবে।
মুসুল্লিরা দাবি করেন,বৃহৎ এই জামাতে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের জন্য স্থাপন করা হোক শৌচাগার, ওজুর ব্যবস্থা। বসানো হোক মেডিক্যাল টিম। পুলিশ ও আনসারসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে নেওয়া হোক নিরাপত্তাব্যবস্থা। সুষ্ঠুভাবে নামাজ সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন উপজেলা প্রশাসনসহ সকল স্তরের মানুষ।