বিশেষ প্রতিনিধি
ডজন খানেক মামলার আসামি সাবেক শ্রমিক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম খোকন কিন্তু আইনের চোখে অপরাধী হয়েও দিনরাত দিব্যি চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করে যাচ্ছে কথিত এই শ্রমিক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম খোকন।
চট্টগ্রাম অটোরিকশা অটোটেম্পো শ্রমিক লীগের সাধারন সম্পাদক কথিত শ্রমিকনেতা নজরুল ইসলাম খোকনের প্রতারণার ফাঁদে সর্বহারা হচ্ছেন পরিবহণ মালিকরা। তার অনৈতিক কর্মকান্ডে পরিবহণ সেক্টরে চলছে অসন্তোষ ও বিশৃংখলা।
নিজেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্ববৃহত্তম সংগঠন শ্রমিক লীগের নেতা দাবী করে নিজেকে বাঁচাতে দ্রুত রাতারাতি বনে যান শ্রমিকলীগ নেতা।এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।এই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্ববৃহত্তম সংগঠনের ব্যানার ব্যাবহার করে খোকন বিআরটিএকে চাপে রেখে গাড়ির রেজিষ্টেশন, রুট পারমিট ও সিএনজি ট্যাক্সি স্ক্যাপ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মালিকদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ/চাঁদাবাজি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে একাধিক পরিবহন মালিক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, নজরুল অনেক ব্যক্তিকে ফুসলিয়ে গাড়ি কিনতে উৎসাহ জোগায় এবং রেজিস্ট্রেশন ,রুট পারমিট করে দেওয়ার কথা বলে শতাধিক মালিক থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় । সে ভয়ংকর প্রকৃতির লোক । তার কথার বাইরে গেলে হত্যা করে লাশ গুম ও মিথ্যা মামলায় জেল খাটানোর হুমকি দেয়।তাই কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না।
আল্লাহর দান মোটরস এর মালিক আলী আকবর জানান, কথিত শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলাম খোকন বিআরটিএ’তে সিএনজি টেক্সি স্ক্যাপ করনের আশ্বাস দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বিআরটিএ বিরুদ্ধে একটি ভিডিও করতে বাধ্য করায় এবং ৫ /৬টি সিএনজি ট্যাক্সি প্রতিটি স্ক্যাপ করনে তিন লক্ষ টাকা দাবি করে।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কাছে কথিত শ্রমিকনেতা নজরুলের বিরুদ্ধে অসংখ্য মালিক তার প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে তিন মালিকের অভিযোগ আমাদের হাতে ইতিমধ্যে এসেছে।এর মধ্যে তিনজন থ্রি হুইলার অটোটেম্পু মালিক হলেন যথাক্রমে মো: সাদ্দাম হোসেন ,মো ফারুক ও মো: জসিম উদ্দিন ।
এই তিন মালিকের সিএমপি কমিশনার বরাবরে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কথিত শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলাম খোকন বিআরটিএ হতে রেজিষ্ট্রেশন ও রুট পারমিট সম্পূর্ন করার আশ্বাসে দিয়ে গাড়ি প্রতি নগদ ৪৫ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে মালিকরা রুট পারমিট,রেজিস্ট্রেশনের তাগাদা দিলে সে রাহাত্তার পুল হতে চকবাজার এবং বলিরহাট হতে বহদ্দারহাট পর্যন্ত চট্টগ্রাম অটোরিকশা অটোটেম্পো শ্রমিক লীগ রেজিঃ নং চট্ট ১৪৬৯ এর ব্যানারে রীট পিটিশন মামলা নং ৬৭৫৬/২০২২ এর আদেশের অধীনে কিছুদিন গাড়ীগুলো চালানোর ব্যবস্থা করে দেন। সে সুবাধে তার ভাই সুমন, লাইনম্যান মনিরের মাধ্যমে প্রতি গাড়ী ভর্তি ৩০ হাজার টাকা করে নেয়। দৈনিক চাঁদা ৩শত টাকা এবং পুলিশ খরচ বাবদ মাসিক ৩হাজার টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ গত জুলাই ২০২২ মহামান্য হাইকোর্ট রীট পিটিশন মামলা নং ৬৭৫৬/ ২০২২ আদেশ বাতিল হলে সিএমপি ট্রাফিক বিভাগ গাড়ীগুলো চলাচল বন্ধ হয়ে দেন। যার কারণে রেজিষ্ট্রেশন ও রুট পারমিটের জন্য দেয়া টাকা ফেরত চাইলে তা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং হত্যা করে লাশ গুম ও মিথ্যা মামলায় জেল খাটানো হুমকি প্রদান করলে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন মালিক যৌথভাবে বাকলিয়া থানায় অভিযোগ দিতে গেলে গত ৩০শে জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক ৫ নং ব্রীজের মুখে নজরুল ইসলাম খোকনসহ তার ভাই সুমন, মইন্যা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে থানায় অভিযোগ দিতে বাধা প্রদান করেন।
এইরকম একটি পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ মালিকরা টাকা ফেরত পেতে সিএমপি কমিশনারের হস্তক্ষেপ চান এবং এই নেতাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেছেন।
এই বিষয়ে নজরুল ইসলাম খোকনকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, সব বানানো, মিথ্যা, ভুয়া তথ্য আমার বিরুদ্ধে একটি মহল বাজারে গুজব ছড়াচ্ছে।এই বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে শ্রমিক নেতা খোকন তার বক্তব্য স্পষ্ট করেন বলে জানা গেছে।।