ফৌজদারহাট বন পরীক্ষণ ফাঁড়ি দিয়ে দিনে ও রাতে অহরহ অবৈধ বনজদ্রব্যসহ গাড়ী নিমিষে চলে যায়। তবে রাতে বেশী দিনে কম। চাঁদা পায় চেক পোস্টের লোকেরা ফলে বৈধ – অবৈধ আর দেখা হয় না। ঘণ্টাখানেক এখানে দাঁড়ালে যে কেউ এ দৃশ্য দেখতে পাবে। সন্দেহভাজন কেউ এখানে দাঁড়ালে তাদেরকে চেক পোস্টের লোকজন তাড়িয়ে দেন। এসব কাজে স্বয়ং স্টেশন কর্মকর্তা মনজুরুল আলম চৌধুরী সহায়তা করে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, দিনে কম রাতে বেশী অবৈধ বনজদ্রব্য এই পরীক্ষণ ফাঁড়ী হয়ে সারাদেশে পাচার হয়। চোরাই মূল্যবান কাঠসহ মাদকদ্রব্যও যায় এই পথে। মাদক ব্যবসায়ীরা কাঠ পাচারের সাথে মাদক পাচারও নিরাপদ মনে করে থাকে ।পথে পথে বন পরীক্ষণ ফাঁড়ী , হাইওয়ে পুলিশ ও থানার ক্যাশিয়ার এসব বনজদ্রব্যের গাড়ী থেকে চাঁদা পায় বলে কেউ চেক করে না। বিশেষত বান্দরবান ও কক্সবাজার এলাকা থেকে আসা বনজদ্রব্য নিয়ে আসা গাড়ীতে ইয়াবা ও গাজাও পাচার হয়।বন পরীক্ষণ ফাঁড়ি কর্মকর্তার সাথে কাঠ পাচার চক্রের সাথে অবৈধ লেনদেনের কারণে অবৈধ বনজদ্রব্যের সাথে মাদকও পাচার হয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্হার লোকজন একটু অনুসন্ধান চালালে এসব তথ্যের সঠিকতা খুঁজে পাবে ।
ফৌজদারহাট চেক বিটে চলছে সীমাহীন অনিয়ম। বনাঞ্চল থেকে অবৈধভাবে আহরিত চোরাই কাঠ সহ সকল ধরনের বনজ পণ্য এই বিট দিয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ কালীন গাড়ি প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে ছেড়ে দেয়ায় প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকার বনজ দ্রব্য পাচার হচ্ছে। ফলে বন বিভাগ ও মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই বিটের দায়িত্ব প্রাপ্ত ফরেস্টার মনজুরুল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিদিনই এই বিটে চোরাই বনজ দ্রব্যবাহী গাড়ী থেকে লক্ষাধিক টাকা ঘুষ আদায় হলেও থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।অথচ ২০১৯ ফৌজদারহাটে ২ মাসে অর্ধকোটি টাকার অবৈধ কাঠ আটক করা হয়েছিল।
বনজদ্রব্য ভর্তি গাড়িগুলোতে যে ট্রানজিট পাস (টিপি) এই চেক বিট অফিসে প্রদর্শন করা হয় তার বেশিরভাগ গাড়িতে টিপিতে উল্লেখিত কাঠের মাপ, পরিমাপ, জাতে’র কোন মিল থাকে না। চেক বিটের কাজ হচ্ছে বনজদ্রব্য ভর্তি গাড়ী সমূহের প্রদর্শিত টিপি অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা।
টিপি বহির্ভূত কোন বনজদ্রব্য আসলেই গাড়ি জব্দ করে মামলা দিতে হবে। কিন্তু এই চেক বিটে গাড়ী প্রতি প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা আবার টিপি ছাড়া আগত সম্পূর্ণ চোরাই কাঠ ভর্তি ট্রাক থেকে ক্ষেত্রবিশেষ ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করে ছেড়ে দেয়া হয়। এই চেক বিট থেকে চেকিং করে সবকিছু ঠিক আছে বলে ছেড়ে দেয়ার পরও পরবর্তী স্টেশন ওই গাড়ি চেক করে অবৈধ চোরাই কাঠ ভর্তি কাঠ ধরে গাড়ি জব্দসহ মামলা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ থেকে সহজেই অনুমেয় হয় ফৌজদারহাট চেক বিটে কি ধরনের চেকিং হচ্ছে।
অনুসন্ধানকালীন দেখা যায় চোরাই কাঠ ভর্তি যানবাহন আটকিয়ে ফরেস্টার একটু দূরবর্তী জায়গায় নিয়ে ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে চার্জশিট/ ফাইনাল করছেন। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের যে কোন কর্মকর্তা গোপন বা প্রকাশ্য অনুসন্ধান চালালে এর সত্যতা মিলবে। হাতে নাতে ঘুষসহ ধরা যাবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের লোক এই বড়াই করা এই চেক পোস্টের কর্মকর্তার জীবন যাত্রার মান খোদ ডিএফও’র জীবন যাত্রার মানকেও হার মানায়।