চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম জোন-২(পটিয়া) এর উপ সহকারি পরিচালক আবদুল্লাহ’র বিরুদ্ধে অনৈতিক ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠছে। খাতুনগঞ্জের আবাসিক হোটেল(বোর্ডিং),হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট,ফিলিং স্টেশন,তৈল,গ্যাসের দোকান,মুদির দোকান,ঔষধের দোকান,হাসপাতাল,ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সরকারি এবং বেসরকারি অফিস আদালতসহ সব ধরনের ইমারত ও প্রতিষ্ঠান থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ সহকারি পরিচালক আবদুল্লাহ’র ঘুষ নানা অভিযোগে নিয়ে থাকে।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ডিএডি আবদুল্লাহ কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত থাকাকালীন বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চট্টগ্রামে বদলী করা হয়। চট্টগ্রামে বদলী হওয়ার পর থেকে ডিএডি আবদুল্লাহ’র অনিয়ম,দূর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য আরও বহুগুণ বেড়ে যায়। আল নূরানী বোর্ডিং ১৫৯৮ নং আছদগঞ্জ চট্টগ্রামে অবস্থিত ৪ তলা বিশিষ্ট ভবনটি ফেটে চৌঁচির ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবন এর অংশীদার মোঃ জহুরুল হক ডিএডি আবদুল্লাহকে ফোন করে জানায়। ডিএডি আবদুল্লাহ তার অধীনস্হ লামার বাজার ফায়ার স্টেশন এর সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলামকে ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শনে পাঠায়। সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলাম ঝুঁকিপূর্ন ওই ৪ তলা ভবন পরিদর্শন করেন ও আল নূরানী বোর্ডিং এর মালিক মোঃ শাহজাহানকে ওই ভবন টিকিয়ে রাখতে পারার পরামর্শ দেন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি টিকিয়ে রাখতে হলে সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলামের জন্য নগদ এক লক্ষ টাকা ও ডিএডি আবদুল্লাহ’র জন্য আড়াই লক্ষ টাকা ঘুষ বাবদ দিলে ঝুঁকিপূ্র্ণ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসাবে না দেখানোর আশ্বাস দেয়।
অভিযোগকারী মো: জহুরুল হক জানান ৪০ বছর পূর্বে আমার পিতার নির্মিত ৪ তলা ভবনটি কালক্রমে এবং সাম্প্রতিক সময়ে পাশ দিয়ে বহমান চাক্তাই খাল খনন কর্মকান্ড শুরু হওয়ার পর থেকে ভবনের বিভিন্ন অংশের ছাদ,কলাম, বীম ও সিঁড়িতে মারাত্মক ফাটল দেখা দেওয়ার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় পরিদর্শন শেষে ভবনটি বসবাস উপযোগী নহে এবং পরিত্যক্ত ঘোষণার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এই নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায়ও লেখালেখি হয়। ইতিমধ্যে আমরা অংশীদারগনের হেফাজতে থাকা অংশে সকল আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত শাহজাহান ওই ভবনের অন্যতম অংশীদার হওয়ায় সকল নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ব্যক্তিগত লাভের চিন্তা করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের একাংশে আল-নূরানী বোর্ডিং চালু রেখেছে।
প্রতিদিন এই বোর্ডিং এ সেবা নিতে আসা লোকজন নিজেদের অজান্তে এই আবাসিক হোটেলে রাত্রি যাপন করছে। যে কোন সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশংকায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আবাসিক হোটেল সহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কর্মকান্ড পরিচালনার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনাসহ প্রাণহানীর আশংকা রয়েছে। এরপরও অভিযুক্ত ব্যক্তি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় কাউন্সিলরের দোহাই দিয়ে এহেন কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। অভিযুক্ত শাহজাহান সামাজিক নীতি-নৈতিকতা ও ব্যক্তিগত মূল্যবোধের প্রতি মোটেই শ্রদ্ধাশীল নয় বলে স্হানীয় সুত্র দাবী করছে। গায়ের জোরে সবকিছুই করতে চায়।জনস্বার্থে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে সকল আবাসিক ও ব্যাণিজ্যিক কর্মকান্ড বন্ধ রাখার জন্য অভিযুক্তকে বারণ করলেও তিনি গায়ের জোরে আবাসিক বোর্ডিং বন্ধ করবে না বলে এ প্রতিবেদককে সাফ জানিয়ে দেয়। অংশীদারগণ স্থানীয় ওয়ার্ত কাউন্সিলর, সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসক, সিডিএ , উপ পরিচালক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, চট্টগ্রাম বরাবর এই বিষয়ে আবেদনও করেছে।
এ বিষয়ে বোর্ডিং মালিক ও অভিযুক্ত মোঃ শাহজাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে বিস্তারিত জানার কথা বলে ফোন কেটে দেয়। এ বিষয়ে ডিএডি আবদুল্লাহ’র কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি অভিযোগকারিকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে একটি অভিযোগ দিতে বলেছি এবং অভিযোগের একটি কপি উপ- পরিচালক চট্টগ্রামকে দিতে পরামর্শ দিয়েছি। ভবনটি টিকিয়ে রাখতে আমার জন্য আড়াই লক্ষ টাকা ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, লামারবাজার ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সাইফুল ইসলামের জন্য নগদ এক লক্ষ টাকা উৎকোচের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।