শাহিন আহমেদ ও অপূর্ব শর্মা
হালিশহর-বড়পোল ও বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য গোল চত্বর ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ বাজার ।এই বাজার থেকে একটি চিহ্নিত সিণ্ডিকেট নিয়মিত পুলিশের নামে চাঁদা তুলে ।কিন্তু পুলিশ বলছে ‘না’।বিশাল অংকের এই চাঁদা ঘাটে ঘাটে ভাগ হয়। ফলে বাজার বন্ধ হয় না বরং নিরিহ পথচারীদের নিত্য দূর্ভোগ লেগেই আছে। ঘটছে অহঃরহ দূর্ঘটনাও।স্হানীয় ওয়ার্ড কমিশনার বার বার চেষ্টা চালিয়েও ওই সিণ্ডিকেটের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে এই বিষয়ে । পুলিশ সিণ্ডিকেটকে আশ্রয় দিচ্ছে বলে এই অবস্হার অবসান হচ্ছে না এই অভিযোগ সচেতনমহলের । সৎ ও দেশপ্রেমিক লোক দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করলে বাস্তব চিত্র বের হবে ।
খবর নিয়ে জানা গেছে, হালিশহর বড়পোল ব্রিজ থেকে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ঘিরে অ্যাক্সেস রোডের মোড় ।অ্যাক্সেস রোডের মোড় এই অংশের দূরত্ব মাত্র ৩০০ মিটার। স্বল্প দূরত্বের এ জায়গার ফুটপাত ও সড়কে ৮০ টির অধিক ভাসমান দোকান বসিয়েছে উল্লেখিত। হালিশহর-বড়পোল ও বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য গোল চক্কর ঘিরে দৈনিক লক্ষাধিক লোকের যাতায়াতের পথ। এ পথ দিয়ে হালিশহর ও আশপাশের এলাকার হাজারো কর্মজীবী মানুষ তাদের কর্মস্থলে যায়।
পথচারীরা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে বসা দোকানদাররা ফুটপাত আগেই দখলে নিয়েছে। ইদানিং ভ্যানগাড়ি বসিয়ে দখল নেয়া হয়েছে মূল সড়কও। ফলে ফুটপাত ও সড়ক দুটোই এখন ভাসমান দোকানদারদের দখলে। এতে সৃষ্টি হয়েছে দু’টো সমস্যা। প্রথমত ফুটপাতে হাঁটতে না পেরে মূল সড়ক দিয়ে হাঁটতে হচ্ছে পথচারীদের, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে তাদের। দ্বিতীয়ত, ভাসমান গাড়ির জন্য সড়ক সংকুচিত হওয়ায় বাড়ছে যানজটও।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বড়পোল ব্রিজ থেকে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ঘিরে এক্সেস রোডের মোড় পর্যন্ত অংশে অবৈধভাবে বসা দোকানগুলোর পেছনে রয়েছে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কিছু নেতা ও পুলিশের ছত্রছায়া। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা তুলেন তারা। যার দোকান যত বড় তার টাকার চাঁদার অংক তত বেশি এসব চাঁদাবাজের মধ্যে রাজনীতির শীর্ষ নেতার এক অনুসারী একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। বাকি অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন হালিশহর থানা পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আবার রাস্তায় থাকা ভাসমান দোকানের ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে সড়কে। এতে সংকুচিত হয়ে পড়েছে সড়ক। ফলে যারা কোনাকাটা না করে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তারা বারবার প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হোন।এখানে পকেটমার চক্র ও ছিনতাইকারীও আছে ।
সিটি কর্পোরেশনের এক পরিচ্ছন্ন কর্মী বলেন , অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সড়ক ও ফুটপাত তারা লিজ নিয়েছেন। তাই তারা দখল নিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তাদের লিজ দিয়েছে কে? সড়ক ফুটপাতের মালিক তো সিটি কর্পোরেশন। তারা চুপ কেন? চুপ থাকার পেছনে তাদের স্বার্থ কোথায়?
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো.ইলিয়াস উদ্দিন বলেন, হালিশহর বড়পোল শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় মানুষের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। আপনি ভালো একটি কাজ হাতে নিয়েছেন আপনার চাওয়া আর আমার চাওয়া একই হয়ে গেছে, আপনি সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করুন তাহলে কাজ হবে আমাদেরকে দিয়ে এ বিষয়ে কাজ হবে না ভাইয়া।
ফুটপাতের ব্যবসা কারা নিয়ন্ত্রণ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী নামধারী সন্ত্রাসীরা চাঁদা তুলছে, বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি মানুষের চলাচলের পথটা ঠিক রাখতে। কিন্তু দলের নামধারীরদের কারণে পারা যাচ্ছে না। এজন্য সিটি কর্পোরেশনকে কঠিন প্রদক্ষেপ নিতে হবে।
এ বিষয়ে হালিশহর জোনের টিআই মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদা উঠানোর বিষয়টা আমি জানি না এটা ক্রাইম ডিভিশন জানে আমি মাঝে মধ্যে গিয়ে সরিয়ে দেই। কি করব ভাই আমাদের লোক সংখ্যা কম তাই আমরা পেরে উঠতে পারছিনা কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে টিআই মামুন চাঁদাবাজদের সিন্ডিকেট এর কাছে আমার ফোন দেওয়ার বিষয়টা জানিয়ে দেয় বোঝার আর বাকি নেই যেন সিণ্ডিকেট ও পুলিশের লুকোচুরি খেলা।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কর্মকর্তা কমান্ডার লতিবুল হক তাজমি বলেন, ফুটপাত দখলের কারণে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তাই কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা সেখানে অভিযান চালাবো।
এ বিষয়ে হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ কায়সার হামিদ বলেন, এই বাজার বসানোর অনুমতি দেওয়ার আমরা কে ? আমাদের টাকা কেন ওঠাবে আমরা ধরে নিয়ে আসি এবং ছাড়ার পরে আবার গিয়ে দোকান বসায়।আপনি নিউজ করে দিন ।