ক্লীন ইমেজের ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে ব্যবস্হা নিতে এলাকাবাসীর অনুরোধ
শর্মিলা দাশ ও তসলিমা আকতার
ঢাকা – চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারমূখী বাস কর্ণফুলী ব্রীজের উত্তর পাড় আখতারুজ্জামান চৌধুরী চত্বরের রাস্তা দখলে রেখেছে ।এখানে হরখামেশাই লেগে থাকে যানজট ও বিশৃংখলা । বহু দূর্ঘটনা ঘটেছে এই স্পটে। প্রতি বিষুদবার এখানে কৃত্রিম বাস সংকট হয়। বিপাকে পড়ে যাত্রীরা। মোবাইল ছিনতাইচক্র, পকেটমার ও অবৈধ অননুমোদিত গাড়ীর জটলা বেঁধে যায় এখানে।যাত্রী নিয়ে টানা হেছরাতো আছেই। সব মিলে এক দূর্বিসহ পরিবেশ বিরাজ করছে কর্ণফুলী ব্রীজ স্টেশনে । ঢাকা – চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারমূখী বাসগুলো রাস্তা কীভাবে দখলে রেখেছে তা রহস্যজনক, গোপন ও অজানা কারবারে হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠছে।
রাস্তা দখল করে হকারেরা ব্যবসা করছে এখানে যে কারও চোখে পড়ে এই দৃশ্য । সেকান্দর নামক ১ জন এসব হকার থেকে প্রতিদিন চাঁদা নেয়।এই সেকান্দরের আবার ‘বস’ আছে।টোকেন ও চাঁদাবাজি অভিযোগও আছে এখানে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশ পথ নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় যাত্রী হয়রানী লেগেই আছে। আছে দূর্ঘটনা ও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটও । এ সবের মূলে সাধারণ মানুষ ও স্থানীয়রা দায়ী করছে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে। সাধারণ মানুষ ড্রাইভার, হেলপার ও গাড়ীর মালিক সবাই জেনে গেছে ট্রাফিক পুলিেেশর নানা অনিয়ম ও চাঁদাবাজির হিসাব নিকাশ। ফলে এখানে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নেই বললেও চলে।
পূর্ব বাংলা পত্রিকার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞাকে রীতিমত বৃদ্ধাঙুলী দেখিয়ে এই সেতু হয়ে প্রতিদিন নগরে প্রবেশ করছে শতশত অবৈধ সিএনজি ও ডকুমেন্ট বিহীন মাহেন্দ্ৰ, হিউম্যান হলার, মাইক্রো বাস ও মিনিবাস সহ বিভিন্ন যানবাহন। এসব গাড়ী গ্রাম অঞ্চলের হলেও অবৈধ লেনদেন মাধ্যমে ঢুকে পড়ে নগরে। এই লেনদেনে শিকলবাহার ছৈয়দ ও জাহাঙ্গীর নামক দুই ব্যক্তি জড়িত বলে জানা গেছে।এদের কারণে ক্লীন ইমেজের ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বদনাম ।বিশেষত ভুমিমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার জনগণের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই কর্ণফুলী ব্রীজ।
কোতোয়ালীর জাহেদ, চন্দনাইশের জানে আলম , গ্যারেজ মালিক ফোরকান ও হাজী দেলোয়ার এসব ব্যাক্তিদের অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধ গাড়ী গুলো অবাধে চলে বাকলিয়ার আনাচে কানাছে।জানে আলম ইতিপূর্বে এই অপকর্মে জড়িত থাকার অপরাধে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হন ও জেলবাসও ছিলেন।ছৈয়দ কর্ণফুলী ব্রীজ টু টোল বক্স পর্যন্ত মাহেন্দ্র গাড়ী নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। জনপ্রতি মাহেন্দ্র গাড়ী ২০ টাকা করে ভাড়া নেয়।প্রতি গাড়ী প্রতিদিন ২৫০ টাকা করে চালক কিংবা মালিক ছৈয়দ কে দিতে হয়।এখানে প্রতিদিন ভাড়া নৈরাজ্য লেগেই আছে।
অভিযোগ আছে, ট্রাফিক পুলিশ ও কতিপয় হাইব্রীড নেতা ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে চাঁদা নিয়ে এসব যানবাহনকে শহরে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল টাকা। আর এসব যানবাহন পুরো শহর জুড়ে অবাধেই চলছে।যানজট লাগার জন্য গ্রামীন গাড়ী শহরের চলার পেছনে অধিকাংশ দায়ী।কয়েকজন সার্জেন্ট নিজেদের গাড়ী দাবী করে শহরজুড়ে অস্হিরতা শুরু করে দিয়েছে।
জানা যায়, হিউম্যান হলার, গ্রাম সিএনজি, মাহেন্দ্র, মিনি বাস, রাইডারসহ রুট পারমিটবিহীন বিভিন্ন অবৈধ গাড়ি চলাচল করে এখানে অনায়াসে। মাসোয়ারার বিনিময়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগ অবৈধ গাড়িগুলো চলার সুযোগ করে দেয় । এ ছাড়া বাকলিয়া এলাকার অলি গলিগুলোতেও অবৈধ অটো রিক্সার স্বর্গ রাজ্য চলছে। কিছু গাড়ি দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শহরে ঢুকে আবার কিছু গাড়ি নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে ছেড়ে যায় শহরের উদ্দেশ্যে আর এসব কিছুরই নিয়ন্ত্রক ট্রাফিক পুলিশ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন বান্দরবান কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, মগনামা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, কর্ণফুলী এবং পটিয়া থেকে অসংখ্য নিবন্ধিত যান সিএনজি চালিত অটোরিকশা মহাসড়ক দিয়ে শাহ আমানত সেতু পার হয়ে নগরে প্রবেশ করে। এর মধ্যে অনিবন্ধিত ৩৫০টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা লাইন খরচ বাবদ দৈনিক ও মাসিক টাকা দেয় টেন্ডল মাধ্যমে ট্রাফিক পুলিশকে ।বাকী গ্রাম নাম্বারধারী ১০০ অটোরিকশা (সিএনজি) থেকে একই হারে দৈনিক ও মাসোহারা নেয় কয়েকজন ক্যাশিয়ার নামধারী ব্যাক্তি। এসব টাকা তোলার জন্য টেন্ডল হিসেবে জাহাঙ্গীর মিস্ত্রিসহ বেশ কয়েকজনকে ব্যবহার করেন ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা।
সিএনজি চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় জাহাঙ্গীর মিস্ত্রি নামের এক চাঁদাবাজের যোগসাজশে প্রতিটি অনিবন্ধিত সিএনজি থেকে মাসোহারা ও দৈনিক হিসেবে চাঁদা নেন। টাকা তোলেন জাহাঙ্গীরের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত দুই আলমগীর, অলী ও জামাই হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তিসহ ৪ জন। এ সব টাকা তুলেন টিআই’র নামে টেন্ডল হারুন নামের এক যুবক।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, টেন্ডলখ্যাত ব্যাক্তি অবৈধ টাকা তোলার মূল কারিগর। তাকে দিয়ে প্রতিমাসে কয়েক লাখ টাকা তুলেন বাকলিয়ার ট্রাফিক পুলিশ । এই বিষয়ে টিআই অপূর্ব এর সাথে কথা বললে তিনি পূর্ব বাংলাকে বলেন টেন্ডল হারুন, জাহাঙ্গীর মিস্ত্রি, দুই আলমগীর, অলী ও জামাই এদের কাউকে আমি চিনি না বরং আমি যোগদানের পর ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ -এ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ৩৪৭টি গাড়ি আটক করি। ২৭১টি গাড়ি বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনের আওতায় মামলা দেয়া হয়। তার মধ্যে ব্যাটারি চালিত রিক্সা ১৮৬টি, অনটেস্ট সিএনজি ৪২টি, ম্যাক্সিমা ৫০টি ও অন্যান্য-৬৯টি।তা ছাড়া গত ১ অক্টোবর থেকে ৩১ -এ অক্টোবর পর্যন্ত ২৮৭টি গাড়ি আটক করি। মামলা দেয়া হয় ২৭০টি গাড়ির । ব্যাটারিচালিত রিক্সা ১৫৬টি, অনটেস্ট সিএনজি ৪৫টি, ম্যাক্সিমা ৪৩টি ও অন্যান্য-৪৩টি।