রপ্তাণী বাণিজ্যে অনন্য অবদানের জন্য সবচেয়ে তরুণ বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় রপ্তানি( স্বর্ণ) ট্রফি পেলেন চট্টগ্রামের সন্তান এন.আর.ট্রেড ইন্টারন্যাশন্যালের সত্ত¡াধিকারী মোঃ নুর উদ্দীন রুবেল সিআইপি। ৮ নভেম্বর বিকেল ৩টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুন্সী এমপির হাত থেকে তিনি এ পুরষ্কার গ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন এফবিসিসিআই এর সভাপতি মোঃ মাহব্ুুবুল আলম। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রাণালয়ের সিনিযর সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রপ্তাণি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম.আহসান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমি তো ব্যবসায়ী, যদিও মন্ত্রী হয়েছি। কিন্তু মন্ত্রী হয়েও মন্ত্রী মন্ত্রী ভাব আমার হলো না।মনের দিক থেকে আমি এখনও ব্যবসায়ী রয়ে গেলাম।
বুধবার (০৮ নভেম্বর) বিকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০২০-২০২১ প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের দেখে ভালো লাগে যে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে আছি। যাদের রপ্তানি ট্রফি দিচ্ছি তাদের দেখে মনে হয়, তারা আমার ঘরের ও প্রাণের কাছের মানুষ।আমরা প্রতি বছর রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি যাদের ওপর ভরসা করে, তাদের সম্মাননা দিতেই এখানে এসেছি। আমার সামনেই বেশ কয়েকজন পরিচিত মুখ দেখতে পারছি। যাদের সঙ্গে এক সময় ব্যবসায় জড়িত ছিলাম। আজকে আমি মন্ত্রী হয়েছি, মঞ্চে এসে বসেছি। তবে তাদের মধ্যে থাকতে পারাটাই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।
উল্লেখ্য নুর উদ্দীন মোঃ রুবেল ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের ভিত্তিতে বিভিন্ন পণ্য ও খাতভিত্তিক জাতীয় রপ্তানি ট্রফি অর্জন করেছেন। মোঃ নুর উদ্দীন রুবেল মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ব্যবসা শুরু করেন অল্প পুঁজি নিয়ে। বর্তমানে এন.আর.ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও ডিজিটাল গার্মেন্টস এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠানসহ নুর উদ্দীন রুবেলের প্রায় ১০ টি প্রতিষ্ঠানের একক ও যৌথ মালিকানার সত্ত¡াধিকারী হিসেবে কাজ করছে।।প্রায় ৪০০ জনের অধিক মানুষ তাঁর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। বর্তমানে তিনি তার একটি শীপ ইয়ার্ডকে গ্রীণ শীপ ইয়ার্ডে পরিণত করতে কাজ করে চলেছে।তাঁর ছোট ভাই রিয়াজ উদ্দীন ব্যবসায়িক কাজে আন্তর্জাতিক মাধ্যমের বিষয় ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কাজে সহায়তা করে থাকেন।
মেসার্স এন.আর. ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এর মালিক মোহাম্মদ নুর উদ্দীন রুবেল বলেন, ২০০৯ সাল হতে সুনামের সাথে শিপ রিসাইক্লিং সেক্টর হতে আমদানীকৃত স্ক্র্যাপ জাহাজ এবং সমগ্র বাংলাদেশ হতে সংগৃহীত নন-ফেরাস (অলৌহঘটিত) মালামাল (তামা, পিতল, স্টেইনলেস স্টীল, এ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি) আন্ততর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করে দেশে চলমান ডলার সংকট নিরসন ও রির্জাভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখে আসছে। যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্বি এবং উন্নয়নে সহায়তা করছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে নন-ফেরাস স্ক্র্যাপ সামগ্রী (যা আমদানীকৃত স্ক্র্যাপ জাহাজ এবং সমগ্র বাংলাদেশ হতে সংগৃহীত) রপ্তানীর মাধ্যমে সর্বাধিক বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) কর্তৃক “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি” অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য খাতে মেসার্স এন.আর. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্বর্ণ পদক অর্জন করে যা বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ পরবর্তী সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলায় দেশের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধরণের নন-ফেরাস স্ক্র্যাপ উপকরণ রপ্তানির ক্ষেত্রে আমার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এন.আর. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বব্যাপি স্ক্র্যাপ বাজারে একটি নির্ভরযোগ্য এবং যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পরিশ্রম, সততা, একাগ্রতার মাধ্যমে মেসার্স এন.আর. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্ক্র্যাপ রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমানে একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) কর্তৃক “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি” প্রাপ্তি এ প্রক্রিয়াকে আরও তরান্বিত করবে। দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত রপ্তানি খাতের বহুমুখীকরণ ও স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ণে আমার প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অঙ্গিকারাবদ্ধ হয়ে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
ব্যক্তিগত জীবনে নুর উদ্দীনের মোঃ রুবেল সিআইপির পিতা, মাতা, স্ত্রী, ১ ছেলে, ১মেয়ে ১ ভাই নিয়ে যৌথ পরিবার নিয়ে সুখী জীবন যাপন করছে। বর্তমানে তিনি সালমা শায়ের ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, শীতলপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য, দেলীপাহা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক, আহমেদ মিয়া জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদসহ বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা, সেবা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত রয়েছেন।