মাহমুদুল হক আনসারী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনীতি ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে। দিন যতই গনিয়ে আসছে ততই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হতে দেখছি। এই উত্তাপ অর্থনীতির চাকাকে ব্যহত করছে । সরকারি দল বিরোধী দল তাদের জোট রাজনিিতর মাঠে সক্রিয়। বিরোধী দল আগের সময়ের নির্বাচন গুলোকে পরিচ্ছন্ন ও গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে বার বার দাবি করে আসছে। তারা সরকারকে অবৈধ সরকার হিসেবে সভা সমাবেশে বলে আসছেঁ। সরকারের সমস্ত কর্মসূচী পরিকল্পনা উন্নয়নকে অবৈধ সরকার ও অবৈধ কর্মসূচি বলে মনে করছে।
সরকারের লাখ লাখ কোটি টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন কোনো ভাবেই মানতে রাজি নয়। বিরোধী দল সরকারের উপর দোষ চাপাচ্ছে, এই বলে মেগা প্রকল্প উন্নয়ন বাস্তবায়নের নামে দূনীর্তির অভিযোগ করছে বিরোধী দল। তারা বলছে, এই সব প্রকল্প থেকে সরকারের ক্ষমতাসীন নেতা কর্মীরা দূনীর্তির অর্থে টাকার পাহাড় তৈরী করেছে। বাংলাদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করার অভিযোগ প্রতিনিয়ত করছে দেশের রাজনীতির মাঠের বিরোধী দল। অভিযোগ সত্য মিথ্যা যাচাই বাচাই করার দায়িত্ব সরকারের। দৃশ্যমান অবকাঠামো উন্নয়ন পরিলক্ষিত। টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া অজগাঁ গ্রাম থেকে রাজধানীর অলি গলি সব জায়গায় উন্নয়নের অগ্রগতি জনগন দেখছে। ভোগ করছে উন্নয়নের সমস্ত কল্যাণ। প্রশ্ন একটি জায়গায় সেটি হলো দূর্নীতি বন্ধ করা , অর্থ পাচার প্রতিরোধ করা, সমস্ত নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল গুলো অভিযোগের শেষ নেই। নির্বাচন কমিশনের উপর রাজনীতিক দলের আস্থা ও বিশ্বাসের যথেষ্ট সংকট আছে। এই সংকট মোকাবেলা করে সমাধান খুুঁজে বের করতে হবে সরকারী ও বিরোধী দলকে। আজ পর্যন্ত সেই সমাধানের কোনো পথ পন্থা জনগন দেখছেনা।
জনগনের চাওয়া পাওয়া হচ্ছে সুষ্ঠ নির্বাচন ও সুষ্ঠ ভোটের পরিবেশ তৈরী করা। এই কাজটির দায়িত্ব প্রথমত সরকার ও নির্বাচন কমিশনের উপর বর্তায়। এটি করার জন্য যা যা করণীয় তা সরকারের করা উচিত। অতীত নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলের যেভাবে প্রশ্ন একই প্রশ্ন আম ভোটারদের। এই পরিবেশ তৈরী করার জন্য বিরোধী দল মাঠে ময়দানে সভা সমাবেশ ও প্রতিবাদ আন্দোলন করছে। তাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা কী সেটি সরকার ও নির্বাচন কমিশন বিবেচনা করবে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অতি সন্নিকটে। ফলে এখন সরকারও সমস্ত বিরোধী দল নিজ নিজ দাবি আদায় বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে আছে।
সরকারি দল সাংবিধানিক ভাবে বর্তমান সরকারের অধিনেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে কঠোর অবস্থানে আছে। অপরদিকে বড় বিরোধী দল সমূহ তাদের আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন চায়। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করে একটি অস্থায়ী সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন চায়। এই জন্য বিরোধী দল দেশের বাইরের নানা দেশকে অভিযোগ করে দেশের রাজনীতির অঙ্গনে জড়িয়ে ফেলছে। বিদেশী কূটনৈতিক পাড়ায় নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বিরোধী দল। বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বৈদেশিক দেশ সমূহ নানা ভাবে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করছে। তাদের আচার আচরণ কথা বার্তায় মনে হয় সরকারকে চাপ সৃষ্টি করে আগামী জাতীয় নির্বাচন করাতে চায়। তাদের বক্তব্য নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচন কমিশন, সরকারি প্রভাব মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। ভোটার গণ স্বতস্ফুর্ত ভাবে তাদের ভোট তারা যাকে খুশি তাকে দিয়ে ভোটের আমেজ আনন্দ উপভোগ করবে। সেই নির্বাচনে জনগন যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট প্রদানের মাধ্যমে নির্বাচিত করবে। এই কথার মাধ্যমে বিরোধী দল ও বিদেশী কূটনৈতিক পাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে বৈধ অবৈধ ভাবে প্রভাব খাটাচ্ছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমেই অস্থির হচ্ছে। অর্থনীতির চাকা সুষ্ঠ ভাবে পরিচালিত হচ্ছে। শিল্প কারখানা, বাজারের অর্থনীতি সব কিছুই অনিয়ন্ত্রিত ভাবে চলছে। জনগন তাদের দৈনন্দিন অর্থনীতির লেনদেন কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছে না। ব্যাংক থেকে অর্থ হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। মুষ্ঠিময় একটি শ্রেণির কাছে দেশের অর্থনীতি জিম্মি। আম জনগন মধ্যবিত্ত মানুষ বর্তমান সময়ে মোটেও ভালো নেই। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বাজার যেনো জনগনের জন্য মৃত্যুর একটি ফাঁদ। জনগন শাক সবজি লবণ কিনতে পারছে না। বাজারের উপর আগুণ। আয়ের সাথে ব্যয়ের কোনো সামঞ্জস্য নেই। অনিয়ন্ত্রিত বাজার সরকার আছে , নাকি নেই জনগনের সেই প্রশ্ন। জনগনের সুখ দুঃখের যোগ অভিযোগ কোথায় গিয়ে জানাবে তার কোনো ঠিকানা দেখছেনা জনগন। এই হচ্ছে বর্তমান রাজনীতি নির্বাচন ও অর্থনীতির হালচাল। সরকার যেই থাকুক না কেনো জনগনের সূখ দুঃখের খবর রাখতে হবে। জনগনের জন্য সরকার এই কথা রাজনৈতিক দল গুলোকে মনে রাখতে হবে। দায়সারা ভাবে সরকার যদি দেশ চালাতে চায় সেটি হবে যেকোনো সরকারের জন্য একটি মারত্মক অবস্থার পরিণতি।আসুন রাজনীতি নির্বাচন, আন্দোলন ও সরকার গঠন সবকিছু যেনো জন কল্যাণে নিবেদিত হয়।