বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের কো- চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন- ইসলামী শরীয়ায় কোরআন ও সুন্নাহ এ দুটি মূলনীতি পরস্পর আঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ দুটির একটিকে বাদ দিয়ে শরীয়তের কথা চিন্তা করা নিতান্তই অমূলক। কুরআনের যে কোন বিধানের উপর আমল করতে হলে হাদিসের আবশ্যকীয়তা মোটেও উপেক্ষিত হবার নয়। কেননা পবিত্র কোরআনের ব্যাখ্যা হচ্ছে হাদিস। যেজন্য ইসলামী জীবন বিধানে কুরআনে হাকীমের পরপরই হাদীসের স্থান। কুরআন মজীদের শিক্ষা ও নির্দেশসমূহ ব্যাক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কার্যকর করার জন্য রাসুল (দ.) যে পন্থা অবলম্বন করেছেন, তা হচ্ছে হাদীস। সুতরাং কোরআন-হাদিসের যথার্থ চর্চা ও মাহাত্ম্য অনুধাবন করা গেলে জাতীয় জীবনে একটি সুন্দর, সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠা অধিকতর সম্ভব।
আল্লামা জুবাইর বলেছেন- একটি দুষ্টচক্র হাদীস অস্বীকার করে মুসলিম কমিউনিটিতে অবাঞ্ছিত ফেতনা-ফাসাদ জিইয়ে রেখেছে। হাদীসের শ্বাশত আদর্শ থেকে মুসলমানদের বিচ্যুত করতে বহুমাত্রিক ফন্দি-ফিকির অব্যাহত রেখেছে। একদিকে একটি মহল নিজেদের আহলুল কোরআন দাবি করে কোরআনকে যথেষ্ট মনে করে হাদিসকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, আবার কেউ নিজেদের আহলে হাদিস দাবি করে ইসলামে বিভাজন সৃষ্টির ঘৃন্য পাঁয়তারা অব্যাহত রেখেছে। এদের এ কনসেপ্টকে তিনি বাতুলতা বলে অভিহিত করেন। কেননা কুরআন-সুন্নাহর সমন্বিত রূপই হচ্ছে ইসলাম।
প্রধান অতিথি শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মুজাহিদুল ইসলাম বলেছেন- হাদিসকে ইসলামী সভ্যতার ‘মেরুদন্ড’ বলা হয়। ইসলামে ধর্মীয় আইন ও নৈতিক দিক নির্দেশনার উৎস হিসেবে কুরআনের পরেই রয়েছে হাদিসের কর্তৃত্ব। কুরআনের নির্দেশ, রাসূলুল্লাহ (দ.) এর অগণিত নির্দেশ ও সাহাবায়েকেরাের কর্ম-পদ্ধতি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে, ‘হাদীস’ ইসলামী জীবন-ব্যবস্থার দ্বিতীয় উৎস ও ভিত্তি।
বহুমূখী সেবামূলক সংস্থা আঞ্জুমানে খুদ্দামুল মুসলেমিন বাংলাদেশ (একেএমবি) এর উদ্যোগে ৭ অক্টোবর ‘২৩ বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ১১তম পবিত্র দরসুল হাদিস মাহফিলে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। একেএমবি চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী জসিম উদ্দীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান দরসকারী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কো-চেয়ারম্যান প্রতিথযশা আলেমেদ্বীন শায়খুল হাদিস অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর। বিষয় ভিত্তিক দরস পেশ করেন- শুকছড়ি দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন পীরে তরিক্বত আল্লামা নাছেরুল হক চিশতী, বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ- আল্লামা এস এম ফরিদ উদ্দিন, ছোবহানিয়া আলিয়া কামিল মাদরাসার শায়খুল হাদিস- আল্লামা নিজাম উদ্দিন রশিদী, চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল মাদরাসার শায়খুল হাদিস- আল্লামা এনামুল হক সিকদার, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব পীরে তরিকব আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা মুফতি আলাউদ্দীন জিহাদী, উরকিরচর মারাসার অধ্যক্ষ- আল্লামা হাসান রেজা আলকাদেরী, চাঁদপুর ফরিদগঞ্জ কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস আল্লামা মুফতি নিজাম উদ্দিন নোমানী, ফরহাদাবাদ মুহাম্মদিয়া মহিলা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা জানে আলম নিজামী। মাহফিল প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ আবু সালেহ এর স্বাগত বক্তব্য ও সচিব অধ্যাপক মাওলানা জয়নাল আবেদীন জিহাদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন – স ম হামেদ হোসাইন, অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী, এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর, অধ্যক্ষ মাওলানা জসিম উদ্দিন তৈয়বী, মাওলানা মোহাম্মদ মুসা, এস এম আব্দুল করিম তারেক, ছৈয়দ হাফেজ আহমদ, উপাধ্যক্ষ মাওলানা জাকের আহমদ সিদ্দিকী, স ম শহিদুল হক ফারুকী, কাজী মফিজুর রহমান, মাওলানা ওয়াহেদ মুরাদ, স ম শওকত আজিজ, এ এম মঈনউদ্দীন চৌধুরী হালিম, শাহাদত হোসেন রুবেল, মোজাম্মেল হোসাইন, অধ্যাপক শহিদল্লাহ সাদা, ডাঃ হাসমত আলী তাহেরী, লায়ন মোহাম্মদ এমরান, এস এম আবু সাদেক ছিটু, কাজী আলাউদ্দিন আজাদ, আহমদ রেজা, রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, মিজবাহুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান প্রমূখ। পরিশেষে দেশ-জাতির কল্যাণ সমৃদ্ধি কামনা করে আখেরী মুনাজাত ও তাবরুক বিতরণের মাধ্যমে মাহফিলের পরিসমাপ্তি ঘটে।