নাছির উদ্দিন. সীতাকুণ্ড
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মহামায়া বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে আর মাধুর্যে অপরূপ মিরসরাইয়ের মহামায়া সেচ প্রকল্পের আয়তন ১১ বর্গ কিঃ মিঃ। প্রকল্প এলাকার নৈসর্গিক পরিবেশ, সৌন্দর্য আর ছোট ছোট সবুজ পাহাড়ের মাধ্যখানে স্বচ্ছ পানির লেকে মহামায়া যেন মায়ার জালে কাছে টানছে পর্যটকদের। দুর-দৃষ্টিতে দেখলে মনে হয় যেন চারুশিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবি। মহামায়ার বৈচিত্রময় এ লীলাভূমিকে নিয়ে মিরসরাইবাসী বুনে আছে স্বপ্নের জাল। অগনিত পাহাড়ের বুক চিরে আসা ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ি ছড়ার মিলন মোহনায় ঝর্ণা প্রবাহ হতে সৃষ্ট জলধারা লেকটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানী মহামায়া লেকে টিলা ও পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে বয়ে চলা জলাধারার মনোরম দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে প্রতিনিয়ত। লেকের স্বচ্ছ পানি ও পাহাড়ের গা গেঁষে নেমে আসা ঝর্ণাধারা যেন প্রকৃতির এক মায়াবী কন্যা। চট্টগ্রাম সদর থেকে ৪৫ কি.মি উত্তরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশে উপজেলার ৮নং দুর্গাপুর ইউনিয়নস্থ ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে প্রায় ২ কি.মি পূর্বে দেশের ২য় বৃহত্তম কৃত্রিম লেকটি নিয়ে মিরসরাইবাসীর গর্বের যেন শেষ নেই। মধ্যাংশে পাহাড় চুড়ায় রয়েছে কটেজ, পিকনিক সেড, জেঠি, বিভিন্ন অংশে ৫টি দৃষ্টিনন্দন ছাতা, ক্যান্টিন, আনসার ক্যাম্প, সেন্ট্রি কোড, ঠান্ডা পানির ঝর্ণা, সবুজ পাহাড় আর রাবার ড্যামের অপূর্ব মায়ার সমষ্টি মহামায়া। লেককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ইকোপার্ক। সম্প্রতি লেকটি ঘুরে আসা বড় দারোগার হাট বিশ্বনাথ বস্ত্রালয় এর স্বত্বাধিকারী নিমাই দে বলেন, কাজের ব্যস্ততা ভূলে প্রকৃতির সাথে অবকাশ কাটানোর শান্ত ও কোলাহল মুক্ত একটি চমৎকার পিকনিক স্পট মহামায়া। লেকটি এত সুন্দর ভেতরে না গেলে কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। তিনি আরো বলেন নৌকায় ভ্রমণের সময় পর্যটকদের চোখে পড়বে মহামায়া লেক ও পাহাড়ের অপরূপ মেলবন্ধন। লেকের চর্তুদিকে বড়শী প্রতিযোগীদের অবস্থান চোখে পড়ার মতো। লেক-পাহাড়ে স্থানীয় কৃষকদের ফলজ, বনজ, ঔষধি আর নান্দনিক গাছের বনায়ন, সবজি ও মাছ চাষ এবং লেকে অতিথি পাখিদের আনাগোনার দৃশ্য পর্যটকদের মোহিত করবে। স্বল্প পরিসরের ভ্রমণে লেকটি ঘুরে এসেছেন চট্টগ্রাম জজ আদালতের ভ্রমণপিপাসু আইনজীবী অ্যাডভোকেট খায়রুল বশর পারভেজ, শিক্ষানবিশ মোঃ আলমগীর ও অ্যাডভোকেট ক্লার্ক লিংকন তালুকদার। ভ্রমণপ্রেমীরা জানান, পাহাড় আর সমুদ্র বরাবরই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। মহামায়া লেকে পাহাড় আর কৃত্রিম সমুদ্র দু‘টোই পূরণ করছে পর্যটকদের। কৃত্রিম সমুদ্র আর পাহাড়ে অপরূপ মহামায়া লেকটি ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য একটি চমৎকার পিকনিক স্পট। বিশেষ করে নৌকায় লেকের স্বচ্ছ পানিতে ঘুরতে গিয়ে লেক-পাহাড়ের অপরূপ মেলবন্ধন তাদের দারূণভাবে আকৃষ্ট করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বছর বর্ষামৌসুমে চাহিদা মতো বৃষ্টিপাত না হলেও চলতি শরৎ মৌসুমে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় লেকে পর্যাপ্ত পানি জমা হয়েছে। আগামী শুষ্কমৌসুমে লেকের জমানো পানি চাষীরা কৃষিকাজে ব্যবহার করতে পারবে।