মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন
সীতাকুণ্ডে বাড়ছে ন্যাড়া পাহাড়ে সবুজ বনায়ন। পাহাড়ে লাগানো সারি সারি গাছের চারায় সবুজ বিপ্লবের মনোরম দৃশ্য বেশ জমে উঠেছে। বৃক্ষরাজির বিশাল ক্যানভাস সাজিয়েছে সবুজের সমারোহ। গাছে গাছে ফুল-ফল ও কলির গন্ধে ছড়িয়ে পড়েছে মনোরম সবুজের ঢেউ।
বড় দারোগারহাট বাজারের ব্যবসায়ী নিমাই দে, সবুজ পাল ও সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার নাথ জানান, এক সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বদিকে তাকালে বড় বড় গাছে ঠাসা জঙ্গল চোখে পড়তো। তখন শিয়াল, বানর, হুনুমান, হরিণ, বন মোরগ, হাতি, চিতা ও মেছো বাঘসহ অসংখ্য প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিচরণ করতো। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও অবৈধ ভাবে পাহাড় কাটার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে পাহাড়ের সেই জৌলুস। ঐতিহ্যের সেই বিশাল বৃক্ষরাজি অল্প সময়ের ব্যবধানে উজাড় হয়ে পরিনত হচ্ছে ন্যাড়া ভূমিতে। এদিকে “গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান” শান্তিতে বাচঁতে হলে প্রয়োজন সবুজের ছায়া, এ শ্লোগান’কে সামনে রেখে উপজেলায় দৃশ্যমান হচ্ছে নীরব সবুজ বিল্পব। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বদিকে পাহাড়ি বনায়ন ও মহাসড়কের দুরত্ব স্বল্প পরিসরের হওয়ায় দৃষ্টিনন্দন সবুজের এ ঢেউ পর্যটক এবং দর্শনার্থীদের কাছে বিনোদনের বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এদিকে বাড়বকুণ্ড ন্যাড়া পাহাড়ে প্রায় ১৬৬ একর পাহাড়ি ঢালু ভূমিতে ফলজ, বনজ, ঔষধি ও বিরল প্রজাতির সারি সারি বৃক্ষরাজিতে ন্যাড়া পাহাড়ে দেখা দিয়েছে সবুজের ঢেউ। চট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবি অ্যাডভোকেট খাইরুল বশর পারভেজ জানান, ঐতিহ্যগত ভাবে সীতাকুণ্ডের মানষ বৃক্ষপ্রেমিক। বৃক্ষ ও ফুলের নামে রয়েছে উপজেলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন- বাশঁবাড়ীয়া, কলাবাড়ীয়া, জোড়া আমতল, তালতলী, নিমতলা ও ফুলতলা সহ আরো কয়েকটি স্থান। তিনি আরো জানান, আমাদের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সবুজের ছায়া প্রদানকারী বৃক্ষের রয়েছে অত্যাধিক গুরুত্ব। সীতাকুণ্ড বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ দিদারুল আলম জানান, সরকারের নানান উদ্যোগ ও পরিবেশবাদীদের শত প্রচেষ্টায়ও থামানো যাচ্ছে না পাহাড় দখল, কর্তন কিংবা বৃক্ষ নিধন। উপজেলার উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পসহ জীব-বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে সরকারী-বেসরকারী ভাবে বনায়নে রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। তিনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাপক পরিসরে ফলজ, বনজ, ঔষধি ও নান্দনিক বৃক্ষের চারা রোপনে সকল‘কে এগিয়ে আসার আহবান জানান।