চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে মিয়ানমারে ৩ হাজারের বেশি জান্তা সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সামরিক সরকারবিরোধী ছায়া সরকার বলে পরিচিত ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)।তাদের দাবি, বিপুল সংখ্যক এই প্রাণহানি ছাড়াও ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে আরও চার হাজার জান্তা সেনা আহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।
২০২১ সালের ফেব্রয়ারি মাসের শুরুতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর গণতন্ত্রের দাবিতে রক্তাক্ত সংগ্রামে লিপ্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির বিরোধী দলগুলো গড়ে তোলে একটি সমান্তরাল সরকার, যেটি ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা এনইউজি নামে পরিচিত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে আসছে এনইউজি। আর এই কারণে এটি মিয়ানমারের সামরিক সরকারবিরোধী ছায়া সরকার বলে পরিচিত।
দ্য ইরাবতী জানিয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে নিজেদের সশস্ত্র শাখা এবং বিদ্রোহী মিত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষের সময় মিয়ানমারের ৩ হাজার ১২ জন জান্তা সৈন্য নিহত এবং আরও ৪ হাজার ২১ জন সেনা আহত হয়েছেন বলে এনইউজি দাবি করেছে।
এনইউজি-এর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত জান্তা বাহিনী এবং এনইউজি-এর পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস ও সহযোগী সশস্ত্র সংস্থাগুলোর (ইএও) মধ্যে মোট ৯৩৫টি সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত দ্য ইরাবতীর এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব সংঘর্ষে পিডিএফ গ্রুপ এবং মিত্র ইএও বাহিনী ৩০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এনইউজি-এর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি উ মং মং সোয়ে। তিনি বলেছেন, দখলে নেওয়া এসব ঘাঁটির মধ্যে কায়াহ প্রদেশে ১০টি, সাগাইং অঞ্চলে ছয়টি এবং দেশের নিম্নাঞ্চলে ১৯টি ঘাঁটি রয়েছে।
এছাড়া সংঘর্ষের সময় প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো জান্তা সরকারের ১৫টি পুলিশ স্টেশন এবং জান্তার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১০টি ফাঁড়িও দখল করে নেয়। একইসঙ্গে জান্তাপন্থি পিউ সাউ হতি নামক একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর ১৪টি ঘাঁটিও দখল করে নেওয়ার দাবি করেছে এনইউজি।