ফরেস্টার শিবুর নেতৃত্বে চলছে গাছ পাচারের মহোৎসব!
রাত নামলেই তৎপর হয়ে ওঠে কাঠ খেকোরা। শুরু হয় অবাধে কাঠ পাচার। আর এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে চট্টগ্রাম উত্তরের বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক অংশ। এই অংশের করেরহাট-বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের কয়লা থেকে করেরহাট বিট দিয়ে রাতের আঁধারে টাকার বিনিময়ে পাচার হচ্ছে ফরেস্ট রিজার্ভের গাছ। একটি অসাধু বনখেকো সিন্ডিকেট বন উজাড় করে মূল্যবান কাঠ পাচারের লিপ্ত রয়েছে ।
অভিযোগ রয়েছে, স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবু দাস রায় ও বিভিন্ন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিন, দুপুর ও রাতে কাঠ পাচার করা হচ্ছে । বন উজার হচ্ছে , পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে তবু এসব দেখার যেন কেউই নেই ?
জানা যায়, ফরেস্ট রিজার্ভের বন থেকে দিনের বেলায় বনখেকোরা এই সব গাছ কেটে পাহাড়ের ভিতরে নিদিষ্ট জায়গায় লুকায়িত রাখে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে গাছ গুলো প্রকারভেদে ট্রাক, মিনি পিকআপ বোঝাই করা হয়। পরে তা বন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে গভীর রাতে সময় সুযোগ বুঝে পাচার করা হয়। এ সুযোগে বন উজাড করে সাবাড় করে দিচ্ছে বনখেকোরা।
স্থানীয়রা জানান, রাতের অন্ধকারে মীরসরাই উপজেলা ১নং করেরহাট ইউনিয়নের করেরহাট চেক পোস্ট উপর দিয়ে কাঠ, সামাজিক বনায়নের গাছ, বিভিন্ন ফলজ ও বনজ বাগান, রাবারসহ নানা মূল্যবান বনজ সামগ্রী পাচার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ ছাড়াও ছোট-মাঝারি বিভিন্ন প্রকারের গাছ কেটে রাতের আধাঁরে ইট ভাটাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে।
জানা গেছে, শিবু দাস রায় একাই বিট এবং বিট কাম চেক স্টেশনের দায়িত্ব থেকে বনবিটের বিভিন্ন মূল্যবান গাছ অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশে সরকারি বনের কাঠ কাটিয়ে প্রতি ঘনফুট হিসেবে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছেন। একটি গাছে যদি ১০ থেকে ২০ ঘণফুট কাঠ জমে তাহলে সে হিসেবে অবৈধ টাকা উপার্জন করা হয়।প্রতিদিন রাতের আঁধারে কাঠ চোরাই সিন্ডিকেট করেরহাট বিট কর্মকর্তা শিবু দাস রায়কে ম্যানেজ করে বিভিন্ন বনের কাঠ পাচার অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে সেগুন, গামারি, সামাজিক বনায়নের কাঠ, বন বিভাগের কাঠ ও রাবারসহ বিভিন্ন চোরাই পণ্য। বনবিভাগের লোকেরাই বনখেকোদের কাছ থেকে মোটা অর্থ নিয়ে কাঠ পাচারে সাহায্য করছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি বারৈয়ারহাট সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ টি কাঠ ভর্তি ট্রাক খাগড়াছড়ি থেকে ফেনী, কুমিল্লা এবং ঢাকায় আসে চলাচল পাশের অণুবলে পরিবাহিত এসব ট্রাকের কাঠের সহিত চলাচল পাশে বর্ণিত কাঠের জাত, মাপ, পরিমাপ, মালিকানা হাতুড়ির সঠিকতা পাওয়া যাবে না যদি সঠিকভাবে পরীক্ষা করা হয়। এমনকি বন বিভাগের যে হাতুড়ির চিহ্ন কাঠে থাকে তাও পরীক্ষাতে জাল ধরা পড়বে। এ কারণে প্রতি ট্রাকে শিবু দাস রায় প্রকারভেদে পরীক্ষার নামে ১৫ থেকে ২০ হাজার করে টাকা নিয়ে থাকেন।
খাগড়াছড়ি থেকে যেসব কাঠ ভর্তি ট্রাক আসে সব ট্রাক শিবু ফরেস্টারের করেরহাট চেক স্টেশনের ছাড়পত্র নিতে হয়। শিবু এক দিকে করেরহাট বিটের গাছ বিক্রি করছেন অপরদিকে খাগড়াছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা, পানছড়ি, ফটিকছড়ি ইত্যাদি স্থান হতে যে সমস্ত কাঠ ট্রাকে তার চেক স্টেশনের সামনে দিয়ে যায় তা নির্ধারিত অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। চলাচল পাস ছাড়া সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রতি রাতে ৭ থেকে ৮ টি কাঠের ট্রাক প্রতি ট্রাক ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা শিবু রায় ফরেস্টারকে দিয়ে করেরহাট চেক স্টেশন ক্রস করে। শিবু নির্ধারিত হারে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট উপার্জিত অর্থের ভাগ পৌঁছে দিয়ে থাকেন। এ কারণে তিনি কোন কিছু ভয় পান না বলে সবাইকে বলে বেড়ান।
করেরহাট রেঞ্জের অধীন আন্দারমানিক বিট এবং কয়লা ও হিয়াকো বিটের গাছ সমূহ ও শিবু ফরেস্টার এর কারণে নিরাপদ নয়।ইতিপূর্বে অবৈধ অর্থের গণ্ডগোেলের জেরে কাঠের মালিক, ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপার একত্র হয়ে শিবু ফরেস্টারকে মারধর করে শিবুর হাত ভেঙ্গে দেয় ।
এই বিষয়ে করেরহাট বিট কর্মকর্তা শিবু দাস রায় ফোনে জানান কাঠের মালিক, ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপার একত্র হয়ে আমাকে মারধর করে হাত ভেঙ্গে দেয়। আমি মামলা করেছি, আমি মামলার কপি আপনাকে দেবো। এই কারনে ওরা জেলও খেটেছে।
এরপর শিবু দাস রায় মামলার কপিও দেননি ফোনও রিসিভ করেননি ।ফলে সংবাদে উল্লেখিত বিষয়ে আর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।