1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
ত্যাগের ঈদে মনের পশুত্ব জবাই করাই কোরবানি - পূর্ব বাংলা
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন বায়েজিদ বোস্তামী ও মালেক শাহ (র.) ওরশ সম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফোরকানিয়া মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত  আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশন ২৬৫ জন রোগীর ছানি অপারেশন করালেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়বো না: হান্নান মাসউদ

ত্যাগের ঈদে মনের পশুত্ব জবাই করাই কোরবানি

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
  • ১৫৬ বার পড়া হয়েছে

সাইফুল ইসলাম আল-আযহারি

পরম প্রভুর জন্য প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে পারাই কোরবানির শিক্ষা। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত, তারই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা কোরবানি।

আমাদের জীবন সম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। কোরবানি দেয়ার মধ্যে মৌলিক যে কথাটি আমরা বলি তা হল- আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মৃত্যু সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহর জন্য।’ (সূরা আল আনআম-১৬২)। মূলত আমাদের জীবন ও সম্পদের মালিক আল্লাহ।

এ দুটি জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ইমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন।’ (সূরা তাওবা-১১০)। কাজেই জীবন সম্পদ আল্লাহর এবং তা আমাদের কাছে আমানত। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ও তার পছন্দনীয় পথে ব্যয় করাই ইমানের দাবি। কোরবানি মানুষকে ইমানের এ দাবি পূরণের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।

কোরবানির উদ্দেশ্য অবশ্যই সৎ হতে হবে এবং তাতে ত্যাগের বহিঃপ্রকাশ থাকতে হবে। কোরবানি প্রদর্শন ইচ্ছা ও অহংকারমুক্ত হতে হবে। অনেকেই বাহ্বা পাওয়ার জন্য ও আলোচিত ব্যক্তিত্ব হওয়ার লক্ষ্যে লক্ষাধিক টাকার গরু বা উট কিনে গলায় মালা পরিয়ে, মাথায় লাল ফিতা বেঁধে পথে পথে ঘোরান। এটা যেমন ঠিক নয়, তেমনি কোনো সচ্ছল ব্যক্তির জন্য জীর্ণশীর্ণ কম দামি পশু কোরবানিও অনুচিত। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর বাণীর দিকেই ফিরে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন- ‘ঐসব পশুর রক্ত, গোশত আল্লাহর কাছে কিছুই পৌঁছে না, বরং তোমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের তাকওয়া তাঁর কাছে পৌঁছে।’ (সূরা হজ-৩৭)। এ আয়াত থেকে সুস্পষ্ট, উদ্দেশ্যের সততা ও খোদাভীতি কোরবানি কবুলের শর্ত। পশুটি কত বড় ও কত দামের সেটা আল্লাহর কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। ভোগ নয়, ত্যাগেই আনন্দ- এটিও কোরবানির একটি শিক্ষা। কোরবারি গোশত গরিবদের জন্য বিতরণ করে তাদের মুখে হাসি ফোটানোও কোরবানির অন্যতম লক্ষ্য। রাসূল (সা.) কোরবানির তিন ভাগের এক ভাগ গোশত গরিবদের জন্য বিতরণ করাকে মুস্তাহাব করেছেন। ইচ্ছা হলে এর বেশি; এমনকি সবটাও দান করা বৈধ। কোরবানির গোশত খাওয়া ও সংরক্ষণ বৈধ, তবে তা করতে গিয়ে কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য ‘অন্যের জন্য ত্যাগ’ যেন লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে আমাদের সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শুধু পশু নয়, পশুত্ব কোরবানি করাও কোরবানির অন্যতম উদ্দেশ্য। পশুর রক্ত প্রবাহিত করার সঙ্গে আমাদের ভেতরের পশুত্বকেও কোরবানি করতে হবে।

কোরবানি সবার জন্য ওয়াজিব নয় কিন্তু জিলহজ মাসের ও কোরবানির কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে যা আদায় করতে সবার চেষ্টা করা উচিত। এর অন্যতম হল আরাফা দিবসে রোজা রাখা মুস্তাহাব। হজরত আবু কাতাদাহ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আরাফার (হজের দিনে) রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আরাফার দিনের (হজের দিনের) রোজা বিগত এক বছর এবং আগামী এক বছরের গোনাহের কাফ্ফারা হবে। (তিরমিযি)।

কোরবানি সংক্রান্ত একটা বিশেষ মাসআলা হল- ৯ জিলহজ ফজর থেকে শুরু করে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। জামাতে নামাজ হোক বা একাকী, সর্বাবস্থায় এটা বলতে হবে। পুরুষ হোক বা নারী সবাইকে বলতে হবে। তাকবিরে তারশিক হল- (আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ)। ঈদুল আজহার দিনে যেসব সুন্নাত রয়েছে, সেগুলোও আমরা খেয়াল করে আমল করি। ঈদুল আজহার দিনে বিশেষ ১৩টি সুন্নাত রয়েছে যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন। যেমন- ভোরে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা, মেসওয়াক করা, গোসল করা, যথাসাধ্য উত্তম পোশাক পরা, শরিয়ত সম্মতভাবে সাজসজ্জা করা, খোশবু লাগানো, ঈদগাহে যাওয়ার আগে কোনো কিছু না খাওয়া, আগে আগে ঈদগাহে যাওয়া, ঈদুল আজহার নামাজ সকাল সকাল পড়া, পারলে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়া উত্তম, হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া, যাওয়ার সময় এই তাকবির জোরে জোরে পড়তে পড়তে যাওয়া (আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ)। এক রাস্তায় যাওয়া, অন্য রাস্তা দিয়ে ফেরা।

পশু কোরবানির মাধ্যমে ইমানের সাক্ষ্য প্রদান এবং পশুত্ব কোরবানির মাধ্যমে পরিপূর্ণ মানুষ হওয়াই কোরবানির দাবি। কোরবানির মাধ্যমে ক্রোধ, হিংসা, বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, শত্রুতা ইত্যাদি পশুত্বকে দমন করে মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় ও ত্যাগের চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে পারলে আমাদের কোরবানি সার্থক হবে এবং সমাজে শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে পড়বে। আল্লাহর কাছে কোরবানি কবুলের জন্য প্রার্থনা করছি। লেখক : প্রাবন্ধিক, কাতার, অ্যাম্বাসির কর্মকর্তা

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla