নিজস্ব প্রতিনিধি
বিয়ের ১ বছর পার না হতেই পরপারে পাড়ি জমালেন আঁখি আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধূ ।দিনের পর দিন স্বামী ও দেবরের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মাহত্যা করেছে আঁখি। এমনটিই বলছে প্রতিবেশীরা। কিন্তু মৃত আঁখির মা রাবেয়া বেগম (৩৫) বলছে আখিকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে আঁখির স্বামী বাবলু (৩০) ও দেবর শিবলু (২৬)।
সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন বুধবার বিকেল ৪ ঘটিকার সময় আঁখি আক্তার ঘরের লোহার দরজা বন্ধ করে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না পেচিয়ে ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এলাকাবাসী ৯৯৯ সেবায় কল দিলে ডবলমুরিং থানা পুলিশ এসে লোহার দরজা কেটে ঝুলন্ত অবস্হায় ফাঁস কেটে লাশ উদ্ধার করে।
মামলার বাদী রাবেয়া বেগম বলেন, বিগত ১৯/০৮/২০২২ তারিখ বাবলুর সাথে আমার মেয়ে আঁখির বিয়ে হয়।বিয়ের পর বিভিন্ন অজুহাতে আমি মেয়ের জামাইকে ১ লাখ টাকা দেই। ঘরের ফার্নিচার দিয়েছি প্রায় ৮৭ হাজার টাকার তারপরও আমার আঁখিকে ওরা মারধর নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের কথা ভেবে যখন যা চাইতো তাই দিয়েছি। কিন্তু অশান্তি পিছু ছাড়েনি আঁখির।
জামাই বাবলু ও মেয়ে আঁখিকে প্রায় দেড় ভরি স্বর্ন দিয়েছি, সেই স্বর্ন বাবলুর ছোট ভাই শিবলু চুরি করে বিক্রি করেছে। শিবলু কিভাবে চুরি করেছে জানতে চাইলে রাবেয়া বেগম বলেন,শিবলু এলাকার কুখ্যাত চোর ও মাদক ব্যবসায়ী নেশাখোর। ওর একটা মেয়ে আছে, শিবলু ওর স্ত্রীকে মারধর নির্যাতন ও নেশা করার কারনে ওর স্ত্রী ওকে ছেড়ে অন্য জায়গায় থাকে। আর শিবলু ওর ৯ বছরের মেয়েকে নিয়ে বাবলুর বাসায় জোর করে থাকতো। আঁখি নেশাখোর শিবলুকে বাসায় রাখতে চাইতো না। সে জন্য আঁখিকে প্রায় মারধর করতো শিবলু। বাবলু কোন প্রতিবাদ না করে ভাইকে সাপোর্ট করতো।
মামলার ৩ং সাক্ষী মর্জিনা বেগম বলেন,আঁখি আমার মামাতো বোন ঘটনার দিন আঁখি দুপুর ২টার সময় আমার বাসায় আসে ৩ টার সময় শিবলুর মেয়ে আঁখিকে বাসায় ডেকে নিয়ে যায় কিছু সময় পর শুনি আমার বোন মারা গেছে। আমি দৌঁড়ে গিয়ে দেখি আঁখি ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস অবস্থায় ঝুলে আছে। আমার বোনকে ওরা দুই ভাই অনেক নির্যাতন করেছে। ওরা দুই ভাই আমার বোনকে মেরে ফেলছে আমি এর বিচার চাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, শিবলু প্রায়ই টাকার জন্য আঁখিকে মারধর করতো কিন্তু আঁখির স্বামী বাবলু কোন প্রতিবাদ করতো না। এলাকার সবাই জানে শিবলু মাদকাসক্ত, সে নেশা না করতে পারলে পাগল হয়ে যেতো। টাকার জন্য এমন কোন অপকর্ম নেই যে, সে না করতো।
ঘটনার দিন শিবলু টাকার জন্য বেলছা দিয়ে আঁখিকে মারধর করে বলে জানিয়েছে শিবলুর মেয়ে মুমনি।
মামলার বাদী রাবেয়া বেগম বলেন, আমার আদরের মেয়ে আখি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলো।
মামলার বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ৯৯৯ সেবায় কল পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করি। ভিকটিম আঁখির মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে, তাৎক্ষণিক ১নং আসামী বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়। ২নং আসামী শিবলুকে ও গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।